পঞ্চায়েত ভোটে দেখিয়ে দেব, মমতাকে হুমকি
বার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন এবিজি-র কর্মীরা। বুধবারই হলদিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে এবিজি। ফলে কাজ হারাবেন ৩৭৫ জন শ্রমিক।
তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে বলছেন ‘হলদিয়া স্বাভাবিক রয়েছে’, তাতেই ক্ষুব্ধ এবিজি-র কর্মীরা। গত দু’দিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল করার পরে বুধবার থেকে অবস্থানও শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁদের প্রতিনিধি শেখ নূর আলম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সেট টপ বক্স নিয়ে বলছেন, বাস-ট্যাক্সি নিয়ে বলেছেন। অথচ এবিজি চলে যাবে বললেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। আমরাই ওঁকে ক্ষমতায় এনেছি। কিন্তু উনি আমাদের দেখছেন না। পঞ্চায়েত ভোটে আমরাও দেখিয়ে দেব।”
শনিবার রাতে তিন কর্তার অপহরণের ঘটনার পরেই এবিজি-র বিদায় ঘণ্টা শুনতে পেয়েছিলেন সংস্থার কর্মীরা। তার পরেই তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তাঁরা। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এবিজি চলে গেলে সাংসদ আমরা খাব কী?’ এ দিন কাজ হারাচ্ছেন জেনে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন কর্মীরা।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় কয়েক জন শ্রমিকের বাড়িতে পুলিশ চড়াও হওয়ার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। ছিল মারধর, হুমকির অভিযোগও। এ দিনও তা চলেছে বলে এবিজি-কর্মীদের দাবি। অবস্থানে সামিল শ্রমিকদের তৃণমূল নেতৃত্বাধীন ছাঁটাই শ্রমিকরা হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বৈষ্ণবচকের বাসিন্দা সামশেদ আহমেদ খান বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে শ্যামল আদকের নেতৃত্বে ছাঁটাই শ্রমিকেরা আমাকে হুমকি দিয়েছে।”
চন্দন মাইতি নামে আর এক শ্রমিক বলেন, “আমাদের সংস্থা কোর্টের রায়ে পুলিশ মোতায়েনের জন্য টাকা দিল। আর সেই পুলিশ আমাদেরই মারছে। অবস্থান চালালে তুলে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দিচ্ছে। পেটের দায়েই এ সব করছি। এর পর তো আত্মহত্যা করতে হবে।”
শুভেন্দুকে এ দিন বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে খানাকুলে দলের এক সভায় বলেন, “এবিজি নিয়ে যে সব প্রচার চলছে, তা মিথ্যা। আসলে লক্ষ্মণ শেঠকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য একটি সংবাদপত্র গোষ্ঠী কুৎসা রটাচ্ছে।” সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ এ দিন হলদিয়া না ছাড়ার জন্য এবিজির উদ্দেশে আবেদন করেছেন। তাঁর কথায়, “প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাতেই এমন হচ্ছে।”
কিন্তু ২০১০ সালে এবিজি যখন হলদিয়া বন্দরে এসেছিল, তখন তো সিটু একই ভাবে তার বিরোধিতায় আন্দোলন করেছিল! এ প্রসঙ্গে লক্ষ্মণের বক্তব্য, “প্রশাসনের ব্যর্থতা তখনও ছিল। তবে আমাদের হস্তক্ষেপেই রিপ্লের ৩৫০ জন উদ্বৃত্ত শ্রমিককে এবিজি-তে নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। পরে তৃণমূলের চাপে বাড়তি শ্রমিক নিয়োগ হওয়ায় সমস্যা বাড়ে।”
গোটা ঘটনার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে দায়ী করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবও। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে তিনি বলেন, “সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পর এখন হলদিয়াকে শ্মশানে পরিণত করার চক্রান্ত করছে তৃণমূল। বিরোধী থাকাকালীন তাদের বাধাতেই সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে গিয়েছিল। এখন তারাই প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এবিজি-কে তাড়াল।”
এই অভিযোগ উড়িয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আইএনটিটিইউসি’র কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার অবশ্য বলেন, “এবিজি কম দরে টেন্ডার নিয়ে লোকসান করেছে। তাই হলদিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাদের দু’টি বার্থ বাদ দিয়ে বন্দরের বাকি সব বার্থে কাজ চলছে। শ্রমিকদের দায়িত্ব আমাদের। হলদিয়া বন্দরে স্বর্ণযুগ ফিরে আসবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.