নতুন ভবন হস্তান্তর না হওয়ায় উলুবেড়িয়া হাসপাতালে এখনও চালু হল না অসুস্থ নবজাতকদের পরিচর্যা কেন্দ্র (এসএনসিইউ)। গত সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখের মধ্যে ওই ভবন পূর্ত দফতরের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। কিন্তু এখনও কিছু কাজ বাকি থাকায় তা সম্ভব হয়নি। সে কথা মেনেও নিয়েছে পূর্ত দফতর।
এ দিকে, এসএনসিইউ-র জন্য এসে গিয়েছে সরঞ্জাম, নার্স। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণও হয়ে গিয়েছে। এসএনসিইউ অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে এসএনসিইউ-এর জন্য হাসপাতাল চত্বরে পৃথক ভবন তৈরির কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। এর জন্য স্বাস্থ্য দফতর বরাদ্দ করে প্রায় ১০ কোটি টাকা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বার বার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও পূর্ত দফতর ভবন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করেনি। ফলে, হস্তান্তরের কাজটিও আর হয়নি। |
এসএনসিইউ-তে ১২টি শয্যা থাকার কথা। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে যে সব সদ্যোজাত অসুস্থ হয়ে পড়বে তাদের এখানে রেখে চিকিৎসা করানো হবে। এইসব সদ্যোজাতেরা সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের আরও কিছুদিন যাতে পর্যবেক্ষণে রাখা যায় তার ব্যবস্থা হচ্ছে। ভবনটি হচ্ছে চার তলার। এর মধ্যে প্রথম দু’টি তলে থাকবে এসএনসিইউ। তৃতীয় ও চতুর্থ তলে গড়া হবে ‘মাদার-চাইল্ড হাব’। এই কাজটিও করবে পূর্ত দফতর। কিন্তু এখনও এসএনসিইউ-এর জন্য বরাদ্দ দু’টি তলের কাজ শেষ হয়নি। ভবনটি রঙ করা হয়নি। বিদ্যুৎ লাইনের কাজও শেষ হয়নি। বাতানুকূল যন্ত্র বসানো হয়নি। জল সরবরাহের ব্যবস্থাও হয়নি। এ সবই পূর্ত দফতরের করার কথা বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এসএনসিইউ-এর জন্য স্বাস্থ্যভবন বেশ কিছু মূল্যবান সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটি ‘ওয়ার্মার’। এগুলি সদ্যোজাতদের শরীর গরম রাখার জন্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাতানুকুল যন্ত্র না-বসার ফলে ওয়ার্মারগুলি বসানো যাচ্ছে না। হাসপাতালের সুপার তপন পালিত বলেন, “ভবন যতক্ষণ না আমাদের হস্তান্তর করা হচ্ছে, আমরা এটি চালু করতে পারছি না।” তিনি বিষয়টি জানিয়ে ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বলে সুপারের দাবি।
পূর্ত দফতরের (সিভিল) হাওড়া ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার অখিলেশ ঘোষ বলেন, “ভবন তৈরির কাজ খুব একটা বাকি নেই। শুধুমাত্র রঙ করার কাজটাই বাকি আছে। কিন্তু আগে ঘরের ভিতর বাতানুকূল যন্ত্র বসবে, তারপর তো রঙের কাজ হবে।” এ দিকে বাতানুকূল যন্ত্র লাগানোর দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের (ইলেকট্রিক্যাল) এক আধিকারিক বলেন, “বাতানুকূল যন্ত্র বসানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কেউ অংশগ্রহণ করেননি। আবার টেন্ডার ডাকা হয়েছে।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জানিয়েছে, ওই ভবনে জলের জন্য নলকূপ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবনের ভিতরে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ ব্যবস্থা করার কথা পূর্ত দফতরের। পূর্ত দফতরের আশ্বাস, সব কাজই চলছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে। |