|
|
|
|
অশান্ত ধুবুরি |
হানায় হত বেড়ে ৭, কার্ফু জারি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ধুবুরি |
ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোকরাঝাড় জেলা। দুষ্কৃতী হামলায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে গোসাইগাঁও থানা এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই এ দিন বেলা ৯ টা থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কার্ফু জারি করেছে কোকরাঝাড় জেলা প্রশাসন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সেনা জওয়ানদের ফ্ল্যাগ মার্চও শুরু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭ টা নাগাদ কোকরাঝাড়ে গোসাইগাঁও থানা এলাকার তেলিপাড়া গ্রামে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিরিশন বসুমাতারি(৫২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি গোসাইগাঁওয়ের সাহাজুরি গ্রামে। তিনি কোথাও যাওয়ার জন্য জাতীয় সড়কের ধারে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুষ্কৃতীরা পিছন থেকে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। অন্য দিকে বেলা ৯ টা নাগাদ কোকরাঝাড় শহরের সপ্তাহিক বাজারে দুষ্কৃতীদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম আবুল কামাল নামে এক ব্যক্তি। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে কোকরাঝাড়ের কচুগায়ে আশারউদ্দিন (৪৪) নামে এক শিক্ষককে গুলি করে হত্যা করেন দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় গুলি লেগে জখম হয়েছিলেন এক জন। দুষ্কৃতীদের গুলিতে বুধবার থেকে এ দিন পর্যন্ত এক গৃহবধূ-সহ ৩ জনের মৃত্যু হল। শনিবার থেকে এ দিন সকাল পর্যন্ত কোকরাঝাড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ জন। গুরুতর জখম হয়েছেন ৭ জন। প্রশাসনের একটি সূত্রই জানিয়েছে, গত ২২ জুলাই থেকে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের তিন লক্ষাধিক বাসিন্দা ঘরছাড়া হয়েছেন। তার মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ সংখ্যা লঘু বাসিন্দা ধুবুরির বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে লক্ষাধিক বাসিন্দা বাড়িতে ফিরলেও অনেকেই এখনও ধুবুরির বিভিন্ন শরনার্থী শিবিরে রয়েছেন। কোকরাঝাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁর নির্দেশে কোকরাঝাড়ে গিয়েছেন অসমের বিদ্যুৎ মন্ত্রী প্রদ্যুৎ বরদলৈ এবং দুই সচিব রানা গোস্বামী এবং ভূপেন বরা। জেলার বিভিন্ন স্পর্শ কাতর এলাকাঘুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা জরুরি বৈঠক করেন। প্রদ্যুৎবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় যথেষ্ট চিন্তিত। দুষ্কৃতীদের কঠোর হাতে দমন করার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।” পরিস্থিতির জন্য অসম সরকারকে দায়ী করেছেন সারা অসম সংখ্যা লঘু ছাত্র সংস্থা। তাদের কোকরাঝাড় জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, কোকরাঝাড়ের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে অসম সরকার। গত ৪ মাস ধরে হিংসার দাবানল জ্বলছে এলাকা জুড়ে। অথচ সংখ্যা লঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ সরকার। একই ভাবে সাধারণ বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসম সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ বলে দাবি সারা বড়ো ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জীবন বসুমাতারির। তিনি বলেন, “এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় অসম সরকারের। সরকারের নমনীয় নীতির জন্যই এই ঘটনা ঘটল। আমরা চাই দ্রুত এলাকায় শান্তি ফেরানো হোক।” কোকরাঝাড়ের জেলাশাসক জয়ন্ত নালেকর বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয় তার জন্য এ দিন থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি সেনাও ফ্ল্যাগ মার্চ করছে আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” কোকরাঝাড়ের পুলিশ সুপার সুনীল কুমার জানান, স্পর্শকাতর জায়গা গুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে। সেনা জওয়ানরাও তল্লাশিতে নেমেছেন। |
|
|
|
|
|