|
|
|
|
টুজি |
নিলামে প্রাপ্তিকেই অস্ত্র করছে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বাতিল হয়ে যাওয়া টুজি স্পেকট্রাম লাইসেন্সের নিলামে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের আয় হল সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা! অথচ তাদের অনুমান ছিল, এই নিলাম থেকে অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকা আসবে সরকারের ঘরে।
নিলাম শেষে প্রাপ্তির হিসেবে কেন্দ্র কিছুটা হতাশ হল ঠিকই, কিন্তু কনট্রোলার অ্যান্ড অডিটরস জেনারেল (সিএজি) ও বিরোধীদের জবাব দেওয়ার জন্য এটাই এখন বড় অস্ত্র হয়ে উঠল সরকার তথা কংগ্রেসের। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ-ও মনে করছেন, স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিযোগের দাগ মুছতেও এই নিলামের প্রাপ্তি বড় ভূমিকা নিতে পারে। তাই আগ্রাসী প্রচারে নামতে এতটুকু দেরি করেনি কংগ্রেস। সরকারও। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি বিদ্রুপের সুরেই বলেন, “সিএজি মশাই, কোথায় গেল আপনার ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা ক্ষতির তত্ত্ব? আর সেই তত্ত্বকে সামনে রেখে যে বিরোধীরা গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করেছেন, তাঁরা এ বার কী করবেন? তাঁদের তো ক্ষমা চাওয়া উচিত দেশের কাছে।”
প্রথম ইউপিএ-র জমানায়, ২০০৮-এ প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার আমলে ‘আগে এলে আগে পাওয়া যাবে’ এই নীতির ভিত্তিতে টু-জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স বণ্টন করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের সেই নীতি ভ্রান্ত বলে মন্তব্য করে সিএজি জানায়, বণ্টন প্রক্রিয়া নিলামের মাধ্যমে করা উচিত ছিল। তা না করায় কেন্দ্রের প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। সিএজি-র এই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এক দিকে বিজেপি, বাম-সহ বিরোধীরা দিনের পর দিন সংসদ অচল করে রাখে এবং দুর্নীতির প্রশ্নে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লাগাতার সমালোচনার সুযোগ পেয়ে যায়। তেমনই পরবর্তী কালে ২২টি সার্কেলে বিভিন্ন সংস্থার ১২২টি লাইসেন্স বাতিল করে নিলামের মাধ্যমে
পুনরায় স্পেকট্রাম বণ্টনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
সম্প্রতি হওয়া সেই নিলাম থেকে সরকার তার ধার্য করা লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও পৌঁছয়নি। বস্তুত এ বারের নিলামে সরকারের যা আয় হল, তার সঙ্গে ২০০৮ সালে এ বাবদ প্রাপ্তির বিশেষ ফারাক নেই।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় উৎসাহিত কংগ্রেস। কেন না, কংগ্রেস ও সরকার গোড়া থেকেই জানিয়েছে, ইউপিএ-র টেলিকম নীতি ভ্রান্ত ছিল না। ২০০৮ সালে টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টন করতে সরকার যদি নিলামের আশ্রয় নিত, তা হলে কিছু সংস্থা মোটা দর হেঁকে একচেটিয়া কারবার গড়ে তুলত। কিন্তু সরকারের নীতির কারণেই টেলিকম ক্ষেত্রে নতুন নতুন সংস্থা এসেছে। টু-জি-তে একাধিক নতুন সংস্থা আসার ফলে থ্রি-জি স্পেকট্রাম নিলাম করে বিপুল আয় হয়েছে।
কিন্তু সিএজি নিজের বক্তব্যেই অচল ছিল। আর বিরোধীরা স্পেকট্রাম নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে সরকারকে লাগাতার কোণঠাসা করে। সেই আক্রমণে সরকারের ভাবমূর্তি যে ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় নেই। রাজনীতিকদের মতে এই বার্তা যায় যে, ইউপিএ সরকারের আমলে
১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে! মণীশ আজ বলেন, “১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি যে চুরি হয়নি, তা প্রমাণিত।”
টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বল বলেন, “বাজারের নিজস্ব গতিশীলতা রয়েছে। তাতে হস্তক্ষেপ করলে সব সময় ভালো ফল হয় না।” |
|
|
|
|
|