কারও ভাই নেই। কারও বা বোন। যাঁদের আছে তাঁদের আবার আর্থিক সামর্থ্য নেই ভাই ফোঁটার আয়োজন করার। কেউ বা আবার কালী পুজোয় ঢাক বাজাতে এসেছিলেন দুর্গাপুরে। ফোঁটা নিতে বাড়ি যাওয়ার সময় পাননি। তাঁদের জন্যই বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুরের ‘সি-জোন’ এলাকার একটি ক্লাব আয়োজন করে আসছে গণ ভাইফোঁটার। অন্য দিকে, প্রবীণ ও বয়স্কদের জন্য সিটি সেন্টারের নন-কোম্পানি রিক্রিয়েশন ক্লাবের মাঠে ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিল শহরের একটি হেলথ ক্লাব। তাঁদের জন্যই হয়তো বছরকার এই দিনটাতে মুখে হাসি ফুটল এই মানুষগুলোর।
প্রতি বছরই শহরের ‘সি-জোন’ এলাকার ক্লাবটি গণ ভাইফোঁটার আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার, ভাই ফোঁটার সকালে পাড়ার খুদেদের পাশাপাশি এলাকার কাশীরাম বস্তি, সিএমইআরআই বস্তি থেকে উৎসবে সামিল হতে এসেছিলেন প্রায় শ’দুয়েক লোকজন। ফোঁটা দিতে পেরে খুশি এলাকার সোনাই, কৃষ্ণারা। আর ফোঁটা পেয়ে মন ভাল হয়ে গিয়েছে বিকাশ, বিট্টদের। গোটা অনুষ্ঠান ধরে যাঁরা ঢাক বাজালেন, অনুষ্ঠান শেষে তাঁদের কপালেও ফোঁটা দিল খুদে বোনেরা। |
উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, অনেক পরিবারের সামর্থ্য নেই। অনেকের আবার ভাই বোন নেই। ভাইফোঁটায় এঁদের মন খারাপ কাটাতেই এই উদ্যোগ। তাছাড়া উৎসবের আমেজ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার আনন্দ তো আছেই।
এ দিনই সকাল ৭টা নাগাদ সিটি সেন্টারের ‘নন-কোম্পানি রিক্রিয়েশন ক্লাবে’-র মাঠে বসেছিল প্রবীণদের ভাইফোঁটার আসর। প্রত্যেকেই ওই হেলথ ক্লাবের সদস্য। এমন অনুষ্ঠানে সামিল হতে পেরে খুশি সত্তর বছরের অঞ্জলি রায় বা বছর আটষট্টির বিজয়লক্ষ্মী বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। তাঁদের কথায়, “সারা বছর একই রকম ভাবে কাটে। অনুষ্ঠানে এসে মন ভরে গেল।” দিদিদের হাতে ফোঁটা পেয়েছেন ‘বি-জোনে’-র রাজেন্দ্রপ্রসাদ রোডের প্রবীণ গুরুপ্রসাদ মাইতি। তিনি বলেন, “আমি খুব খুশি। এমনটা হবে ভাবতেই পারিনি।” আয়োজকদের তরফে প্রণয় রায় বলেন, “এমন উৎসবে জাতি বা আর্থিক বৈষম্য দূর হয়। সম্পর্ক নিবিড় হয়। তাই এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা।” |