শিল্পের ইঞ্জিন সচল রাখতে সুদ কমিয়ে বাড়ি-গাড়ি বা ভোগ্যপণ্যের ঋণে মাসিক কিস্তি কমানোর পক্ষে আগেই সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক- কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সমস্যায় পড়ে ঋণ শোধ করতে না-পারা শিল্পের পাশে থাকা এবং ব্যাঙ্কগুলিকেও নতুন মূলধন জোগানোর অঙ্গীকার করলেন তিনি।
গাড়ি-স্কুটার, রেফ্রিজারেটর-ওয়াশিং মেশিন, সব কিছুর বিক্রি বাড়াতে ই এম আই কমাতে হবে। অর্থমন্ত্রী পদে ফের এসে অগস্টে সরকারি ব্যাঙ্ককে এমনই নির্দেশ দেন চিদম্বরম। এসবিআই কর্তা প্রতীপ চৌধুরীর উদাহরণ রাখেন তিনি। এসবিআই গাড়িঋণে ইএমআই সামান্য কমাতেই বিক্রি অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল।
কিন্তু তিন মাস পরে পরিস্থিতির পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির সাধারণ ভাবে চিদম্বরমের দাওয়াইয়ে লাভ হয়নি। একমাত্র গাড়ি ও আবাসন ক্ষেত্রে সামান্য উন্নতি বাদ দিলে বিশেষ বদলায়নি পরিস্থিতি। এই অবস্থায় আজ অর্থমন্ত্রী বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভবিষ্যতে সুদ কমানোর সম্ভাবনার কথা বলেছে। আমি সে দিকেই তাকিয়ে।”
এখন যে-ক্ষেত্রগুলি সব থেকে বেশি সমস্যায়, তাদের পাশে থাকাই তাঁর লক্ষ্য। নয়া পুঁজি জুগিয়ে অর্থ মন্ত্রক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিরও পাশে দাঁড়াবে। তাঁর বক্তব্য, এ জন্য বাজেটেই ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
কিন্তু চিন্তার কারণ হল, শিল্পের নানা ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কঋণ শোধ হচ্ছে না। ফলে ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ বেড়েছে। এ জন্য মন্দা দশাকেই দায়ী করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “এটা মন্দারই প্রতিচ্ছবি। কিছু ক্ষেত্র বেশি সমস্যায়। তারাই ঋণ শোধ করতে পারছে না।” ক্ষেত্রগুলি হল, পরিকাঠামো, ইস্পাত, নির্মাণ, বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও টেলিকম। চিদম্বরমের মতে, এই অবস্থায় বকো ঋণ নিয়ে না-ভেবে চাপে থাকা সংস্থাগুলিকে সাহায্য করতে হবে।
তাঁর যুক্তি, ভারতের অর্থনীতির সঙ্কোচন নয়, বৃদ্ধিই হচ্ছে। তবে হারটা কমেছে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালে চাপে থাকা ক্ষেত্রগুলিও চাঙ্গা হবে। |