|
|
|
|
|
হলদিয়া নিয়ে রাজ্যের কাছে
জবাব চাইতে পারে কেন্দ্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
|
হলদিয়ার ঘটনায় অসন্তুষ্ট মনমোহন সিংহ সরকার এ বারে রাজ্য সরকারের থেকে জবাব চাইতে পারে।
জাহাজমন্ত্রী জি কে ভাসানের কাছে হলদিয়া নিয়ে আগেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে আজই দিল্লি এসে পৌঁছেছেন তিনি। জাহাজ মন্ত্রক সূত্রের মতে, হলদিয়ার গতিবিধি নিয়ে কেন্দ্র মোটেই সন্তুষ্ট নয়। গোটা রিপোর্টটি পর্যালোচনা করে রাজ্যের থেকে জবাব চাইতে পারে কেন্দ্র।
মন্ত্রিসভা রদবদলের দিনই ভাসানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে এক দফা আলোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে হওয়া নতুন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও একটি নোট পাঠানো হয়। আজ দীপা জানান, বিরোধী আসনে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন বিষয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করে এসেছেন। তিনি বারবার বলার চেষ্টা করেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। দলতন্ত্রকেও প্রতিষ্ঠা করতে দেবেন না। কিন্তু এখন যখন দুর্নীতি উঠে আসছে, আর তাঁর দলের নেতাদের যোগ থাকার কথা উঠে আসছে, তখন গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা উচিত।
টাটারা যখন সিঙ্গুর থেকে চলে গিয়েছিলেন, তখনও বলা হয়েছিল সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। আর আজও হলদিয়া থেকে এবিজি যখন চলে যেতে চাইছে, উঠেছে সেই নিরাপত্তার প্রশ্নই। দীপার প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রসঙ্গ তুললে সেই সময় মমতার সরকার সেটিকে রাজ্যের এক্তিয়ার বলে তুলে ধরে। কিন্তু এখনও তো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিই ফের উঠে আসছে।
আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরীও আজ এবিজি-র ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় তৃণমূল সরকারকে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, “প্রথমে সিঙ্গুর, এ বারে হলদিয়া। শিল্পমহলের কাছে বারবার নেতিবাচক বার্তা পৌঁছচ্ছে। এর ফলে বাংলার ভবিষ্যৎই অন্ধকারে ডুবতে বসেছে।” দীপা ও অধীরের মতো মমতা-বিরোধী বলে পরিচিত নেতাদের মন্ত্রী করেই সনিয়া ও মনমোহন বার্তা দিতে চেয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর দেওয়া হবে। তাই প্রতিদিনই সুর চড়া করছেন এই দুই নেতা। তার মধ্যে হলদিয়ার মতো ঘটনা তাঁদের আরও বিরোধিতার জোর বাড়িয়েছে। তবে শুধু হলদিয়া নয়, ধীরে ধীরে আরও বিষয় নিয়েও ধাপে ধাপে সরব হওয়ার কৌশল নিচ্ছেন কেন্দ্রের মন্ত্রীরা। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের ব্যর্থতার হিসেব-নিকেশ করার কাজও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর ও সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেও হলদিয়া নিয়ে সবিস্তার রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।
রাজ্য বিজেপি-ও হলদিয়া প্রসঙ্গ ছাড়তে চাইছে না। তারাও মমতার সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কৌশল নিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা আজ দিল্লিতে এসে লালকৃষ্ণ আডবাণী ও রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। এই নেতাদের কাছে তিনি হলদিয়ার কথা জানান। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল যে ভাবে কংগ্রেসকে গ্রাস করছে, তাতে সনিয়ার দলের ফের মাথা তুলে দাঁড়াতে সময় লাগবে। সে অধীর-দীপা যতই সরব হোন না কেন। অন্য দিকে, সিপিএমকে ক্ষমতায় দেখতে মানুষ এখনও বিশেষ উৎসাহী নয়। আর মমতার সরকার? তার অবস্থা তো এখনই সিপিএমের থেকেও খারাপ। মানুষের মোহভঙ্গ হচ্ছে। ফলে বিকল্প হিসেবে বিজেপির ভিত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও দেখা গিয়েছে, বিজেপির ভোটের অংশ বেড়েছে। তাই এখন হলদিয়াকে সামনে রেখে রাহুল সিনহারা গোটা রাজ্যে প্রচার করতে চান, কী ভাবে শিল্প চলে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। নতুন কর্মসংস্থান তো দূর, যাদের রোজগার আছে, তা-ও বন্ধের মুখে। |
|
|
|
|
|