|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
‘প্রশ্ন করার সাহস করেছ? —মাওবাদী’ |
শেকসপিয়রের নাটক বোঝাপড়ায় অপরিহার্য নয় নির্দিষ্ট ইতিহাস ভূগোলের বোঝাপড়া। সেসব নাটকে ফিরে ফিরে আসে যায় মানুষের স্বভাবে এদিকওদিক উল্টোপাল্টা ঝোঁক, তার স্ববিরোধের ধরনধারণ, রাজাপ্রজা সম্পর্কের হেরফের, সঙ্গত অসঙ্গত ঈর্ষা সন্দেহ দ্বেষের তাড়না। ‘আমাদের সমসাময়িক শেক্সপিয়র’ নিবন্ধে লিখেছেন অশোক সেন, তাঁর সম্পাদিত বারোমাস-এ। সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি আর সংস্কৃতির সমাজবীক্ষায় এ-পত্রের প্রবন্ধাদি ধারালো বুদ্ধিমার্গী ও চিন্তা-উদ্রেককারী। যেমন দীপেশ চক্রবর্তীর ‘ধান্দাবাজি ও মতলবের কথা’। দেবেশ রায়ের উপন্যাসের সূত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় লিখছেন ‘ভারতের অন্য রাজ্যের মতো এখানে আর কখনো কোনো দলিত রাজনৈতিক আন্দোলন দানা বাঁধেনি। দেশভাগের ইতিহাস যে তার জন্য বহুলাংশে দায়ী, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।’ হিন্দু-মুসলমান নিয়ে ‘সম্প্রদায়-সম্পর্ক: ইতিহাসের পাঠ’ লিখেছেন অনুরাধা রায়। দরিদ্র ও দারিদ্র্য নিয়ে রচনায় অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় আর স্বাতী ভট্টাচার্যের মত: ‘গরীবকে মর্যাদা দিতে হলে তার পছন্দ-অপছন্দ, আশঙ্কা-উচ্চাশা সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য-পরিসংখ্যানকে মর্যাদা দেওয়া চাই।’ গ্রিস ও ভারতের অর্থনীতি নিয়ে দীপংকর দাশগুপ্তের তুলনামূলক বিশ্লেষণ, সেমন্তী ঘোষের রচনা ‘অনশনের নৈতিকতা’ নিয়ে, আর ‘চিত্রাঙ্গদা’র অস্তিত্বের সংকট নিয়ে শেফালী মৈত্রের। রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান-ভাবনা নিয়ে সৌরীন ভট্টাচার্য, জনস্বাস্থ্য চর্চা নিয়ে স্থবির দাশগুপ্তের রচনার সঙ্গে অমিয় দেব মণীন্দ্র গুপ্ত শ্যামলকুমার গঙ্গোপাধ্যায় সুধীর চক্রবর্তী সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আশীষ লাহিড়ী পরিমল ভট্টাচার্য সোমেশ্বর ভৌমিক রুশতী সেন মৈনাক বিশ্বাস প্রমুখের রচনায় মুক্ত চিন্তার স্বাদ। এ ছাড়াও সাদাত হাসান মান্টো ও হেমাঙ্গ বিশ্বাস স্মরণ। গল্প-কবিতা।
‘এখনও কি তুমি প্রতিবাদ করো?
মাওবাদী।
প্রশ্ন করার সাহস করেছ?
