|
|
|
|
সঙ্কটে বাম বিধায়ক, টিকিট পাওয়া দূর অস্ত্ |
উত্তম সাহা • শিলচর |
আগামী নির্বাচনে আর টিকিট পাচ্ছেন না ত্রিপুরার বিতর্কিত আরএসপি তথা বামফ্রন্ট বিধায়ক পার্থ দাস। ত্রিপুরা বামফ্রন্টের টিকিট বন্টনের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারছে না শরিক দলগুলি। তবে আরএসপি-র ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক সুদর্শন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এ বার বোধহয় পার্থকে ক্যানডিডেট করা হচ্ছে না।”
গোমতী জেলার শালগড়া তফশিল জাতি সংরক্ষিত আসনের বিধায়ক পার্থ দাসের এসসি সার্টিফিকেট নিয়ে গত চার বছর ধরে জটিলতা বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ৩১ জুলাই তফশিল জাতি কল্যাণ দফতরের কমিশনার শান্তনু দাসের নেতৃত্বে ‘স্টেট লেভেল এস সি স্ক্রুটিনি কমিটি’ পার্থবাবুর সির্টিফিকেটটিকে ‘জাল’ ঘোষণা করেন। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পার্থবাবু হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
বিষয়টি এখন আদালতের বিবেচনাধীন, এ কথা জানিয়ে সুদর্শনবাবু বলেন, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগে হাইকোর্ট যদি তাঁর পক্ষে রায় না দেয়, তা হলে সম্ভবত তাঁকে এ বার টিকিট দেওয়া হবে না। তাঁর কথায়, ‘পার্থর শংসাপত্র নিয়ে হাইকোর্টও খুব সহজে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না। কারণ, এক দিকে স্ক্রুটিনি কমিটি যখন বলছে সার্টিফিকেটটি জাল, তখনই রাজ্য ভিজিল্যান্স পার্থবাবুকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। পার্থবাবু এই ভিজিল্যান্স রিপোর্টকে সম্বল করেই গত অগস্টে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন।
বিতর্কের শুরু পার্থবাবুর দাদা, চন্দন দাসের সার্টিফিকেটটি জাল প্রমাণিত হওয়ার পরেই বিতর্কের শুরু। রিপোর্ট পেয়ে রাজ্য সরকার চন্দনবাবুকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। মোক্ষম অস্ত্র পেয়ে যায় বিরোধীরা। প্রশ্ন তোলে বড় ভাই তফশিল জাতিভুক্ত না-হলে ছোট ভাই কী করে তফশিল হবে? তখনই বিধায়কের সার্টিফিকেটটি পরীক্ষার জন্য ভিজিল্যান্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারা তাঁকে ছাড়পত্র দেয়। পরে স্টেট লেভেল সিডিউলড কাস্ট স্ক্রুটিনি কমিটি দীর্ঘ শুনানির পর ভিজিল্যান্সের রিপোর্ট খারিজ করে দেয়। তাঁরা জানায়, পার্থবাবুর পিতা পরেশ দাস (বর্তমানে প্রয়াত) ‘সাধারণ শ্রেণি’-ভুক্ত হিসেবেই ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন। আগরতলার পল্লীমঙ্গল স্কুলে পার্থ দাসের নিজের ভর্তির ফর্মেও এসটি-এসসি কেটে ‘সাধারণ’ লেখা রয়েছে।
এই রিপোর্টে বিব্রত হয় আরএসপি। অস্বস্তিতে পড়ে বামফ্রন্টও। বিরোধীরা তাঁর সদস্যপদ খারিজের জন্য বিধানসভায় দাবি তোলে। পার্থবাবু হাইকোর্টে গেলে কোনও ক্রমে মুখ রক্ষা হয় শাসকপক্ষের। সেই সূত্রেই সুদর্শনবাবুর যুক্তি, ‘‘রায়ের আগে পাথর্বাবুর সির্টিফিকেটটিকে জাল বলা যায় না। ফলে বিষয়টি ভোটে কোনও দলীয় রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলবে না।” তবে ফ্রন্টের বড় শরিক, সিপিএম যে পার্থ দাসের পক্ষে নেই তা সিপিএম মুখপাত্র গৌতম দাশের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘পার্থবাবুর সার্টিফিকেট আমরাই তো পরীক্ষা করতে দিয়েছি। সরকারের কমিটিই সেটি জাল বলে জানিয়েছে। পার্থবাবু হাইকোর্টে গিয়েছেন। সেখানেও সরকারের অ্যাডভোকেট-জেনারেল তাঁর দাবির বিপক্ষে যুক্তি পেশ করছেন।” তাঁর কথায়, পার্থ দাসের বিষয়টি এই নির্বাচনে ‘নন-ইস্যু’। ভোটে প্রভাব ফেলার কোনও আশঙ্কা নেই।”
২০০৮ সালে ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে আরএসপি দু’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দু’টিতেই জেতে। শালগড়ায় পার্থ দাস এবং রাধাকিশোরপুরে জয়গোবিন্দ দেবরায়। জয়গোবিন্দবাবু মানিক সরকার মন্ত্রিসভার সদস্য। সুদর্শনবাবু জানান, এ বারও তাঁরা ওই দুই আসনে লড়বেন বলে বামফ্রন্ট নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। |
|
|
|
|
|