দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
রাস্তা সারাই
হাল ফেরার আশায়
দীর্ঘ দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে মেরামতি হচ্ছিল না রাস্তার। রাতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যেত না। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে বারুইপুরের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়রানির শেষ থাকত না। অসুস্থ ব্যক্তিকে কুলপি রোড পর্যন্ত এক রকম কাঁধে করেই নিয়ে যেতে হত।
ধামুয়া রেল স্টেশনের সঙ্গে বারুইপুর-কুলপি রোডের যোগাযোগ রক্ষাকারী দশ ফুটের ওই রাস্তার হাল ফেরার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। তবে সম্প্রতি সেই রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পূর্ত ও সড়ক বিভাগের হাইওয়ে ডিভিশন। সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজের জন্য ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ড (বিআরজিএফ) থেকে ৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বেণীবেড়িয়া, মুলটি, বনসুন্দরিয়া, কেশবপুর, নূর, বলবলিয়া এই ছ’টি এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা ওই রাস্তার উপরেই নির্ভরশীল। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ওই রাস্তা দিয়ে দু’টি গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে না। সারা বছরই খানাখন্দে ভরা থাকে। ফলে যাতায়াতে খুবই অসুবিধে হয়। হাইওয়ে ডিভিশন সূত্রে খবর, যাতায়াতের সুবিধার জন্য দশ ফুট চওড়া ওই রাস্তাটিকে আঠারো ফুট করা হবে। সূর্যপুরের বলবলিয়া মোড় থেকে ধামুয়া স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত এই সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তায় পিচের কাজও হবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘এত দিন এই রাস্তা দিয়ে কোনও মতে একটি গাড়ি যেতে পারত। কাজ শেষ হলে রাস্তাটি দিয়ে দু’টি গাড়ি সহজেই পাশাপাশি যেতে পারবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা বুলবুল হকের কথায়: “রাস্তার হাল ফেরাতে বার বার আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছিল না।
ফলে আমরা আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। অবশেষে কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি।”
তবে বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, আরও দ্রুত গতিতে কাজ হওয়া দরকার।
কিন্তু এত টাকা খরচ করে যে রাস্তা পাকা এবং চওড়া করা হচ্ছে, তার স্থায়িত্ব নিয়ে পূর্ত দফতরের একাধিক বাস্তুকারের সংশয় রয়েছে। তাঁরা জানান, পিচের রাস্তা যত ভাল করেই করা হোক না কেন, তার অন্যতম শত্রু হচ্ছে জমা জল। তাই এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ঠিকঠাক না থাকলে রাস্তার ভবিষ্যৎ অবস্থা নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পূর্ত ও সড়ক বিভাগের হাইওয়ে ডিভিশনের কার্যনির্বাহী বাস্তুকার বিনয় মজুমদার বলেন, “এত দিন পর্যন্ত সূর্যপুরের বলবলিয়া মোড় থেকে ধামুয়া স্টেশন পর্যন্ত রাস্তাটি গ্রামীণ সড়কের মর্যাদা পেত। সম্প্রসারণ এবং সংস্কারের কাজ শেষ হলে রাস্তাটি ‘ইন্টারমিডিয়েট লেন’ বলে গণ্য হবে। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটা বড় পরিবর্তনও হবে।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.