|
|
|
|
উত্তরের চিঠি |
প্রজাপতির রঙে ভরে উঠুক গোটা পৃথিবীটা |
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে নাকি প্রজাপতি পার্ক গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা চলছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হোক কামনা করি ও আশা করি বালুরঘাটের মতো বিভিন্ন জায়গায় প্রজাপতি পার্ক গঠনে বন ও পরিবেশ দফতর ভবিষ্যতে উদ্যোগ নেবে। কিন্তু জীববৈচিত্র রক্ষায় শুধুমাত্র সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। এর জন্য দরকার সর্বসাধারণের সচেতনতা ও তাদের সরাসরি অংশগ্রহণ। বিশেষ করে প্রজাপতির মতো সুন্দর জীবকে প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করার জন্য সহজেই বাড়ির আশপাশটাকে প্রজাপতি পার্ক বানিয়ে ফেলতে পারি। কম-বেশি সবাই বাড়িতে ফুল ও বাহারি গাছ লাগাতে ভালবাসি। বাড়িতে যথেষ্ট জায়গা না থাকলে ছাদে, কার্নিশে, জানলার রেলিঙে ধারে ও টবে গাছ লাগাই। যদি খেয়াল করে দেখি আশপাশে মাঠঘাটে যে সমস্ত প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে, তারা কোন কোন গাছের আশেপাশে বেশি উড়ছে বা কোন ফুলে বেশি বসছে, তা হলে বাড়িতে গাছ লাগানোর সময় যদি সেই সব গাছকে গুরুত্ব দিই, তবে আশপাশটা হয়ে উঠবে প্রজাপতি পার্ক। যেমন গোলাপ গাছ প্রজাপতিকে আকর্ষণ করে না। অতসী, রঙ্গন, গাঁদা, হাতিশুঁড়, বিলারি, কসমস গাছ থাকলে বিভিন্ন ধরনের টাইগার, ক্রো প্রভৃতি প্রজাপতি হাজির হয়। আবার বাগানে লেবুগাছ, কারিপাতা গাছ থাকলে মরমন, লাইম, লাইমব্লু, গুয়াভাব্লু প্রভৃতি প্রজাপতির আনাগোনা বাড়ে। |
|
নিমফ্যালিডি গোষ্ঠীর বেশ কিছু প্রজাপতির কাছে আকর্ষণীয় স্থল হল বাগানের কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা প্রভৃতি গাছগুলো। ছাদের বা কার্নিশের টবে পট ক্যাসিয়া, ক্যান্ডেল স্টিক ক্যাসিয়া, নয়নতারা, আইভি লতা প্রভৃতি গাছ লাগালে নির্ঘাৎ সেখানে হাজির হবে গ্রাস ইয়েলো, এমিগ্রান্ট প্রভৃতি প্রজাপতি। বাগানে জায়গা থাকলে বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতির ডিম পাড়ার পছন্দের গাছগুলো সংগ্রহ করে লাগালে এবং সেই সঙ্গে প্রজাপতির আশ্রয়স্থল হিসাবে কিছু ঝোপ লাগালে প্রজাপতিকে বাগানে বেশিক্ষণ আটকে রাখা যায়। বাগানে কিছু পাথর বা কাঠের টুকরো ছড়িয়ে রেখে বা ভেজা জায়গায় লবণ ছড়িয়ে রেখে প্রজাপতিদের বাস্কিং বা মাড পাডলিং-এর ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। নিজের বাড়ি বা তার আশপাশটাকে প্রজাপতি পার্ক বানিয়ে ফেলতে আমাদের যে প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতে হবে বা বাড়িতে খুব বড় বাগান থাকতে হবে এমন কোনও কথা নেই। যেটা দরকার সেটা হল আমাদের সদিচ্ছা ও মূল্যবান সময় থেকে কিঞ্চিৎ সময়, যেটা দিলেই আমরা আমাদের ছাদের বা জানলার টবের গাছগুলোকেও প্রজাপতির কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। বাগান ছোট হোক বা বড়, উদ্যোগ ছোট হোক বা বড়, প্রজাপতি সংরক্ষণে সব উদ্যোগই পরিবেশে এই পতঙ্গটিকে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
চন্দন পাণ্ডে। গঙ্গারামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর
|
প্রত্যাখ্যাত সু-উদ্যোগ |
তিন বছর আগে এক আত্মীয়ার অসুস্থতার কারণে ভেলোরে গিয়ে দেখেছিলাম কী বিপুল সংখ্যায় কিডনি রোগীরা ওখানে চিকিৎসা করাতে যান। রোগীদের বেশির ভাগ পশ্চিমবঙ্গের। খুব ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য এ চিকিৎসা। ২১ সেপ্টেম্বর আনন্দবাজারে অনির্বাণ রায়ের লেখাটা পড়ে আমি মর্মাহত। ভোলা (অলোক বসু) জলপাইগুড়ির একজন কৃতী সন্তান। আমার বাল্যবন্ধু। এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। জলপাইগুড়ির প্রতি তার অনুরাগ আমাকে মুগ্ধ করে। প্রায় এক বছর আগে তার জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ডায়ালিসিস যন্ত্র উপহার দেওয়ার সদিচ্ছার খবর কাগজে যখন প্রকাশিত হয় আমরা তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলাম। আমাদের রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ খুব