বইমেলার আসর বসছে মেদিনীপুরে। এ বার বেসরকারি উদ্যোগে। আগামী সোমবার থেকে শুরু হবে এই মেলা। চলবে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে।
সরকারি উদ্যোগে প্রতি বছর জেলা বইমেলা হয়। সদর শহরে দু’-তিন বছর অন্তর সেই মেলা বসে। গত বছর খড়্গপুরে জেলা বইমেলা হয়েছিল। তার আগের বছর ঘাটালে। এ বার ‘মেদিনীপুর এডুকেশন অ্যান্ড সার্ভিস সোসাইটি’, ‘দাঁতন স্পোর্টস অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘মেদিনীপুর মৈত্রী ইউনিট’ এই তিনটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত হতে চলেছে ‘মেদিনীপুর বইমেলা ও মৈত্রী উৎসব’। কেন এই উদ্যোগ? কর্মকর্তাদের মতে, “মেদিনীপুরের মতো শহরে বছরে একবার বইমেলা হলে ভালই হয়। এই মেলাকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকবে, তেমন লেখকেরাও উৎসাহিত হবেন। সঙ্গে সংস্কৃতি-চর্চার প্রসার ঘটবে।”
মেদিনীপুর কলেজ মাঠে মেলা ও মৈত্রী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় ১০০টি স্টল থাকবে। হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসব কমিটির সভাপতি হয়েছেন মেদিনীপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মুকুল রায়। যুগ্ম সম্পাদক সুধীন্দ্রনাথ বাগ ও অলোক নন্দী। অলোকবাবু দাঁতন স্পোটর্স অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা। সুধীন্দ্রনাথবাবু মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ। প্রথমে ঠিক ছিল, ১ নভেম্বর থেকে বইমেলা শুরু হবে। পরে দিন পিছিয়েছে। কিন্তু কেন? অলোকবাবু বলেন, “পুজোর জন্য স্টলের কাজ দ্রুত শেষ করা যায়নি। তাই ক’দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে মেলা শুরু হবে।” এমন বইমেলার ভাবনা এল কী ভাবে? মুকুলবাবু বলেন, “আগে থেকেই এমন বইমেলার কথা ভাবছিলাম। ’৯৭ সালে মেদিনীপুর কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বইমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। তখন আমি কলেজের অধ্যক্ষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেই মেলা ভেস্তে যায়। তখন থেকেই ফের বইমেলা আয়োজন করার ইচ্ছে ছিল।” সোমবার মেলা উদ্বোধন করার কথা রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। মেদিনীপুর জেলা ভাগ হওয়ার পর ২০০২ সাল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বইমেলা শুরু হয়। ওই বছর খড়্গপুরে মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
গত বছরের ২৩ থেকে ২৯ ডিসেম্বর রেলশহরেই দশম বর্ষের জেলা বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। তার আগের বছর ঘাটালে জেলা বইমেলা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগে এ বছরও বইমেলা হবে। এ বার ঝাড়গ্রাম বা মেদিনীপুরে ওই মেলা হতে পারে। তার আগেই বেসরকারি উদ্যোগে সদর শহরে বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে চলায় খুশি বইপ্রেমীর। তাঁদের বক্তব্য, বইয়ের বিকল্প হয় না। এখন প্রথাগত পড়ার চাপে ছেলেমেয়েরা গল্প-কবিতার বই পড়ার সময়ই পায় না। এমন মেলা হলে সেই সুযোগ আসবে। সঙ্গে সংস্কৃতি-চর্চারও প্রসার ঘটবে। তাই প্রতি বছরই মেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তারা।
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.