নাগালে সব্জি, তারতম্য শুধু ফল-ফুলের দরে
রে লক্ষ্মী আনতে রবিবার বাজার চষে বেরালেন বাড়ির কর্তারা। সঙ্গে ঢাউস ব্যাগ। বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া- দুই জেলার হাট-বাজার লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন বেচাকেনায় জমে উঠেছিল। জিনিসপত্রের দাম দেখে কেউ বললেন, গত বারের মতো ফল-ফুলের দর এ বার ধাক্কাটা কিছু কমই দিল। আবার কেউবা দর চড়া বলে ফর্দ কাটছাঁট করলেন।
দুর্গাপুজোর পরে লক্ষীপুজোর সময় সাধারণত বাজার দর অগ্নিমূল্য থাকে। অন্তত গত কয়েক বছর ধরে এমনই অভিজ্ঞতা জেলাবাসীর। রবিবার বাঁকুড়া জেলার তিন মহকুমার বাজার ঘুরে দেখা গেল ফল ও ফুলের দাম কিছুটা চড়া। ক’দিনের মধ্যেই আপেলের দাম কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা থেকে বেড়ে এ দিন ৮০-১০০ টাকা দরে বিকোচ্ছিল। বাঁকুড়া ও খাতড়ায় ওই দাম মিললেও, বিষ্ণুপুরে আরও ১০ টাকা বেশি দামে দর হেঁকেছেন আপেল বিক্রেতারা। দেবীর প্রসাদ কিংবা নাড়ুর জন্য নারকেল লাগবেই। এক একটি নারকেল ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হল। শশা, পানিফল, লেবু, বেদানা দিয়ে নৈবেদ্যর ডালি সাজাতেও পকেট থেকে বেশি টাকা খসাতে হচ্ছে। এ দিন বাঁকুড়া শহরে বেদানা কেজিতে ১২০ টাকা, কমলালেবু কেজিতে ৮০ টাকা, ন্যাসপাতি কেজিতে ৮০ টাকা সিঙ্গাপুরি কলা ৩০ টাকা ডজনে বিক্রি হয়। পুরুলিয়া জেলায় আবার বিভিন্ন বাজারে ফলের দামের তারতম্য দেখা গিয়েছে।
এসো মা আমার ঘরে। রবিবার বিষ্ণুপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়া শহরে আপেলের দাম বেড়েছে কেজি পিছু ২০ থেকে ৪০ টাকা। এ দিন আপেল বিক্রি হল ১২০ টাকা প্রতি কেজিতে। এখানে কমলালেবুর দাম ৬০-৭০ টাকা প্রতি কেজি হলেও আদ্রায় প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি হয়েছে। আবার চাঁপা কলার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো ঘটনা। আদ্রায় চাঁপা কলার দাম ছিল ডজনে ৩০ টাকা, পুরুলিয়ায় তা বিক্রি হল ৫০-৬০ টাকায়। অন্যান্য ফলের দাম অবশ্য বাঁকুড়ার বাজারের আশেপাশেই ছিল। বাঁকুড়া শহরের মাচানতলায় ফল ব্যবসায়ী শেখ মুন্না, শ্যামসুন্দর গরাইরা বলেন, “লক্ষ্মীপুজোয় বরাবরই ফলের দাম বাড়ে। এ বার সে তুলনায় খুব একটা বাড়েনি।” কিন্তু বাজার সেরে ফেরার পথে ক্রেতারা অন্য কথা বললেন। পাত্রসায়েরের সুচাঁদ দাস, খাতড়ার সমর মল্লিকরা বলেন, “বাজার আসার আগে খরচ যা ধরেছিলাম, খরচ হল তার থেকে ঢের বেশি। কিছু জিনিস আবার কেনাই গেল না।”
দেবী লক্ষ্মীর হাত কি পদ্ম বিনা শোভা পায়? বাঁকুড়ায় দুর্গাপুজোর সময় প্রতিটি পদ্ম ফুল ২ টাকায় বিক্রি হলেও এ দিন ৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পুরুলিয়াতেও ৬-৭ টাকায় বিক্রি হল। গাঁদা ফুলের মালাও ৪-৭ টাকা দামে বিক্রি হল। পুরুলিয়ায় আরও ৩ টাকা বেশি দাম গুনতে হয়েছে ক্রেতাদের। পুরুলিয়ার কাশীপুর থেকে বাঁকুড়ায় বাজার করতে এসেছিলেন নয়নতারা তন্তুবায়। ফুলের দাম দেখে তাঁর প্রশ্ন, “দুর্গাপুজোর তুলনায় লক্ষ্মীপুজোয় ফুলের দাম এত বাড়ল কী করে?” মাচানতলার ফুল বিক্রেতা সন্দীপ সরকার বলেন, “শিশির বড়তে শুরু করায় পদ্মের ফলন কমে গিয়েছে। তাই দামও চড়ে গিয়েছে।” পুরুলিয়ার ফুল বিক্রতা জগবন্ধু জানার দাবি, “গাঁদা ফুলের মালার দাম বরং কিছুটা কমে গিয়েছে।”
খিচুরি ভোগে আবার সব্জি থাকাও দরকার। গিন্নির এই হুকুম তামিল করতে এ বার অবশ্য কর্তাদের খুব চাপে পড়তে হয়নি। তাঁদের কথায়, “মহালয়ার সময়কার তুলনায় সব্জির দাম খুব একটা বাড়েনি। কিছু ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটলেও গড়পড়তা দামের বিশেষ পার্থক্য ছিল না।” আদ্রার পাইকারি সব্জি বিক্রেতা অনিল প্রসাদের ব্যাখ্যা, “চাহিদা থাকলেও মূলত দু’টি কারণে সব্জির দাম আকাশ ছোঁয়া হয়নি। গত কয়েক বছর পুজোর আগে বৃষ্টি কম হওয়ায় মাঠেই সব্জি নষ্ট হয়েছিল। জোগান কম থাকায় দাম বেড়েছিল। এ বার সব্জির ক্ষতি না হওয়ায় এবং পুজো পিছিয়ে যাওয়ায় শীতকালীন সব্জির দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।” পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা উত্তরা বিশ্বাস, স্বাতী সরকাররা বলেন, “অন্য বার পুজোর আগে সব্জিবাজারে যেন আগুন লেগে থাকে। এ বার লক্ষ্মী কিছুটা রেহাই দিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.