রঞ্জি শুরুর আগেই বাংলা বনাম রাজস্থান
ডেনে বাংলা বনাম রাজস্থান রঞ্জি ম্যাচ শুরু হওয়ার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে নতুন ‘ম্যাচ’ চালু হয়ে গেল!
যুযুধান দুই প্রতিপক্ষের নাম এখানেও বাংলা এবং রাজস্থান। যে ‘ম্যাচে’-র পাল্লায় পড়ে বুধবার গোটা দিন চরম ভোগান্তি সহ্য করতে হল গত দু’বারের রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন রাজস্থানকে। হোটেল খুঁজতে-খুঁজতে সন্ধে পেরিয়ে গেল। লড়ঝড়ে বাসে করে ঘুরতে হল শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। বিশ্বকাপার কোচ মেরিক প্রিঙ্গল সহ টিম রাজস্থানকে মধ্যাহ্নভোজের জন্য রেস্তোঁরা খুঁজতে চক্কর দিতে হল পার্ক স্ট্রিট। আর এমন বেহাল ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সিএবি-র কোষাধক্ষ্য বিশ্বরূপ দে সাফ বলে দিলেন, “গত বছর রাজস্থানে রঞ্জি ম্যাচ খেলতে গিয়ে বাংলাকেও ভুগতে হয়েছিল। তার তুলনায় এটা কিছুই নয়।”
কলকাতার রাস্তায় রঞ্জি চ্যাম্পিয়নরা। বুধবার। -নিজস্ব চিত্র
নাটকের সূত্রপাত, বুধবার সকালে। সিএবি-র পক্ষ থেকে রাজস্থান টিমের জন্য যাঁকে স্থানীয় ম্যানেজার ঠিক করা হয়েছিল, সেই গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত জানতেন না কোন হোটেলে অতিথি দলকে রাখতে হবে। পরে টিম সমেত নির্দিষ্ট হোটেলে হাজির হলে দেখা যায়, সেখানকার ব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের। ছোট ঘর, জিম-টিমের কোনও গল্প নেই। যা দেখে হৃষিকেশ কানিতকররা এতটাই বিরক্ত হয়ে যান যে, বাস থেকেও নামতে চাননি। ক্রিকেটারদের কোথায় তোলা হবে, তা নিয়েও চূড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরি হয়ে যায়। তার মধ্যে রাজস্থান টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে বলা হয়, ক্রিকেটররা অনেকক্ষণ ধরে অভুক্ত। তড়িঘড়ি একটা ব্যবস্থা না করলেই নয়। যার পরিণতি হিসেবে পার্ক স্ট্রিটের রাস্তায় হেঁটে রেস্তোঁরা খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন ক্রিকেটাররা। মধ্যাহ্নভোজ শেষেও ভোগান্তি থামেনি। কারণ, তখনও হোটেল ঠিক করে ওঠা যায়নি। অগত্যা, ক্রিকেটারদের ইডেনে পাঠিয়ে টিম ম্যানেজার হোটেল ঠিক করতে বেরিয়ে পড়েন।
এবং পুরো ঘটনাপঞ্জি দেখে রাজস্থান কোচ-অধিনায়ক, দু’জনেই প্রবল বিরক্ত। সরাসরি না বলতে চাইলেও অধিনায়ক কানিতকর বলে গেলেন, “ক্রিকেটজীবনে এ রকম ঝামেলা অনেক পোহাতে হয়েছে। নতুন কিছু নয়।” আর ’৯২ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আফ্রিকা টিমের পেসার সওয়া ছ’ফুটের মেরিক প্রিঙ্গল (বর্তমানে রাজস্থান বোলিং কোচ) বলে দিলেন, “যত এ সব নিয়ে ভাবব, ততই মুশকিল। যা ঘটে গিয়েছে, ঘটে গিয়েছে। ম্যাচটা মন দিয়ে খেলতে হবে। দেখিয়ে দিতে হবে, আমাদের টিম পরপর তিন বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারে।”
কিন্তু এমন ঘটনা ঘটল কেন?
সিএবি কর্তাদের যুক্তি, হোটেল ঠিক করার দায়িত্ব নিয়েছিল রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থা নিজেরাই। সিএবি-র সঙ্গে কথা না বলেই। কিন্তু ও রকম জঘন্য টিম বাস পাঠানোর মানে? যা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত তো নয়ই, বরং যথেষ্ট নিম্নমানের। এ বার সিএবি কোষাধ্যক্ষের বক্তব্য, “এতে অন্যায় কিছু নেই। যে যেমন, তার সঙ্গে তেমনই হবে। আমরা রাজস্থানে গেলে তো একজন স্থানীয় ম্যানেজারও পাই না।” মজার হচ্ছে, যে টিমকে নিয়ে এত বিতর্ক, তাদেরকেই আবার ‘মডেল’ করে এগোচ্ছেন বাংলা কোচ ডব্লিউ ভি রামন। বাংলা টিমে অভিজ্ঞতার মিশেলটা ঠিকমতো হল কি না জানতে চাওয়া হলে, রামন এ দিন বলে দেন, “আপনারা ওপেনিংয়ে অভিজ্ঞতা কম বলে হা-হুতাশ করছেন। রাজস্থান টিমটাকে দেখুন। ওদের তেমন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কোথায়? কিন্তু প্লেট থেকে এলিটে উঠে পরপর দু’বার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখাল। সব কিছু আপনি নিজের পক্ষে পাবেন না। কিন্তু আপনার হাতে যা আছে, তার থেকেই সেরাটা বের করে নিতে হবে।” এ দিকে, ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ম্যাচ শেষ করে বৃহস্পতিবার রাতে ফিরছেন বাংলার তিন ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি, ঋদ্ধিমান সাহা এবং অশোক দিন্দা। ফিরে চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়ে তাঁদের রঞ্জিতে নেমে পড়তে হবে। তাঁরা টানা সাত দিন খেলার ধকল কতটা নিতে পারবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.