নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
শেষমেশ জলপ্রকল্প নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগই দায়ের করল প্রশাসন। শুক্রবার গোয়ালতোড় থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন গড়বেতা ৩ নম্বর ব্লকের বিডিও সুশোভন মণ্ডল। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ মূলত দু’জনের বিরুদ্ধে। এক, প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কিশোর ঘোষ। দুই, সরকারি ভাবে প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, সেই গড়বেতা ৩ ব্লকের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সাব-অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (রুর্যাল ওয়াটার সাপ্লাই) রামশঙ্কর চক্রবর্তী। প্রশাসন সূত্রে খবর, তদন্ত চলাকালীন আগেই তাঁকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছিল। তবে তাঁর কাছ থেকে সদুত্তর মেলেনি।
গড়বেতা ৩ ব্লকের নলবনা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহারাজপুরে একটি জলপ্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। এলাকাটি ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ঝাড়গ্রামের সিপিএম সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন। বরাদ্দ করা হয়েছিল ৫ লক্ষ ৬ হাজার ৫৭৭ টাকা। জল সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন, জলাধার প্রভৃতি তৈরি হওয়ার কথা। কাজ শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে। এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে দাবি করে বিল জমা পড়ে। বিলবাবদ সব মিলিয়ে ৪ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮৭৯ টাকা মেটানোও হয়। কিন্তু আদপে কাজটি হয়নি বলেই অভিযোগ। এই নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানালে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তদন্ত শুরু হয়। তদন্তের সময় জলপ্রকল্পের অস্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল। দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল, অভিযোগ মিথ্যে। যদিও তদন্তে নেমে আধিকারিকেরা বুঝতে পেরেছেন, ‘ভুয়ো’ বিল জমা দেওয়া হয়েছিল। কাজ না-করেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রকল্প বাবদ অর্থ চেয়েছিলেন। এরপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। প্রশাসন সূত্রে খবর, সব দিক খতিয়ে দেখে শুক্রবারই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নলবনা গ্রাম পঞ্চায়েতটি গোয়ালতোড় থানার অন্তর্গত। তাই এ ক্ষেত্রে গোয়ালতোড় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। ঘটনার জেরে বিড়ম্বনায় পড়েছে প্রশাসনও। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, গোড়া থেকে প্রকল্পের উপর আধিকারিকদের নজরদারি থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না। |