তারকা যখন ফার্স্ট লেডি। মাও জে দংয়ের পর এই প্রথম ‘গ্ল্যামারাস’ ফার্স্ট লেডি পেতে চলেছে চিন। ভাবি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিখ্যাত স্ত্রী, গায়িকা পেং লিউয়ান।
প্রায় ২০ বছর আগে যখন দু’জনের বিয়ে হয়েছিল, পেং তখনই রীতিমতো জনপ্রিয়। জিনপিং তখন সবে মাত্র শিয়ামেন শহরের ডেপুটি মেয়র। বেশ কয়েক মাস প্রেমের পর গাঁটছড়া বাঁধেন দু’জনে। এর পর অন্য কমিউনিস্ট নেতাদের মতোই ধীরে ধীরে পদোন্নতি হয় জিনপিংয়ের। ক্রমশ দলের উপরের দিকে উঠে আসতে থাকেন তিনি। বাড়তে থাকে ক্ষমতা। |
জিনপিংয়ের স্ত্রী পেং লিউয়ান |
এ নিয়ে অবশ্য নানা মত। অনেকেরই দাবি, জিনপিংয়ের তুলনায় পেং লিউয়ান অনেক বেশি জনপ্রিয়। বস্তুত পক্ষে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, জিনপিংয়ের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষে উঠে আসার পিছনে অন্যতম কারণ তাঁর স্ত্রী। যিনি কয়েক দশক ধরে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন অগণিত দর্শককে।
প্রায় তিন দশক পরে এমন এক জন ব্যক্তিত্বকে ফার্স্ট লেডির ভূমিকায় দেখতে পাবে চিন। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। মাও জে দং ছাড়া আর কোনও প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকেই সরাসরি রাজনীতিতে বা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি আসতে দেখা যায়নি। কোন ভূমিকা নেবেন পেং? পুরনো ভূমিকাও কি তিনি বজায় রাখবেন?
উঠে আসছে পুরনো ইতিহাসও। মাও এবং তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী জিয়াং কুইংয়ের বিয়ে এবং তার ভবিষ্যৎ। বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন জিয়াং। এমনকী এই জিয়াং কুইং নামটিও তাঁর ছদ্মনাম। মঞ্চে অভিনয় করার সময় তিনি পরিচিত ছিলেন ল্যান পিং নামে। বিয়ের পরে নাম বদলে হন জিয়াং কুইং। অনেকে তাঁকে ‘ম্যাডাম মাও’ বলেও ডাকতেন।
জিয়াং কুইং |
১৯৪০ সাল থেকে মাওয়ের ব্যক্তিগত সচিব পদে কাজ করতে শুরু করেন জিয়াং। জড়িয়ে পরেন আরও বেশ কিছু সরকারি কাজে। ফিল্ম-সহ সংস্কৃতি বিষয়ক দফতরগুলি ছিল তাঁরই অধীনে। কমিউনিস্ট পার্টির চার সদস্যকে নিয়ে তৈরি করেন ‘গ্যাং অফ ফোর’। কিন্তু মাওয়ের মৃত্যুর পর দলের সঙ্গে বিরোধ বাধে জিয়াংয়ের। তাঁর তখন অগাধ ক্ষমতা, কিন্তু মাওয়ের অনুপস্থিতিতে পুরুষশাসিত কমিউনিস্ট পার্টিতে জিয়াংয়ের মাথা থেকে উঠে যায় সমর্থনের হাত। ক্ষমতা না ছাড়তে চাওয়া জিয়াংকে বন্দি করা হয়। দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড। পরে শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মেলে জিয়াং এবং তার সহযোগীদের। দাবি, ১৯৯১ সালে আত্মঘাতী হয়েছিলেন তিনি। তবে বিতর্ক রয়েছেই।
পেং লিউয়ান শুধু গায়িকাই নন, ১৮ বছর বয়সে তাঁর কর্মজীবন শুরু ‘লিবারেশন আর্মি’র যোদ্ধা হিসেবে। তাই প্রেসিডেন্টের স্ত্রী কোন পথে চলবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নাকি বদলে গিয়েছে একুশ শতকের চিন? বলে দেবে ভবিষ্যতই। |