কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুকে তাঁর কটাক্ষ, সিবিআই মানে ‘কংগ্রেস ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন’! ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর সরকারই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ফের তদন্তের হুমকি দিল! হলদিয়া-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যর সমালোচনার জবাবে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি, তাঁর পুরনো দফতরের ফাইল খোলা হলে প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যবাবু মুশকিলে পড়বেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রশাসন বা তদন্ত সংস্থাকে ব্যবহার করার অভিযোগ যার ফলে ঘুরে যাচ্ছে মমতা-সরকারের দিকেও!
মহাকরণে শুক্রবার পার্থবাবুর মন্তব্য, “হেরে গিয়েও উচিত শিক্ষা হয়নি ওঁদের। কবে সুমতি আসবে! মুখ্যমন্ত্রী এখনও ধৈর্য দেখাচ্ছেন। পাহাড়-প্রমাণ অভিযোগ রয়েছে। ওঁর (সূর্যবাবু) দফতরের যদি ফাইল খোলা হয়, তা হলে অন্ধকারে থাকতে হবে!” বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ করে শিল্পমন্ত্রীর আরও কটাক্ষ, উনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। চিকিৎসার করার বাইরে চলে গিয়েছেন। পার্থবাবু বলেছেন, “সব ক্ষেত্রে নিজেদের দলটাকে, রাজ্যটাকে ডকে তুলে দিয়ে এখন নানা কথা বলছেন! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে শিরোনামে থাকার চেষ্টা করছেন! ৩৫ বছরে পশ্চিমবঙ্গ অনেক পিছিয়ে গিয়েছে। এ বার এগোতে দিন!” রাজ্যে এক কোটি বেকার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। দু’লক্ষ কোটি টাকার উপরে মাথায় দেনা চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছেন সূর্যবাবুরা। সে কথাও ফের বলেছেন শিল্পমন্ত্রী।
রাজ্যর এই সাম্প্রতিক উষ্মার কারণ, হলদিয়া-কাণ্ড নিয়ে বিরোধী দলনেতার সমালোচনা। এ দিন সূর্যবাবু বহরমপুরে বলেন, হলদিয়াকে যে ডকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, সে কথা তাঁরা আগেই বলেছিলেন। এখন তা-ই সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। যে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআইকে কাজে লাগানোর অভিযোগে সরব, তারাই কী ভাবে বিরোধী দলনেতা বা রাজ্য থেকে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চোধুরী, দীপা দাশমুন্সিদের বিরুদ্ধে কথায় কথায় ফাইল খোলার হুঁশিয়ারি দেয়, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই! কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছেন, নিজেরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার মনোভাব দেখিয়ে তৃণমূল অন্যের দিকে আঙুল তোলে কী ভাবে?
পার্থবাবুর নতুন হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় সূর্যবাবু বলেন, “অস্ত্র খুঁড়ে, কঙ্কাল খুঁড়ে এ বার ওঁরা ফাইল খুঁড়তে নেমেছেন! ফাইল হারিয়েও ফেলছেন! আমরা বলেইছি, জেলে যেতে তো ভয় পাই না!” বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, বিরোধী নেত্রী থাকার সময় মমতা যে কোনও ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইতেন। এখন হাতে পেয়েছেন সিআইডি। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের নানা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। তাঁর মুখে সিবিআই নিয়ে বিষোদ্গার বিস্ময়কর! |