কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরে রায়গঞ্জের সাংসদ দীপা দাশমুন্সি উত্তরবঙ্গে ফিরতেই সংবর্ধনায় ভেসে গেলেন। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ দিল্লি থেকে রায়গঞ্জ ফেরার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছলে দলের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে স্বাগত জানান। বাগডোগরা থেকে সড়ক পথে রায়গঞ্জে যাওয়ার সময়ে নানা জায়গায় তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ইসলামপুরে সাধারণ বাসিন্দারাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সাদরে অভ্যর্থনা জানান। রায়গঞ্জেও ছিল উৎসবের মেজাজ।
এ দিন দীপা দেবী জানান, রায়গঞ্জে এইমস করার ব্যাপারে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, “এইমসের মূল সমস্যা হচ্ছে জমি। রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করলে সমস্যা হবে না। আমি চেষ্টা করব যাতে রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণের কাজ মার্চের মধ্যে শুরু করেন। যদি তা না-করেন, তা হলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলব। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও কথা বলব। কী ভাবে জমি সংগ্রহ করে এইমস তৈরি করা যায় সে ব্যাপারে সাহায্য চাইব।” |
উত্তরবঙ্গকে মুখ্যমন্ত্রীর সুইজারল্যান্ড বানানোর ঘোষণা নিয়ে কটাক্ষ করেন দীপা। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের নিজস্ব একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে ডুয়ার্স রয়েছে। পাহাড় রয়েছে। আবার পিছিয়ে পড়া উত্তর দিনাজপুর রয়েছে। মালদহের মতো ঐতিহাসিক জায়গা রয়েছে। সুতরাং নিজস্ব বৈশিষ্ট্যেই থাকবে উত্তরবঙ্গে, সুইজারল্যান্ড কেন হবে।” পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) এখনও বরাদ্দ পায়নি কেন? সে ব্যপারে তিনি বলেন, “বিষয়টি রাজ্য সরকারের। কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও বরাদ্দ রাজ্যের মাধ্যমে সমস্ত জায়গায় পৌঁছবে। মুখ্যমন্ত্রীই এ নিয়ে বলতে পারবেন।” তিনি দাবি করেন, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে বরাদ্দ দিয়েছিলেন কাজ না হওয়ায় তা ফিরে গিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় পর পর প্রকল্পের শিলান্যাসের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলে দীপা বলেন, “বহু প্রকল্প প্ল্যানিং কমিশনের অনুমতি না নিয়েই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলির ভবিষ্যৎ কি হবে জানি না। তবে যে সব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে সেটা যাতে ঠিকঠাক হয় সেটা আমরা দেখব। রেলের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর সঙ্গে এই নিয়ে আমার কথা হয়েছে।” এ দিন প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে যান দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার সহ কংগ্রেস নেতা ও কাউন্সিলররা। তাঁরা ফুলের মালা পরিয়ে দীপা দেবীকে অভিনন্দন জানান। |
উত্তর দিনাজপুরের রেল পরিষেবা থমকে থাকার ব্যাপারেও অভিযোগ করেন দীপা দেবী। তিনি বলেছেন, “রেল মন্ত্রক এত দিন তৃণমূলের দখলে থাকায় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে এই জেলার রেল পরিষেবার উন্নয়ন করা হয়নি। রেল দফতরের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। জেলায় সামগ্রিক রেল পরিষেবার উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” দীপাদেবীর আরও অভিযোগ, গত মে মাসে কেন্দ্রীয় সরকার বাড়ি বাড়ি পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শেষ করতে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে রায়গঞ্জ পুরসভাকে ১৭ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু রাজ্য সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে সেই টাকা আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, “আমি রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি, কেন সেই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা অর্থনৈতিক ভাবে যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে। এই জেলার জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ করা ব্যাকওয়ার্ড রিলিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ডের কোটি কোটি টাকাও রাজ্য সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছে।” |