হাসপাতাল হবেই, আশা জেলা জুড়ে
রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রবিবার শপথ নিতেই রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার বাসিন্দারা। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দীপাদেবী কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। এদিন বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলে দীপাদেবীর শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতেই জেলা জুড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। অনেকেই মনে করছেন, দীপাদেবী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির সম্ভাবনা জোরদার হল। শুধু তাই নয়, হাসপাতাল তৈরির জন্য রায়গঞ্জের পানিশালায় জেলা প্রশাসন যে ১০০ একর জমি চিহ্নিত করেছে, সেখান ৯০ জন মালিক তথা চাষিরাও উচ্ছ্বসিত। তাঁরাও মনে করছেন, এবারে দীপাদেবী রাজ্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করাতে পারবেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “কেন্দ্রে এতদিন কংগ্রেস-তৃণমূল জোট থাকায় তৃণমূল রাজ্যের কংগ্রেস সাংসদদের মন্ত্রী হতে দেয়নি। সেই কারণে কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা হতাশায় ভুগছিলেন। কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে জোট ভাঙায় কংগ্রেস মুক্ত হয়েছে। দীপাদেবী মন্ত্রী হওয়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তর দিনাজপুর জেলায় কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হল।” এর পরেই মোহিতবাবু জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে এইমসের ধাঁচে রায়গঞ্জে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করানো তাঁর প্রথম কাজ হবে বলে দীপা দেবী জানান।তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ জানান, বাস্তবে কে কতটা রাজনৈতিক লাভ করবে তা আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলেই পরিস্কার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, “আমরাও চাই রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হোক। তবে মুখ্যমন্ত্রী কৃষি জমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির পক্ষপাতি নন। চাষিরা স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা কেনও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাচ্ছেন না, তা বুঝতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী জেলার উন্নয়ন না চাইলে ইটাহারে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জেলায় দুটি সুপার মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি করার ঘোষণা করতেন না।” তবে জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল খুশি। তিনি বলেন, “দীপাদেবী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় জেলার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা খুশি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকার রায়গঞ্জে ৮২৩ কোটি টাকা খরচে ১০০ একর জমিতে ৯৬০ শয্যার এইমসের ধাঁচের একটি হাসপাতাল গড়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকারকে বিনামূল্যে জমি দিতে হবে। জেলা প্রশাসন রায়গঞ্জের পানিশালায় ১২৫ একর জমি চিহ্নিত করে। ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করে সবুজ সঙ্কেত দেয়। ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ তৎকালীন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রকে চিঠি পাঠিয়ে হাসপাতাল তৈরির জন্য রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর অনুরোধ করেন! বধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া থমকে যায়। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল প্রথমে কল্যাণীতে করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। তার প্রতিবাদে মূলত দীপা দেবীর নেতৃত্বে উত্তর দিনাজপুর সহ গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। এমতাবস্থায়, দীপা দেবী মন্ত্রী হওয়ায় এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল রায়গঞ্জে তৈরির কাজে গতি আসবে বলে আশাবাদী অনেকেই। পানিশালার চাষি তফিল মহম্মদ, ইলিয়াস আলি, বিশু মহম্মদরা বললেন, “এখন আমাদের জমি নেওয়ার কাজটা তাড়াতাড়ি করানো যাবে বলে মনে হয়।” পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুন্ডু ও রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীও মনে করেন, এইমসের মতো হাসপাতাল তৈরি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটবে। তিনি বলেন, “দীপা দেবী এ বার মন্ত্রী হওয়ায় রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল গড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.