শুক্রবার রাত পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। ফলে ভোগান্তি চলছেই। এ দিন দুপুরে কলেজ কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়, সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে হাউস-স্টাফদের হস্টেলের ঘর খালি করতে দিতে হবে। ইন্টার্নদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না। তারপরেও কর্মবিরতি প্রত্যাহার হয়নি। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যাল বলেন, “পুরো বিষয়টি আমরা স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছি। এ ভাবে আন্দোলন করা অনুচিত। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
চিকিৎসা অবহেলায় এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শম্ভু রায়। বাড়ি মোহনপুরে। তাঁর মৃত্যুর পরে পরিজনদের অভিযোগ, চিকিৎসার অবহেলায় এই মৃত্যু। এরপর জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বচসায় জড়ান মৃতের পরিবারের লোকজন। এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রোগীর পরিজনেরাও পাল্টা মার খান বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পরই নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
মেডিক্যালে মাঝেমধ্যেই এমন ঘটনা ঘটে। হাতাহাতি, উত্তেজনার জেরে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের সমস্যায় পড়তে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সব অভিযোগ ঠিক থাকে না। অনেক সময় ঠিকমতো চিকিৎসা হলেও রোগীর পরিজন গাফিলতির অভিযোগ করেন। একাংশ রোগীর পরিজনদের পাল্টা বক্তব্য, সিনিয়র ডাক্তাররা সব সময় থাকেন না। জুনিয়র ডাক্তারদের উপর নির্ভর করতে হয়। জুনিয়র ডাক্তারদেরও বক্তব্য, সিনিয়ররা না থাকায় তাঁদের উপর বাড়তি চাপ এসে পড়ে। রোগীর পরিবারের লোকজনদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।
শুক্রবার দুপুরে কলেজ কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যাল, হাসপাতাল সুপার যুগল কর প্রমুখ। তবে বৈঠক থেকে কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। খোদ হাসপাতালেও মাঝেমধ্যে ওষুধের স্টক শেষ হয়। তখন চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাসপাতাল থেকে ওষুধ নিতে এসেও অনেককে খালি হাতে ঘুরতে হয়। সামান্য অ্যান্টিবায়োটিকও ক্যাপসুলও হাসপাতাল থেকে মেলে না বলে অভিযোগ। কেন এই পরিস্থিতি চলবে, একাংশ জুনিয়র ডাক্তার সেই প্রশ্নও তুলেছেন। হাসপাতাল সুপার বলেন, “দাবি জানানো যেতেই পারে। তবে এ ভাবে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন সমর্থনযোগ্য নয়।” জুনিয়র ডাক্তারদের এই কর্মবিরতির ফলে সমস্যা হয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন সুপার। তাঁর বক্তব্য, “কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে সেই সমস্যা কাটিয়েই কাজ চলছে।” |