বছরভর খড়ের কাঠামো যাঁর সম্বল, এক দীপাবলির রাতেই বহুমূল্য শাড়ি-গয়না ওঠে তাঁর গায়ে। তিনি কাটোয়ার খেপি-মা। আজ, বুধবার দেবীর বিসর্জনের শোভাযাত্রার আগে তাই কড়া পুলিশি নিরাপত্তা কাটোয়ার খ্যাপাকলীতলায়।
পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা জানান, খ্যাপাকালীতলার পুজো দেখতে কাটোয়া তো বটেই, পাশের জেলাগুলি থেকেও ভিড় উপচে পড়ে। প্রতি বছর বিসর্জনের পরে জল থেকে তুলে আনা হয় কাঠামো। সারা বছর পুজো চলে তাতেই। লক্ষ্মী পুজোর পরে খড়ের কাঠামোকে বেদি থেকে নামিয়ে নতুন মূর্তি তৈরি হয়। মঙ্গলবার থেকে দু’দিন সেই প্রতিমার গায়ে থাকছে বহুমূল্য অলঙ্কার। তবে নিরাপত্তার কথা মনে রেখে বিসর্জনের শোভাযাত্রার আগেই খুলে রাখা হবে দেবীর সকল অলঙ্কার। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল ঘোষের কথায়, “পুলিশ ঝুঁকি নিতে বারণ করেছে। তাই এই ব্যবস্থা।” |
উদ্যোক্তারা জানালেন, বছর কয়েক আগে দেবীর জন্য বানানো হয়েছিল একটি ভারি সোনার হার আর সোনার মুকুট। এ বছর কলকাতার একটি নামী গয়না প্রস্তুতকারকের কাছে দেবীর জন্য বানানো হয়েছে আরও সোনার গয়না। কলকাতা থেকে সেই গয়না নিয়ে আসার পরে তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল কাটোয়া থানা। মঙ্গলবার রাতে সেই গয়না দিয়ে সাজানো হয় দেবীকে।
তবে ১২ ফুট উচ্চতার এই প্রতিমার গয়নার বাহুল্যে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত কাটোয়া পুলিশ। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার জন্য এ দিন মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন পুলিশকর্তারা। অগ্নি নির্বাপকও লাগানো হয় মন্দিরে। মন্দির চত্বরে কাটোয়ার সিআই শচীন্দ্রনাথ পুড়িয়ার নেতৃত্বে বিশেষ পুলিশ ক্যাম্পের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শচীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “প্রতিমার গায়ে প্রায় ৪ কিলোগ্রাম সোনার গয়না রয়েছে। বিসর্জনে গয়না পরিয়ে শোভাযাত্রা বের হলে পুজো কর্তাদের নিরাপত্তার ‘গ্যারান্টি’ দিতে পারবে না পুলিশ।” ভিড় আটকাতে পুলিশের পাশাপাশি প্রচুর স্বেচ্ছাসেবীর সাহায্য নিয়েছেন বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।
সর্বজনীন হলেও এই পুজোয় চাঁদা তোলার রীতি নেই। পুজো শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয় প্রতি বছরের মতো। আজ রাতে গোয়ালপাড়া ঘাটে ভাগীরথীতে বিসর্জন দেওয়া হবে প্রতিমাকে। তার আগে শোভাযাত্রায় শহর ঘুরবেন দেবী। নিরঞ্জনের পর রীতি মেনে তুলে আনা হবে কাঠামোটি। বছরভর পুজো হবে তাঁর। |