মালদহ মেডিক্যাল কলেজ
গাফিলতিতে ছাত্রীর মৃত্যু, বেড টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হল
চিকিৎসায় গাফিলতিতে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্তে নেমে ‘বেড টিকিট’-সহ নানা নথি বাজেয়াপ্ত করল হাসপাতালের তদন্ত কমিটি। শুক্রবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি ওই নথি সংগ্রহ করে।
পুরাতন মালদহের মির্জাপুরের বাসিন্দা নিরঞ্জন বর্মনের ১২ বছরের মেয়ে পূজা জ্বর নিয়ে বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসক বিমল সরকারের অধীনে তাকে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ মারা যায় পূজা। পরে, মৃত ছাত্রীর পরিজন ও এলাকাবাসী ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভাঙচুর করে নার্সদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই ছাত্রীর বাবা নিরঞ্জন বর্মনের অভিযোগ, “রাতে মেয়ের পেট ব্যথা শুরু হলে নার্সদের কাছে গিয়ে বারংবার অনুরোধ করি, একবার ডাক্তারবাবুকে ‘কল-বুক’ পাঠান। নার্সদের হাতে পায়ে ধরেছিলাম। তাঁরা কোনও কথাই শোনেননি। সারারাত যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে চোখের সামনে মেয়েটা মরে গেল। রাতে ডাক্তারবাবু একবার এলে আমার মেয়েটা মারা যেত না।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান নিরঞ্জনবাবু। ওই অভিযোগ পেয়ে মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিন, মেডিসিন, শিশু এবং প্যাথলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়া হয়।
চিকিৎসক বিমলবাবু বলেন, “মেয়েটি ভর্তি হওয়ার পর আমি দেখেছিলাম। রাতে আমাকে হাসপাতাল থেকে কিছু জানানো হয়নি।” কমিটি সূত্রের খবর, ওই ছাত্রী পেটব্যথা ও জ্বর নিয়ে ভর্তির হওয়ার পরে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু, মাঝরাতে অসহ্য ব্যথা উঠলেও ‘কল-বুক’ দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ডাকা হয়নি কেন সেই প্রশ্নে কর্তব্যরত নার্সদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি কমিটি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁদের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়ার কথা ভাবছে কমিটি। পাশাপাশি, বাড়ির লোকজন লিখিত অভিযোগ করার পরেও ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত কেন হয়নি তা নিয়েও খোঁজখবর করছে কমিটি।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, বাড়ির লোকজন ‘কল-বুক’ সংক্রান্ত অভিযোগ জানালেও ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হননি। অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্র বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠতেই ৪ জনের তদন্ত কমিটি গড়েছি। তদন্তও পুরোদমে চলছে। তবে বাড়ির লোকজন পুলিশে অভিযোগ জানাতে রাজি হননি। তাই ময়নাতদন্ত করানো হয়নি।” উচ্ছ্বলবাবু জানান, ‘ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ড’-এর নার্স ও চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন মালদহে ফিরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “কী কারণে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। গাফিলতি কার তা চিহ্নিত করা গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.