নিজস্ব সংবাদদাতা • বীরপাড়া |
জলের খোঁজে বেরিয়ে চা বাগানের জলাধারে উল্টে যায় দু’বছরের শাবক। দাঁড়িয়ে থাকা মা তাকে দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে। নিরুপায় হয়ে জলাধারে নেমে সে-ও আটকে যায়। অনেক কসরতের পরে মা হাতি ও শাবক উঠতে ব্যর্থ হলে আশপাশে অপেক্ষায় থাকা সঙ্গীরা আর্তনাদ জুড়ে দেয়। খবর পেয়ে বনকর্মীরা পৌঁছে চার ঘণ্টার চেষ্টায় বুনো দুটিকে উদ্ধার করে জঙ্গলে পাঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার ডুয়ার্সের বান্দাপানি জঙ্গল লাগোয়া মাকড়াপাড়া চা বাগান এলাকার ঘটনা। জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “সময় মত টের পাওয়ায় দুটি হাতিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। বাগান কর্তৃপক্ষ দুটি জলাধারের উচ্চতা বাড়িয়েছে। একটির উচ্চতা বাড়াতে বলা হয়েছে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বান্দাপানি জঙ্গল থেকে হাতির দল মাকড়াপাড়া চা বাগান এলাকায় ঢুকে পড়ে। জলের খোঁজে বাগানের জলাধারের পাশে চলে যায়। ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন ওই এলাকার জলস্তর মাটির নীচে থাকায় বাগান কর্তৃপক্ষ সেচের জন্য দু’বছর আগে তিনটি জলাধার তৈরি করেন। একটির পাড়ের উচ্চতা কম থাকায় সেখানে শাবকটি পা হড়কে পড়ে জলে হাবুডবু খেতে শুরু করে। সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মা হাতি ছানাকে উদ্ধারের জন্য ১০ ফুট গভীর জলাধারে নেমে বিপাকে পড়ে যায়। এর পরেই শুরু হয় বিকট আর্তনাদ। বাসিন্দারা জানান, হাতি বিপদে না পড়লে এ ভাবে চিৎকার করে না। তাই শব্দ শুনে তাঁরা টর্চ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন অন্তত আটটি হাতি জলাধারের পাড়ে দাঁড়িয়ে। দু’টি হাতি জলে। আলো দেখে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা হাতিরা জঙ্গলেচলে যায়। খবর দেওয়া হয় বন বিভাগের দলগাঁও রেঞ্জ অফিসে। সেখান থেকে বনকর্মীরা চা বাগানে পৌঁছে রেঞ্জার মানস আচার্যের নেতৃত্বে রাতেই বড় ক্রেন এনে হাতি দুটিকে উদ্ধার করেন। চা বাগানের জলাধারে হাতি পড়ে যাওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা নয়। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা নিয়ে গত দেড় বছরে তিন দফায় ১৬টি হাতি বিপদে পড়ল। |