ডিসেম্বরের সাত। বেঙ্গালুরু। ওদিনই ভারত সফরে এসে তাদের প্রথম শো করতে চলেছে আমেরিকান হার্ড রক ব্যান্ড ‘গানস এন রোজেস’। তার পর ওঁরা যাবেন মুম্বই, গুরগাঁও। পরের বছর মার্চে মুম্বইতে শো করতে আসছেন নোরা জোনস। এক বছরের মধ্যেই ভারত ঘুরে গেলেন সান্টানা, এনরিকে, ব্রায়ান অ্যাডমস, ‘মেগাডেথ’ আর ‘মেটালিকা’। শুধু ‘ফরেনার্স’ আর ‘পোয়েটস অফ দ্য ফল’ ছাড়া, কোনও আন্তর্জাতিক সঙ্গীতশিল্পীই সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতায় পা রাখেননি। কিন্তু কেন? কী করলে এ শহরেও হতে পারে এমন শো?
গ্লোবাল ভাবনা চাই
অক্টোবরে এনএইচ সেভেন উইকএন্ডারে মেগাডেথ-এর শো ছিল নয়ডাতে। এই ইভেন্টের জন্য সরকারের আয় হয়েছে প্রচুর রাজস্ব। পশ্চিমবাংলাতেও এটা হওয়া সম্ভব। চিত্রপরিচালক কিউ, যাঁর ব্যান্ড নয়ডার ফেস্টিভ্যালে ছিল, বলেন, ‘‘কলকাতার উদ্যোগপতিদের ব্যাপারটা গ্লোবালি দেখতে হবে। রেডিও আর নানারকম চ্যানেলে ভাল মিউজিকের প্রচার করতে হবে।”
বাধার গেরো
কলকাতা দাবি করে, এ শহর ভাল মিউজিকের কদর বোঝে। কিন্তু অনেকেই অভিযোগ করেন, এখানে বেশি খরচ করে লোকে গান শুনতে চায় না। বিজয় নায়ার, সিইও, ওনলি মাচ লাউডার (যারা এন এইচ সেভেনের মতো ফেস্টিভ্যাল পরিচালনা করেন), বলেন, ‘‘কলকাতার জন্য কিছু করার আগে আমায় অন্তত এটুকু প্রতিশ্রুতি পেতে হবে, যে হঠাৎ কোনও কিছু বাধা হয়ে আসবে না। আমাদের বেনিফিট দিতে হবে না। কিন্তু বাধা চাই না। বেঙ্গালুরুতে ‘সিঙ্গল উইনডো লাইসেন্সিং সিস্টেম’ আছে। কলকাতাতেও সেটা চাই।” |
লাইট, সাউন্ড, মিউজিক
এই মাপের ইভেন্ট নামাতে গেলে বড় মাপের মিউজিক ভেন্ডার দরকার। যাঁরা লাইট, সাউন্ডের জন্য কোটি টাকা ঢালতে পিছু হটবে না। “মুম্বই-এ এটা সম্ভব। ওখানকার ভেন্ডাররা ওঁদের লগ্নির টাকা উশুল করতে অনেকগুলো অন্যান্য প্রোগ্রাম হাতে পায়। আর কলকাতায় দুটো প্রোগ্রামের জন্য কোটি টাকা ঢালতে চায় না কোনও ভেন্ডারই। এই মানসিকতাটা পাল্টানো দরকার,” বলেন নায়ার।
আইপিএল কি মানসিকতা পাল্টে দেবে?
হয়তো এটা সম্ভব। এমনটিই ভাবছেন টি ভেঙ্কট বর্ধন। ডিএনএ নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর। উনি বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু কিন্তু একদিনে এমনটা হয়নি। কলকাতায় এমন শো হতেই পারে। এ বছরই আইপিএল-এর ওপেনিং সেরিমনিতে কেটি পেরির শো করালাম চেন্নাই-এ। আগামী বছর কলকাতায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বড়সড় আন্তর্জাতিক ইভেন্টের কথা আমি অবশ্যই ভাবছি। কিন্তু তার
জন্য তো বাজারটা তৈরি করা চাই। ঠিক সময়ে পারমিশন প্রয়োজন। এর পর শো-এর টিকিট সেল আর প্রোগ্রামের কোয়ালিটি যদি ভাল হয়, অবস্থাটা বদলে যাবেই। আমি খুবই আশাবাদী।”
আমরাও। |