শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মেঘালয়ে
মন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলল সিবিআই
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্তে মেঘালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর দিকে সরাসরি আঙুল তুলল সিবিআই। তাদের ১০৭ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যমানে অদল বদল ঘটানোয় সরাসরি জড়িয়ে ছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী আমপারিন লিংডো। এই রিপোর্টে আমপারিন ছাড়াও রাজ্যের আরও বেশ কিছু মন্ত্রী ও স্পিকারের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। রয়েছে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী আর সি লালুর নামও। রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে সিবিআই-এর এই রিপোর্ট বিরোধীদের হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিল।
২০০৮ সালে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ৭৪৯ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আবেদন জমা পড়ে। প্রতিটি মহকুমায় ইন্টারভিউ বোর্ড গঠিত হয়। ইন্টারভিউয়ের পরে প্রাপ্ত মূল্যমান-সহ প্রার্থীদের নাম শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। সমস্যার শুরু তার পরেই। অভিযোগ, ২০০৯ সালে শিক্ষক হিসেবে যাঁদের নাম নির্বাচিত হয়, তাঁদের অনেকেরই যোগ্যতা মান ছিল না। ২০১০ সালে বিষয়টি নিয়ে তথ্য অধিকার আইনের অধীনে তথ্য দাবি করা হয়। গৌহাটি হাইকোর্টের শিলং বেঞ্চে এই নিয়ে শতাধিক আবেদন জমা পড়ে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি টি ভাইফেই। মোট ১৫টি মহকুমার মধ্যে সিবিআই ৫টি মহকুমায় তদন্ত চালায়। সিবিআই তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে সরকারি দুর্নীতির ছবিটি ফাঁস করে দেওয়ার পরে রাজ্য সরকার মুখে কুলুপ এঁটেছে।
কী রয়েছে এই রিপোর্টে? শিলং, আমলারেম, জোয়াই, তুরা ও দাদেংগিরি মহকুমায় যথাক্রমে ৭৫, ৫৩, ১১১, ৬০ ও ৭৫ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়। মোট ৩৭৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৫৫ জন শিক্ষককেই বেআইনি পথে নিযুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, অন্তত ১৫ জন মন্ত্রী, বিধায়ক নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর জন্য মাঠে নেমেছিলেন। এর মধ্যে আছেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী আর সি লালু (৩৭ জন), স্পিকার চার্লস পাইরংপে (৩ জন), ডেপুটি স্পিকার সানবর সুলে (৪ জন), বনমন্ত্রী প্রেস্টন টিংসং (২০ জন), বিধায়ক এস ধর (৩০ জন), প্রাক্তন বিধায়ক আর এল তারিয়াং (২৯ জন), ইউডিপি বিধায়ক রেমিংটন পাইরোংপে (৪৭ জন), জলসম্পদ মন্ত্রী এ এল হেক (৭ জন), বিধায়ক রনি লিংডো (১৫ জন), সমাজকল্যাণমন্ত্রী জে এ লিংডো (৬ জন), নির্দল বিধায়ক লিমিসন ডি সাংমা (৩৭ জন) ও ডনকুপার মাসার (২ জন)।
রিপোর্ট বলছে, তদানীন্তন প্রাথমিক ও জনশিক্ষা দফতরের অধিকর্তা জে ডি সাংমা জেরায় স্বীকার করেছেন, তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী আমপারিন লিংডোর নির্দেশেই পাঁচটি ইন্টারভিউ বোর্ডের জমা দেওয়া মূল্যমান বদলে দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। সাংমা বর্তমানে স্কুলশিক্ষা ও সাক্ষরতা দফতরের অধিকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। সিবিআইয়ের দাবি, সাংমা জানিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রী, বিধায়কের পছন্দের তালিকা-সহ ফাইলটি শিক্ষামন্ত্রী আমপারিন লিংডো তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ও আমপারিনের দুই সহকারী মিলে খোদ মন্ত্রীর বাড়ি ও সাংমার বাড়িতে বসে, ইন্টারভিউ বোর্ডের পাঠানো নম্বরের তালিকায় সাদা কালি ব্যবহার করে পছন্দমতো নম্বর বসান। অনেকের বয়সও কমানো হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.