|
|
|
|
আলোর উৎসবে সামিল শিল্পশহর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
কালীপুজোয় আলোর জোয়ার নেমেছে শিল্পশহর হলদিয়ায়। ছোট-বড় পুজোকমিটিগুলি আলোয় মুড়ে দিয়েছে শহরকে। সুতাহাটাতেই ধূমটা সবচেয়ে বেশি। মহকুমার অন্যত্রও পুজো হচ্ছে আড়ম্বরে।
দুর্গাচকে ‘যুব সম্প্রদায়ে’ ২১ বছরের পুজোয় এ বার বাজেট ছিল ৬ লক্ষ টাকা। কাচের চুড়ি দিয়ে প্রতিমা গড়েছেন মহিষাদলের ইছাপুরের শিল্পী কালিপদ জানা। কাঁথির হেঁড়িয়ার শিল্পী তুহিন ভুঁইয়ার ভাবনায় কাঠ ও কাঠের ছিলকে দিয়ে তৈরী হয়েছে মণ্ডপ। বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে মণ্ডপের চারিদিকেও সেই আবহ তৈরিরই চেষ্টা ছিল। এ ছাড়াও ৫০০টি পুস্তক সমৃদ্ধ শরৎচন্দ্র পাঠাগারের উদ্বোধন হয়। এলাকার দুঃস্থ-মেধাবী ১০ জন পড়ুয়াকে পড়াশুনার খরচ দেওয়া হবে বলে জানান পুজোর কর্মকর্তা কিঙ্কর মাইতি। এলাকার সিটিসেন্টারের ‘আমরা সবাই’, বাসুদেবপুরের ‘কার্গিল সঙ্ঘ’, তালপুকুর ‘নবীন ক্লাবে’র পুজোর আড়ম্বরও এ বার একটু বেশি।
আলোর উৎসবে মাতোয়ারা সুতাহাটাও। হলদিয়া মহকুমার অধিকাংশ পুজো এই এলাকাতে হয়। থানা সংলগ্ন ‘নিউ তরুণ সঙ্ঘের’ পুজো এ বার ৩৮ বছরে পড়ল। বাজেট ৪ লক্ষ টাকা। দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের আদলে পাট দিয়ে তৈরী মণ্ডপটি ৬০ ফুট উঁচু। বৌদ্ধ সংস্কৃতির ধাঁচে মৃন্ময়ী প্রতিমা। দুঃস্থ রোগীদের অর্থসাহায্য করা হচ্ছে বলে জানান ক্লাব সম্পাদক সূর্য সুকুল। এছাড়া প্রাথমিকের পাঁচশো পড়ুয়াকে স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে। |
|
‘ফ্রেন্ডশিপে’র মণ্ডপ। ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
আমলাটের ‘নিউ তরুণ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের’ এ বারের ভাবনা শিল্প শহরের পরিবেশ দূষণ রোধ। প্লাস্টিকের জলের গ্লাস দিয়ে ১৫ ফুট ব্যাসার্ধের কদম ফুলের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। পুজো প্রাঙ্গণের চারিদিকেও কদম ফুলের গাছ রয়েছে। প্রতিমা সাবেক। সুতাহাটা থেকে আমলাট যাওয়ার পথে ‘অভিযান’ ক্লাবের মণ্ডপ গুহার আদলে তৈরি। বাঁশ, থার্মোকল ও চট দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গুহাচিত্র। দুঃস্থদের বস্ত্রদান, পড়ুয়াদের বইখাতা বিতরণ, দরিদ্র মেয়ের বিয়েতে টাকা দেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানান। রাজ্য সড়কের ধারে ‘ফ্রেন্ডশিপ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির’ প্রায় ৫০ ফুট উঁচু মণ্ডপটি বেলুড় মঠের আদলে তৈরি। থাকছে রকমারি আলোকসজ্জা। সাবেক দক্ষিণাকালী। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ দেবাশিস সর্দার জানান, দু’শো জন দুঃস্থকে শীতবস্ত্র দান করা হবে। পুজো ঘিরে চলবে মিলন মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এলাকার ‘নিশান’ জোর দিয়েছে সমাজসেবায়। কাপড় ও থার্মোকল দিয়ে তৈরি হয়েছে মন্ডপ। নানা আকারের শামুকে রূপ পেয়েছে প্রতিমা। এলাকার দুঃস্থ ৩০০ জনকে শীতবস্ত্র বিতরণ ও নরনারায়ণ সেবা হবে বলে জানান পুজো কমিটির কর্মকর্তা আনন্দ অধিকারী। ‘সুতাহাটা ইউথ কালচারাল অর্গানাইজেশন’ (সাইকো) এ বার নিজেদের ‘আলোর পথের যাত্রী’ পত্রিকার বিজ্ঞাপন ও ক্লাব সদস্যদের চাঁদাতেই পুজো করছেন। থার্মোকল, কাঁচের টুকরো, আইসক্রিমের কাঠি, চামচ দিয়ে ৪০ ফুটের মণ্ডপটি গড়েছেন সদস্য বাগাম্বর দাস। নন্দকুমারের প্রতিমা শিল্পী যুগলকিশোর জানার ভাবনায় রূপ পেয়েছে নটরাজের আদলে গোল্ডেন প্রতিমা। ক্লাবের সম্পাদক সনৎ পাণ্ডে জানান, এলাকার মেধাবীদের বই ও দুঃস্থদের বস্ত্রদান করা হবে। ‘আকাশগঙ্গা’, ‘প্রয়াস’ ক্লাবের পুজোও জমজমাট। লড়াইয়ে রয়েছে মহিষাদলের ‘রেড স্টার’, ‘ক্লাসিক’ ক্লাবও। রেড স্টারের প্রতিমা সাবেক। ক্লাসিক ক্লাব দশ হাতের প্রতিমায় দর্শনার্থী টানছে। মাটির তিনতলা জমিদার বাড়ির আদলে চট ও মাদুরের মণ্ডপ নজর কেড়েছে।
|
|
|
|
|
|