মামলা কেঁচে দিয়ে আবার চালুর আর্জি, এবিজি প্রশ্নে দিশাহীন বন্দর
ডামাডোলে দিশেহারা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিভ্রান্ত তাঁদের আইনজীবীরাও। শুক্রবার তাঁদের এক জনের বক্তব্য শুনে এবিজি-র বিরুদ্ধে মামলাই খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। সংবাদমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে খবর। শিল্প মহলে বার্তা যায়, এবিজি-র বিরুদ্ধে বন্দর কোনও ব্যবস্থা নিতে চায় না। অর্থাৎ বন্দর থেকে এবিজি-র চলে যাওয়ার পথ এর ফলে পরিষ্কার হয়ে গেল। ঘটনার তাৎপর্য বুঝে বিকেলের মধ্যেই বন্দর কতৃর্পক্ষ ফের ফিরতি আবেদন জানান যে, মামলা তাঁরা প্রত্যাহার করতে চান না। গত ২৬ অক্টোবর তাঁরা যে আবেদন করেছিলেন সেই মামলাই চালিয়ে যেতে চান। তাই এ দিনের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হোক।
বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই আবেদনে বলেছিলেন, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নির্দেশ মোতাবেক এবিজি কাজ করছে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে চুক্তি অনুযায়ী কলকাতা বন্দরকে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিক কলকাতা হাইকোর্ট। দিনের শুরুতে ভিন্ন বার্তা গেলেও শেষ পর্যন্ত মামলা চালু রাখার আর্জি জানিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে দেন তাঁদের অবস্থান। অর্থাৎ বন্দর চায়, হয় এবিজি হলদিয়া বন্দরে কাজ করুক কিংবা বন্দরের সঙ্গে তাদের যে চুক্তি হয়েছিল সেই মোতাবেক বন্দরকে ব্যবস্থা নিতে দেওয়া হোক।
হলদিয়া বন্দরের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে এবিজি গোষ্ঠী সরাসরি কলকাতা বন্দরের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে। পরিস্থিতি ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় বন্দরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে বন্দর-কর্তৃপক্ষের দিশাহীন অবস্থা ও তাঁদের আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এ দিন স্পষ্ট হয়ে যায় বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাসে। এবিজি-র আইনজীবী সমরাদিত্য পাল বুধবারই আদালতকে জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল আর হলদিয়া বন্দরে কাজ করতে চায় না। তা তাঁরা কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ দিন প্রথম পর্বে মামলাটি উঠলে বন্দরের আইনজীবী বিশ্বরূপ গুপ্ত ২৬ অক্টোবরের আবেদনের সূত্র ধরে বলেন, “এবিজি এখনও কাজ শুরু করেনি।” বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, “এবিজি তো বলেছেই কাজ করবে না! তা হলে বন্দরের আবেদনের সারবত্তা কী থাকল? বন্দর তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নিক।” বিশ্বরূপবাবু তখন হাইকোর্টকে জানিয়ে দেন তাঁরা মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে চান। বিচারপতি মামলাটি খারিজ করে দেন। এর তাৎপর্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে শুরু হয়ে যায় জোরদার চর্চা। বন্দর কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন এ বার, যোগাযোগ করেন তাঁদের আইনজীবীদের সঙ্গে।
গত বুধবার বন্দরের তরফে এই মামলায় সওয়াল করেছিলেন অরুণাভ ঘোষ। এ দিন প্রথম পর্বে বিশ্বরূপবাবুর সঙ্গে তিনিও হাজির ছিলেন এজলাসে। পরে অরুণাভবাবু বলেন, “বন্দরের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তাঁরা মামলা প্রত্যাহার নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত বিশ্বরূপবাবুকে জানাননি। মামলা প্রত্যাহার করার কোনও নির্দেশিকাও আসেনি। আইনজীবী বিশ্বরূপ গুপ্ত মামলা প্রত্যাহারের সম্পর্কে যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য।”
অরুণাভবাবু এ-ও জানান, তিনি বন্দরের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। বন্দর কর্র্তৃৃপক্ষের নির্দেশ আসার পরে তাঁরা যে ফের আবেদন করে পুরনো মামলা জিইয়ে রাখার আর্জি জানাতে পারেন, এমন ইঙ্গিতও দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটে। বন্দরের পক্ষ থেকে নতুন করে আবেদন করা হয়, ২৬ অক্টোবরের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট এ দিন যে নির্দেশ দিয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করা হোক। বন্দরের আইনজীবী প্রথম পর্বে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় রাজ্য সরকারের আইনজীবী আনসার মণ্ডল এ দিন বলেন, “এটা বন্দরের সঙ্গে এবিজির সংঘাত। এখানে রাজ্য সরকারের কোনও ভুমিকা নেই। হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার পুলিশের ব্যবস্থা করেছে। হলদিয়ায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কোনও সমস্যা নেই।” কিন্তু বিশ্বরূপবাবু কেন, এ ভাবে সওয়াল করলেন তা নিয়ে বন্দর-কর্তারা ধন্দে। বন্দরের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, আইনজীবীকে আবেদন প্রত্যাহারের নির্দেশই দেননি তাঁরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.