রাজ্যের স্বাস্থ্য-উপদেষ্টা হিসেবে চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের নিয়োগের বিষয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীকে নোটিস দেওয়া যায় না। অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্টের উল্টো পথেই হাঁটল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
গত জুলাই মাসে সুকুমারবাবুকে রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন মমতা। রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন প্রবাসী চিকিৎসক কুণাল সাহা। তাঁর বক্তব্য ছিল, ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে সুকুমারবাবুর বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ওই ভুল চিকিৎসার জেরেই তাঁর স্ত্রী অনুরাধা সাহার মৃত্যু হয়েছিল। মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াও সুকুমারবাবুকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে, কোন যুক্তিতে সুকুমারবাবুকে রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নিয়োগ করা হল, তা জানতে চান কুণালবাবু। হাইকোর্ট ওই মামলাটি গ্রহণ করলেও মামলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কুণালবাবু সুপ্রিম কোর্টে যান।
এ দিন সেই মামলাতেই মমতাকে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন ওই মামলায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না, তা জানানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ছ’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি আর এম লোঢা এবং এ আর দাভের বেঞ্চ এ দিন হাইকোর্টের রায়ের সমালোচনা করে বলেছে, কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তা অস্বাভাবিক। ওই মামলায় অবশ্যই মমতাকে নোটিস দেওয়া উচিত ছিল। অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনা উচিত ছিল কলকাতা হাইকোর্টের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এ দিন পশ্চিমবঙ্গ সরকার, চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় এবং এমসিআই-কেও নোটিশ দিয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তাঁরা জানেন না। এ ব্যাপারে যা বলার বলবেন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী। সেই আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রায়ের প্রতিলিপি হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করবেন না। |