মোহনবাগান তাঁবুতে করিম বেঞ্চারিফা ঢুকছেনই ট্রফি নিয়ে! গঙ্গাপারের তাঁবুতে ১৮ নভেম্বর কোচ হিসাবে যে দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নেবেন মরোক্কান কোচ, সে দিন বিকেলেই দীর্ঘ ৩০ মাসের ট্রফি খরা কাটতে চলেছে মোহনবাগানে।
কী ভাবে? শুক্রবারই অল এয়ারলাইন্স ক্লাবের সচিব সমরেশ বসু রায় জানিয়ে দিলেন, মহমেডান স্পোর্টিং এ বারের অল এয়ারলাইন্স গোল্ড কাপের ফাইনালে খেলতে রাজি না হওয়ায় মোহনবাগানকেই বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৮ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটের সময় ট্রফি দেওয়া হবে ওডাফার দলের হাতে।
বারবার ফাইনালের দিন পিছোনোর কারণে গত সপ্তাহেই এয়ারলাইন্স কাপ থেকে দল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মহমেডান। ক্লাব প্রেসিডেন্ট সুলতান আমেদকে বারবার খেলার জন্য আবেদন করলেও মন গলাতে পারেননি সংগঠকরা। সমরেশবাবুর কথায়, “মহমেডান ফাইনালে খেললে ভালোই লাগত। আমাদের গভর্নিং বডির মিটিংয়ে ৪১ জন সদস্যই সর্বসম্মত ভাবে মোহনবাগানকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। দু’দিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত আইএফএ-কে জানিয়ে দেওয়া হবে।”
তবে আই লিগের খেতাবি দৌড়ে মাথা উঁচু করে রাখতে যুদ্ধং দেহি মনোভাব আমদানি করতেই হবে ওডাফাদের। হয়তো সে জন্যই বৃহস্পতিবার কলকাতা লিগে কালীঘাটকে ৪-১ গোলে হারানোর পর পনেরো ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের অনুশীলনে নেমে পড়ল মোহনবাগান। রবিবারের শক্ত গাঁট স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার বিরুদ্ধে জয়ের মন্ত্র খুঁজতে। বাগানের সহকারী কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “স্পোর্টিং ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলতেই হবে। কাজটা সহজ নয়। তবে আমরা সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করব।”
সহকারী কোচের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিলেও নবিরা ফুরফুরে। শুক্রবার সকালে মোহনবাগান তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, আর পাঁচটা দিনের মতো গোটা দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওডাফা। অনুশীলনের সময় জুয়েল রাজা-রাকেশ মাসিদের কোনও ভুলত্রুটি হলে বড় ভাইয়ের মতো ‘গাইড’ করছেন। দলের একতা-শক্তি মজবুত করতে নবিকেও বাড়তি দায়িত্ব নিতে দেখা গেল।
করিম বেঞ্চারিফা আসার আগে পর্যন্ত মোহনবাগানকে বহু অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আই লিগে স্পোর্টিং, ওএনজিসি এবং সালগাওকরের মতো শক্ত গাঁটের বাধা টপকাতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে চরম চাপে মৃদুল। যদিও এখন পর্যন্ত তাঁর মার্কশিটে কোনও লাল দাগ নেই। বরং বৃহস্পতিবারের ম্যাচে ডেনসন দেবদাসের ভুলে দলকে একটা গোল হজম করতে হয়। এ দিন তাই শুরুতে মোহন-মিডিওকে একটু মন-মরা দেখাচ্ছিল। কিন্তু মৃদুলের ভোকাল টনিকে ফের তরতাজা হয়ে ওঠেন ডেনসন। মৃদুল বলছিলেন, “আমার দলে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। যেটা সমস্যা হচ্ছিল, সেটা হল বোঝাপড়ার। আস্তে আস্তে সেটাও মসৃণ হয়ে উঠছে।” কালীঘাট ম্যাচে বেশ কিছু ফুটবলারের পারফরম্যান্স নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে বাগানে। ইতিমধ্যেই মণীশ ভার্গব, অনিল কুমাররা কর্তাদের ‘গুড বুকে’ জায়গা করে নিয়েছেন। |