পরিবর্তন হলেও মিটল না অনেক আশাই। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ কংগ্রসের শেষে দেশ তথা পার্টির দায়িত্ব নিলেন নতুন প্রজন্মের নেতারা। কিন্তু, নবগঠিত পলিটব্যুরো স্থায়ী কমিটিতে রইলেন না কোনও মহিলা প্রতিনিধি। তিব্বত ও শিনজিয়াং প্রদেশে অশান্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কংগ্রেসে। কিন্তু, কমিটিতে ঠাঁই পেলেন না কোনও তিব্বতি বা উইগুর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
প্রত্যাশিত ভাবেই দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। মার্চ মাসে তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ওয়েন জিয়াবাওকে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রী হবেন নবগঠিত পলিটব্যুরো স্থায়ী কমিটির সদস্য লি কেকিয়াং। |
এখনও চিনা কমিউনিস্ট পার্টিতে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা খুবই কম। নতুন স্থায়ী কমিটিতে তাই কোনও মহিলা স্থান পাবেন কি না তা নিয়ে আগ্রহ ছিল নানা শিবিরের। ৬৭ বছরের লিউ ইয়ানদং এক সময়ে পার্টির তিব্বত সংক্রান্ত নীতি নির্ধারক সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি কমিটিতে যেতে পারেন বলে আশা করেছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞই। কিন্তু, সে আশা পূরণ হয়নি। তবে পলিটব্যুরোয় স্থান পেয়েছেন লিউ ও অন্য এক মহিলা প্রতিনিধি সান চুনলান।
তিব্বতে চিনা শাসনের বিরুদ্ধে আত্মাহুতির ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। জিনশিয়াং প্রদেশে উইগুর মুসলিম সম্প্রদায়ের জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়েও উদ্বিগ্ন বেজিং। তিব্বত ও জিনশিয়াং প্রদেশে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব এখনও যথেষ্ট। কিন্তু, কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এ বারও স্থায়ী কমিটিতে স্থান পেলেন না।
সম্প্রতি দুর্নীতির বেশ কিছু মামলায় পার্টি নেতাদের জড়িয়ে পড়া নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে কমিউনিস্ট নেতৃত্বকে। মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগও উঠেছে বার বার। বিষয়টি নিয়ে সচেতন জিনপিংও। গ্রেট হল অফ পিপল-এ দাঁড়িয়ে তাই তাঁর বক্তব্য,“আমরা গর্বিত হতেই পারি। কিন্তু, আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই।” ‘বংশগত কমিউনিস্ট’ হিসেবে পরিচিত জিনপিং। তাঁর বাবা বিখ্যাত বিপ্লবী। স্ত্রী চিনের বিখ্যাত গায়িকা পেং লিউয়ান। তবে প্রচারের আলো থেকে সরে গিয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে কাজ করতেই পছন্দ করেন জিনপিং। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থায় আরও খোলা হাওয়া আনার জন্য পার্টি নেতৃত্বের উপরে চাপ দিচ্ছে চিনা শিল্প জগৎ। দুর্নীতি ও বিচ্ছিন্নতার অভিযোগের পাশাপাশি সেই চাপও সামলাতে হবে জিনপিং-সহ নয়া প্রজন্মের নেতাদের।
প্রেসিডেন্ট পদ ও পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরেও দীর্ঘদিন চিনা রাজনীতিতে প্রভাব খাটিয়েছিলেন জিয়াং জেমিন। প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান পদটিও দু’বছর আঁকড়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু, সব পদ থেকে সরে গিয়ে হু জিনতাও জিনপিংয়ের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছেন বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। জিনপিং কতটা সফল হন সেটাই এখন দেখার। |