বিমা
আগে প্রয়োজন ভাবুন। তার পর বিমা বাছুন
মরা বিমা কিনি প্রধানত নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা অথবা ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার জন্য। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কী ধরনের বিমা প্রয়োজন, তা নিয়ে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। অথচ তা একান্ত জরুরি। কারণ, বাজারে অনেক প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু ঠিকটি বেছে নিতে না-পারলে, ধাক্কা খাবে সঞ্চয় পরিকল্পনা। তিনটি উদাহরণে বিষয়টি স্পষ্ট হবে


প্রথম ব্যক্তির ১৭ বছরের মেয়ে রয়েছে। তিনি এক বছর আগে সন্তানের পড়াশোনার জন্য একটি এডুকেশন প্ল্যান কিনেছেন।
ভুল: পড়াশোনার জন্য যে ধরনের বিমা কেনা হয়, সাধারণত ১০ বা তার বেশি বছর ধরে সেই বিমার প্রিমিয়াম দিতে হয়। ফলে সন্তান ছোট থাকার সময় যদি এই বিমা কেনা যায়, তা হলে আসল সময়ে সেই লক্ষ্যপূরণ করা সম্ভব। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।


দ্বিতীয় ব্যক্তি ২৬ বছরের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। নতুন চাকরি। অবিবাহিত। থাকেন বাবা-মার সঙ্গে। তিনি ইউলিপ প্রকল্পে টাকা ঢেলেছেন। প্রিমিয়াম মাসিক বেতনের ৩০%।
ভুল: এই ব্যক্তি নতুন চাকরিতে ঢুকেছেন। ভবিষ্যতে নিজের পরিবার শুরু করবেন। বাড়ি, গাড়ি কেনারও শখ থাকতে পারে। তাই তাঁর বেতনের অনেকটা অংশই যদি এই বিমায় চলে যায়, তা হলে সংসার চালাতে অসুবিধা হতে পারে। প্রিমিয়াম দিতে না পারলে গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকাও।


তৃতীয় ব্যক্তি ৪৮ বছর বয়সী ডাক্তার। বার্ষিক আয় ৫০ লক্ষ টাকা। সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটি। তিনি সঞ্চয় প্রকল্পে লগ্নি করেছেন।
ভুল: ডাক্তারবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ প্রচুর। আয়ও মন্দ নয়। তাই সঞ্চয় প্রকল্পের বদলে তাঁর উচিত ছিল সম্পদ বাড়ানোর দিকে মন দেওয়া। সে ক্ষেত্রে তিনি বেশি ঝুঁকির কোনও প্রকল্পে লগ্নি করতে পারতেন। দেখুন, তিন জনেরই নিজেদের প্রয়োজন সম্পর্কে ধারণা গড়ে ওঠেনি। হয়তো সঠিক পরামর্শ দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞও। ফলে ব্যর্থ হয়েছে বিমা কেনার লক্ষ্য।


কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলেই মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এই সমস্যা থেকে। যেমন
• বিনিয়োগকারীর বয়স কত
• তাঁর সন্তান রয়েছে কি না
• পরিবারের দায় কত
• আগামী দিনে নির্দিষ্ট কোনও লক্ষ্য রয়েছে কি না (ব্যবসা শুরু করা, বাড়ি তারি, গাড়ি কেনা ইত্যাদি)।
সাধারণত ছ’ধরনের প্রয়োজন মেটাতে বিমা করি আমরা। বেছে নিই ছ’ধরনের প্রকল্পের কোনও একটি—

আয়ের সুরক্ষা
বাছুন: প্রোটেকশন প্ল্যান
পরিবারের সুরক্ষাই যদি লক্ষ্য হয়, তা হলে এই বিমা আপনাকে দিশা দিতে পারে। এটি সঞ্চয় প্রকল্প নয়। তাই এমনিতে এ থেকে রিটার্নের আশা করাও যায় না। কিন্তু এতে প্রিমিয়াম কম। এবং বিমাকারীর মৃত্যু হলে টাকা হাতে পায় তাঁর পরিবার।

সম্পদ তৈরি ও সঞ্চয়
বাছুন: সেভিংস প্ল্যান
অনেক সময়ই ব্যবসা শুরু করা, বাড়ি কেনা বা সন্তানের বিয়ের জন্য সঞ্চয় করেন মানুষ। তাঁদের জন্য রয়েছে এই বিমা প্রকল্প। দীর্ঘ দিন ধরে অল্প সঞ্চয় করেই জমিয়ে ফেলা যায় একটি বিশাল সম্পদ। যা সময় এলে প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করবে।

হাতের বাড়তি টাকা সঞ্চয়
বাছুন: ওয়েল্থ এনহ্যান্সমেন্ট প্ল্যান
মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে বলব, কোনও লগ্নিই যথেষ্ট নয়। আজ যা আপনার কাছে বেশি মনে হচ্ছে, আগামী দিনে দেখলেন তা দিয়ে প্রয়োজন মিটছে না। তাই যদি এখন সরিয়ে রাখার মতো বাড়তি টাকা হাতে থাকে, তা হলে লগ্নি করুন এই ধরনের প্রকল্পে। যা সম্পদ বাড়াতে সাহায্য করবে।

সন্তানের পড়াশোনা
বাছুন: শিক্ষা বিমা
বর্তমানে পড়াশোনার খরচ বিশাল। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। তাই সন্তান জন্মানোর পরই যদি একটি ভাল বিমা করিয়ে রাখলে আর এই বিষয়ে চিন্তা করতে হয় না। এই ধরনের বিমায় প্রিমিয়ামে ছাড় দেওয়ার চলও রয়েছে অনেক সংস্থায়। আবার বাবা-মা-র কিছু হলে মেলে সুরক্ষার গ্যারান্টিও।

অসুস্থতায় আয়ের সুরক্ষা
বাছুন: ইম্পায়ার্ড হেল্থ প্ল্যান ও স্বাস্থ্য বিমা
চিকিৎসার খরচ এখন আকাশছোঁয়া। তাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বাস্থ্য বিমাই ভরসা। রয়েছে পরিবারের সুরক্ষার প্রশ্নও। ফলে প্রস্তুত থাকা জরুরি। ইম্পায়ার্ড হেল্থ প্ল্যান দিতে পারে নিয়মিত আয়।
সচ্ছল অবসর
বাছুন: রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান
অবসরের পর অনেকেই চান বিদেশ ঘুরতে। পরিবারকে বেশি সময় দিতে। তখনও কিন্তু সংসার খরচ চালাতে নিয়মিত আয় প্রয়োজন। তাই এখন পেনশন প্রকল্পে লগ্নি করলে দেখবেন, পরের কষ্টটা অনেকটাই কম। অবশ্য ঠিক কোনটি উপযোগী, তা কিন্তু বেছে নিতে হবে আপনাকেই। তাই পরিবারের সঙ্গে বসে বাছুন নির্দিষ্ট প্রকল্প।

লেখক এডেলওয়াইজ টোকিও লাইফ ইনশিওরেন্স-এর সিইও


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.