আদালত অবমাননার একটি মামলায় কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৭ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে জানাতে হবে, কেন তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন বিচারপতি গত চার বছরে বারবার এক আবেদনকারীর জমির নকশা অনুমোদন করার নির্দেশ দিলেও পুরসভা সেই নির্দেশ এখনও পালন করেনি। শেষ পর্যন্ত ওই আবেদনকারী কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতেই বুধবার বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার মেয়রের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবেদনকারী নুরুল হুদা লায়েক নিউ আলিপুর থানা এলাকায় আট কাঠা জমি কেনেন। জমির আগের মালিক পুরসভা থেকে একটি নকশা অনুমোদন করিয়েছিলেন। ২৩এ/৬৬০ ডায়মন্ড হারবার রোডের এই জমিটি কলকাতা পুরসভার ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। জমি কেনার পরে নুরুল অনুমোদনের জন্য নতুন নকশা জমা দেন। কোনও অজ্ঞাত কারণে পুরসভা ওই নকশার অনুমোদন দেয়নি। তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের তৎকালীন সহ-সভাপতি, আবেদনকারী নুরুল হুদা মেয়রের সঙ্গে বারবার দেখা করে অনুমোদন দেওয়ার জন্য আবেদন জানান।
কিন্তু কোনও আবেদনে কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নুরুল। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, বিচারপতি সৌমিত্র পাল, এমনকী কলকাতা হাইকোর্টে তৎকালীন বিচারপতি পিনাকী ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চও কলকাতা পুরসভাকে অবিলম্বে ওই নকশার অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তিন বছর পার হয়ে গেলেও আবেদনকারীর নকশা অনুমোদিত হয়নি। নুরুল হুদা আবার হাইকোর্টকে তাঁর অবস্থার কথা জানান। বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে আবেদনকারীর আইনজীবী অসিত ভট্টাচার্য বলেন, আবেদনকারীর নকশার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পুরসভা নীরব। বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় পুনরায় পুরসভাকে অবিলম্বে নকশার অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ বারেও পুরসভা নীরব থাকায় আবেদনকারী আদালত অবমাননার মামলা করেন। হাইকোর্ট মেয়র ও পুরসভার কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাঁদের হাজির হয়ে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে না, তা জানানোর নির্দেশ দেয়। ইতিমধ্যে অবশ্য তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতির পদ থেকে নুরুল হুদাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “এ বিষয়ে কোনও চিঠি পাইনি। আগে পাই।” |