গঙ্গা তীরের বাঁশবেড়িয়ায় আজ থেকে হাজার আলোর রোশনাই।
কার্তিক পুজোয় মেতে উঠতে তৈরি হুগলি জেলার এই পুরনো শহর। দুর্গাপুজোর পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল তোড়জোড়। প্রস্তুতি শেষে আজ, সপ্তমী থেকেই পথে নামবেন অগণিত মানুষ। চোখধাঁধানো মণ্ডপ, চন্দননগরের আলো, নানা রূপের কার্তিক আর হরেক মেলায় শহর এখন জমজমাট। প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে এখানে। চার দিন ধরে চলে পুজো।
এখানকার কেন্দ্রীয় কমিটির আওতায় ১০৩টি পুজো হয়। এ ছাড়াও শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে আরও ৮০টি পুজো। কার্তিক ছাড়াও এই ক’দিন এখানে অন্য দেবদেবীর পুজোরও প্রচলন রয়েছে। যেমন, নটরাজ, সন্তোষী, রাধাকৃষ্ণ, শিব, গণেশ।
ধোবাঘাটের ‘অর্জুন কার্তিক’ কয়েকশো বছরের পুরনো। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরে থাকাকালীন এই ধোবাঘাটে স্নান করতে আসতেন। |
তখন থেকেই এখানে কার্তিক পুজো হয়ে আসছে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। বাঁশবেড়িয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পুজো ৩০০ বছরের পুরনো। এখানে কার্তিকের যোদ্ধা রূপ। মিলন পল্লি জুনিয়র ফ্রেন্ডস্ ক্লাবের পুজো এ বার ৫১ বছরে পা দিল। ইসকন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মণ্ডপে কার্তিক নয়, পুজো হবে নটরাজের।
ইয়ং স্টারের মণ্ডপ হয়েছে লন্ডনের অ্যালবার্ট হলের অনুকরণে। এখানে তারা মায়ের পুজো হয়। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের পুজো এ বার ৫৩ বছরে পড়ল। জয়পুরের শিশমহলের আদলে মণ্ডপ নির্মিত হয়েছে। বেলতলা রেনেসাঁ ক্লাবের পুজোর থিম ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’।
প্রতাপ সঙ্ঘের মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জঙ্গল, পাহাড় কেটে বাসস্থান তৈরির প্রতিবাদ ও পরিবেশ-অরণ্য বাঁচানোর আহ্বান। কিশোর সঙ্ঘ পুজো করছে কৃষ্ণার্জুনের। জুনিয়ার বালক সঙ্ঘ নারায়ণের পুজো করছে। আগন্তুক সঙ্ঘের থিম‘দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায়’। মানুষের ফেলে আসা দিনকে তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে। গ্রাম্য পরিবেশ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অভিযাত্রী সঙ্ঘের পুজোয়। পাশাপাশি রয়েছে মেলাও। শহরের বিভিন্ন মাঠে বসেছে বড়সড় মেলা। হরেক রকমের খাবারের স্টল। দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে গঙ্গায়। তার জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। |