হজ-ফেরত আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার বাড়িতে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী! সঙ্গে আর্জি, হজই যখন সেরে এলেন, তখন আর কমিউনিস্ট পার্টিতে কেন? বেরিয়ে আসুন। পিছিয়ে-পড়া মানুষের জন্য আন্দোলনে তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান।
দীপাবলির দুপুরে রেজ্জাক-সিদ্দিকুল্লার এই চমকপ্রদ সাক্ষাৎ ভিন্ন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে রাজনৈতিক শিবিরে। সিপিএমের নেতা হয়েও দলকে রাজি করিয়ে মক্কায় হজ সেরে এসেছেন রেজ্জাক। তা-ই নিয়ে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। আর সিদ্দিকুল্লা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের হাত ধরে বাম-বিরোধী শক্তি হিসাবেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। সেই সময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিদ্দিকুল্লার নেতৃত্বাধীন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দকে ‘ভয়ঙ্কর শক্তি’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। সেই সিদ্দিকু্ল্লার সঙ্গে সিপিএমের বিতর্কিত নেতা রেজ্জাকের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে আলোড়ন স্বাভাবিক!
সিদ্দিকুল্লা অবশ্য রেজ্জাকের বাড়িতে গিয়েছিলেন জমিয়তে নয়, তাঁর নবগঠিত ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউডিএফ) তরফে। তাঁর প্রস্তাব, সংখ্যালঘুদের জন্য আন্দোলনের স্বার্থে প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রীর জন্য ইউডিএফের দরজা খোলা। রেজ্জাক শুনে হেসেছেন। বলেছেন, রাজ্য রাজনীতির দ্রুত পট পরিবর্তন হচ্ছে। নজর রাখতে হবে। মুখোমুখি আলোচনায় উৎসাহিত সিদ্দিকুল্লা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ককে বলে এসেছেন, এর পর থেকে দু’জনে যোগাযোগ রেখে চলবেন। |
রেজ্জাক অবশ্য বলছেন, হজ করে আসার জন্য সিদ্দিকুল্লা তাঁকে অভিনন্দন জানাতে চেয়েছিলেন। সৌজন্যের খাতিরে তিনি আপত্তি করেননি। রেজ্জাকের কথায়, “উনিই আমাকে ফোন করেছিলাম। না বলিনি। সৌজন্য বলে একটা ব্যাপার আছে তো! পুরোটাই সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। ওঁর কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কি না, বলতে পারব না।” আর সিদ্দিকুল্লার দাবি, ‘নয়া জমানা’ নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে সংখ্যালঘুদের জন্য রেজ্জাক যে নানা কর্মকাণ্ড করে থাকেন, সেই প্রসঙ্গ তাঁদের আলোচনায় উঠেছিল। অসমে সংঘর্ষ-পীড়িত সংখ্যালঘু থেকে এ রাজ্যের প্রতিশ্রুতি-ক্লান্ত সংখ্যালঘু এই বিষয়েই মূলত কথা হয়েছে তাঁদের।
তবে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর হজ-যাত্রা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন ওঠাকে কোনও গুরুত্ব দিতে রাজি নন রেজ্জাক। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর মন্তব্য, “দলের গঠনতন্ত্রে এই ব্যাপারে কোনও বাধা নেই। তা ছাড়া, আমি দলের অনুমতি নিয়েই গিয়েছিলাম। কিছু পরজীবী নেতা এই নিয়ে হইচই বাধানোর চেষ্টা করেছেন!”
ক্যানিংয়ের চন্দনেশ্বরে গ্রামের বাড়িতে মঙ্গলবার দুপুরে রেজ্জাকের আপ্যায়ন কিন্তু ছিল পুরোদস্তুর ‘হাজি’র মতোই! কাবা থেকে নিয়ে আসা পবিত্র জল ‘জমজম’ আর শুকনো খেজুর সহযোগে অতিথির সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনা সেরেছেন তিনি। মক্কা-মদিনায় বিপুল ভিড়ে ঘুরে বেড়ানো, ধর্মীয় রীতি মেনে প্রচণ্ড গরমে খোলা তাঁবুতে এক রাত কাটানো শরীরের ধকল সয়েও এ সব আচার কী ভাবে পালন করেছেন, তা নিয়ে গল্প হয়েছে। রেজ্জাকের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে সিদ্দিকুল্লার ধারণা, “সংখ্যালঘুদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে আশা করি রেজ্জাক সাহেবের সহযোগিতা পাব।”
এক হজ জন্ম দিচ্ছে কত স্রোতের!
|
বাস ভাড়া নিয়ে দাবি ফ্রন্টের |
বাস ভাড়া পুনর্বিন্যাসের ফলে যাত্রীদের উপরে বাড়তি চাপ পড়েছে বলে অভিযোগ তুললেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। এই ভাড়া বাড়ানো নিয়ে বিমানবাবুর অভিযোগ, “ডিজেলের দাম ১১% বাড়লেও বাস ভাড়া ৫০% থেকে ৭৫% বেড়েছে।” তাঁর দাবি, অসঙ্গতি দূর করে প্রতি কিমিতে ভাড়া নিয়ে রাজ্যকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। |