মাওবাদী।
... বাঁকা হাসি দেখে ঠিকই চিনে যাই
মাওবাদী, তুমি মাওবাদী।’
শঙ্খ ঘোষের কবিতা অনুষ্টুপ-এ (সম্পা: অনিল আচার্য)। হাজার পাতায় বহু প্রবন্ধ, গুরুত্বপূর্ণ ক্রোড়পত্রাদি। কেতকী কুশারী ডাইসন লিখেছেন ভারতের বাইরে রবীন্দ্র চর্চা নিয়ে। ভাষাতত্ত্বের নিরিখে নির্মলাংশু মুখোপাধ্যায় লিখেছেন রবীন্দ্রগান ও তাতে ধ্বনির ব্যবহার নিয়ে। রবীন্দ্রচিত্রকলা নিয়ে সুশোভন অধিকারীর রচনার বিস্তারে রয়েছেন অবন ও গগন। অপর ক্রোড়পত্রে রামন শিবকুমার কে জি সুব্রহ্মণ্যনকে নিয়ে লিখেছেন: ম্যুরাল শিল্পী হিসেবে ‘কালের বিচারে ও মানসিকতায় তিনি আধুনিক শিল্পী।’ মোহিতলালকে লেখা একগুচ্ছ চিঠি মনসিজ মজুমদার ও মলয় রক্ষিতের সম্পাদনায়। ‘ইয়ং বেঙ্গল’ থেকে ‘কমিউনিস্ট বেঙ্গল’ বাঙালির সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ঐতিহ্যের বিবর্তন নিয়ে সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধের সঙ্গে প্রবাল দাশগুপ্তের প্রবন্ধ ‘এবং ইংরেজি’। পলাশ বরন পাল রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য মোহিত রায় শাশ্বতী ঘোষের প্রবন্ধ। সিরিজ সাহিত্য নিয়ে অদ্রীশ বিশ্বাস, নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের রচনা। ক্ষুধা অনাহার দারিদ্র নিয়ে বিনায়ক সেন তাঁর নিবন্ধে লিখছেন ‘চারপাশে প্রচুর শস্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যাপক হারে অপুষ্টি দেখা যাচ্ছে, তার জন্য প্রধানত দায়ী গত শতাব্দীর তথাকথিত সবুজ বিপ্লব...।’ মৈত্রীশ ঘটকের অর্থনীতি বিষয়ক রচনা। অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর প্রবন্ধের সূত্রে ঘুষ, ন্যায়-নীতি নিয়ে অমিতাভ গুপ্তের যুক্তিবাদী নিবন্ধ। সুন্দরবন নিয়ে অনিতা অগ্নিহোত্রী তাঁর অন্তর্ভেদী সমীক্ষায় জানাচ্ছেন ‘তরুণ ছেলেটির কৃশ মুখ আর পাথরপ্রতিমার ভাঙাচোরা পথ-ঘাট, উদ্বেল নদী, বিদ্যুৎহীন অন্ধকার মিলেমিশে এক হয়ে যায়।’ স্বপ্না দেবের আত্মকথা ‘আমার শেকড় বাকড়’। এবং অবশ্যপাঠ্য আশিস নন্দীর বিশেষ নিবন্ধ ‘পরিণত গণতন্ত্র, নাবালক নাগরিক’। তবে মুদ্রণের মান, বিশেষত ছবির, নিতান্ত ব্যথিত করে।
স্যাস নাট্যপত্রে (সম্পা: সত্য ভাদুড়ি) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সার্ধশতজন্মবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য অমিত মৈত্রের ‘দ্বিজেন্দ্র-নাটকের মঞ্চায়ন ও কিছু বিতর্ক’-এ। অনুবাদে শেক্সপিয়র সম্পর্কে পিটার ব্রুক-এর দু’টি মূল্যবান ভাষণ। মৌলিক নাটক, নাটক নিয়ে নিবন্ধ ও আলোচনা। সঙ্গে নাটককার, নির্দেশক, অভিনেতাদের জরুরি একটি বিষয় নিয়ে কথোপকথন: ‘বাংলা থিয়েটার যৌন বিষয়ে কি মৌন?’
পূর্ব পশ্চিম-এর বার্ষিক নাট্যপত্রে (সম্পা: সৌমিত্র মিত্র) মোহিত চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ। কাব্যনাট্য লিখেছেন সুবোধ সরকার। উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের ভাষান্তরে শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’। দ্বিজেন্দ্রলালকে নিয়ে মনোজ মিত্র সুধীর চক্রবর্তীর রচনা এবং ‘মাধব মালঞ্চী’র সূত্রে হেমাঙ্গ বিশ্বাসকে নিয়ে বিভাস চক্রবর্তীর। |
|
|
|
|
|