দুর্বল। অপ্রতুল পরিকাঠামো, হয় কোথাও স্যালাইন নেই, তো কোথাও ব্লাডের ভাণ্ডার শূন্য। প্রয়োজনীয় যন্ত্রের অপ্রাচুর্য। এই রকম অবস্থাতেও এত মূল্যবান ডায়ালিসিসের যন্ত্রগুলো প্রত্যাখ্যাত হল। জলপাইগুড়িবাসী কি এটা প্রতিহত করবে না? আমি হতাশ হলাম। কাগজে আরও পড়লাম জলপাইগুড়িবাসীর আবেগ আছে। আমি একজন সৃজনশীল নাট্যকর্মী, সেই একই রকম আবেগের তাড়নায় জলপাইগুড়ির সকল নাট্যকর্মী, সমাজকর্মী এবং সুশীল নাগরিকের কাছে আমার বিনম্র অনুরোধ, এমন সুযোগ যেন নষ্ট না হয়। ওই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যন্ত্রগুলো যাতে জলপাইগুড়ি থাকে তার উদ্যোগ নিন।
সোমনাথ সান্যাল, শিলিগুড়ি
|
কাকাবাবু ও সন্তু বন্ধ হল |
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন। রাউলিঙের যেমন হ্যারি পটার তেমনই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবু ও সন্তু। বড়দের জন্য লেখা যতটা সহজ ছোটদের জন্য লেখা ততটাই কঠিন। শিশু মনকে জয় করা সহজ নয়। শৈশব ও কৈশোর মন জয় করার দক্ষতা এই সময়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছিল বলে এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। আমি চল্লিশ বসন্ত পেরিয়ে গেছি। কিন্তু আমার শৈশব কৈশোরের অনেকটা অংশ জুড়ে ছিল কাকাবাবু ও সন্তু। আমাদের সময় ফেসবুক, মোবাইল, কম্পিউটার ছিল না। ফেলুদা, তোপসে, প্রফেসর শঙ্কু, টিনটিন, বোমকেশ বক্সী, কাকাবাবু ও সন্তু, এরাই ছিল আমাদের বিনোদন। আনন্দমেলার সংখ্যাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। কখন হাতে পাব। নবমীতে প্রিয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চিরতরে চলে গেলেন। আনন্দমেলায় ধারাবাহিক ছোটদের মহাভারত আর সম্পূর্ণ হল না। আর কাকাবাবু ও সন্তুর নতুন অ্যাডভেঞ্চার শুরু হবে না। দীর্ঘ বছরগুলিতে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যা দিয়ে গেলেন তা বাংলা সাহিত্যের রত্ন হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে। শিশুসাহিত্যে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার এই শূন্যস্থান কোনও দিনই পূরণ হবে না। তিনি কবি, শিল্পী, প্রাবন্ধিক, শিশুশিল্পী, সাহিত্যিক। তিনি নিভৃতে চলে গেলেন। আর তার সঙ্গে হারিয়ে গেল কাকাবাবু ও সন্তু।
সমিত ঘোষ।
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর
|
রায়গঞ্জবাসীর দাবিগুচ্ছ |
|
রায়গঞ্জ স্টেশন। ছবি তরুণ দেবনাথ। |
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ একটি অত্যন্ত পশ্চাৎপদ রেলস্টেশন। অতি সম্প্রতি কিছু উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে বিশেষত যাত্রী পরিবহণে। যেমন এনজেপি-রাধিকাপুর ডিএমু, কলকাতা-রাধিকাপুর এক্সপ্রেস। সপ্তাহে একদিন দিল্লি যাওয়া আসার গাড়ি, সেই সঙ্গে কাটিহার-রাধিকাপুর কয়েকটি সাধারণ যাত্রী পরিবাহী রেলগাড়ি। এই জন্য রায়গঞ্জবাসী রেলমন্ত্রী থেকে প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে কৃপণতা করেননি। দীর্ঘদিনের আরও কিছু দাবি আছে যেমন মাল পরিবহণের ব্যবস্থা, কলকাতার জন্য রাধিকাপুর-কলকাতা দিনের বেলার একটি গাড়ি, মালদা-রাধিকাপুর আন্তঃশহর যাত্রী যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই অঞ্চলের প্রচুর মানুষকে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যেতে হয়। চেন্নাইয়ের সঙ্গে রাধিকাপুর রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, এই স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের আচ্ছাদন এতই ছোট যে ট্রেনের বেশি অংশই আচ্ছাদনের বাইরে থাকে। তাই বর্ষায় এবং শীতকুয়াশায় মালপত্র নিয়ে ভিজে একসা হয়ে ট্রেনে ওঠানামা করতে হয়। রায়গঞ্জের রেলস্টেশন-সহ সংশ্লিষ্ট ওভারব্রিজের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য রেলমন্ত্রী-সহ সকল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই।
আশিস সরকার, রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর। |
এই বিভাগে চিঠি পাঠান নাম ও সম্পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করে। |
|
|
|
|
|
|