চিতাবাঘের উড়ান খরচ মেটাবে কে, ধন্দে সেনা
ম্মু-কাশ্মীরের লে থেকে ২০০০ সালে দার্জিলিং-এর পদ্মজা নায়ডু চিড়িয়াখানায় উড়িয়ে আনা হয়েছিল মিতা আর নীতাকে। দু’টি তুষার চিতাবাঘ। উড়িয়ে এনেছিল সেনাবাহিনীর বিমান। খরচ হয়েছিল ২৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনী বিমান ভাড়ার টাকা পায়নি। টাকা কে দেবে, তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর।
২০০০ সালের মে মাসে সেনাবাহিনীর বিমানে চেপে লে থেকে শ্রীনগর, দিল্লি ও কলকাতা ঘুরে শেষে বাগডোগরায় পৌঁছেছিল দু’জনে। সেখানেই এক জনের নামকরণ করা হয় নীতা, অন্য জনের মিতা। রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পৌঁছনোর তিন মাস পরেই মারা যায় মিতা। নীতা মারা গিয়েছে ২০১১ সালে।
কিন্তু বিমান ভাড়ার টাকা এখনও মেটানো হল না কেন? মহাকরণ সূত্রের খবর, গত ১২ বছর ধরে সেনাবাহিনী যে টাকার জন্য চিঠি দিয়ে আসছে, সেটা অতি সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের নজরে আসে। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে তারা খোঁজখবর নিতে শুরু করে। রাজ্যের বনসচিব সুবেশ দাস বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এই বকেয়া টাকার দায়ভার আমাদের নয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মেনকা গাঁধীর নির্দেশেই আনা হয়েছিল তুষার চিতাবাঘ দু’টিকে। তাই টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রেরই।”
তা ছাড়া, সেনাবাহিনী কেন এই বিপুল পরিমাণ টাকা চাইছে, তা-ও স্পষ্ট নয় রাজ্যের কাছে। বন দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, গত মাসে জার্মানি থেকে একটি তুষার চিতাবাঘকে তাঁরা উড়িয়ে এনেছেন। তার জন্য খরচ হয়েছে ২ লক্ষ টাকারও কম। ১২ বছর আগে লে থেকে চিতাবাঘ আনতে কেন এত টাকা লাগল, তা বন কর্তাদের মাথায় ঢুকছে না।
সেনাবাহিনীর কাছে অবশ্য পাল্টা যুক্তি রয়েছে। মিতা-নীতাকে উড়িয়ে আনার জন্য একটি বড় এএন ৩২ বিমান ভাড়া করা হয়েছিল। এএন ৩২ বিমানের ঘাঁটি চণ্ডীগড়ে। সেখান থেকে খালি বিমান পৌঁছয় লে-তে। শ্রীনগর-দিল্লি-কলকাতা ঘুরে বিমান তিন দিন পরে পৌঁছয় বাগডোগরা। মিতা-নীতাকে নামিয়ে দিয়ে খালি বিমান ফিরে যায় চণ্ডীগড়ে। এর জন্য ২৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকাই খরচ হয়েছে।
তবে যত টাকাই লেগে থাকুক, তা মেটানোর দায় যে রাজ্যের নয়, তা সেনাবাহিনীকে জানিয়েছে মহাকরণ। সেনাবাহিনীর এক কর্তা সে কথা স্বীকারও করেছেন। ওই কর্তা বলেন, “প্রতি বছর অডিটের সময় বকেয়া টাকার জন্য চাপ আসছে। আমরা মহাকরণে এবং সেন্ট্রাল জু অথরিটির কাছে চিঠি পাঠাচ্ছি প্রতি বছর। সম্প্রতি রাজ্য সরকার তাদের বক্তব্য জানিয়েছে।” রাজ্য সরকারের জবাব পাওয়ার পরে সেন্ট্রাল জু অথরিটির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল সেনা। তারাও জানিয়েছে, চিতাবাঘ আনার আর্থিক দায়ভার তারা নেবে না।
তা হলে ওই টাকা মেটাবে কে? বৃহস্পতিবার দিল্লিতে মেনকা গাঁধীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজকে অনুরোধ করেছিলাম। জর্জই চিতাবাঘ আনার সব ব্যবস্থা করেছিলেন। ফলে, রাজ্য সরকারের তো টাকা দেওয়ার কথা নয়।” কে টাকা দেবে? সেটা মেনকা বলতে পারেননি। জর্জ এখন এতটাই অসুস্থ যে, তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায় না।
মেনকার আবার দাবি, “তখন দার্জিলিং চিড়িখানায় কর্মীদের কর্মবিরতি চলছিল। তাই দুই চিতাবাঘকে বৃষ্টির মধ্যে বাইরে ফেলে রাখা হয়েছিল। তিন সপ্তাহের মধ্যে দু’জনেরই মৃত্যু হয়।” বন দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, নীতা ২০১১ সাল পর্যন্ত বেঁচেছিল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.