|
|
|
|
|
তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির
দুর্গা এ বার সর্বজনীন
আনন্দ মণ্ডল • তমলুক |
|
প্রায় ৫০ বছর পর ফের শুরু হল তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। তবে পারিবারিক নয়, এ বার সর্বজনীন রূপে। রাজবাড়ির গুটিকয়েক জ্ঞাতি ও আশপাশের কিছু পরিবার হাতে-হাত মিলিয়ে আয়োজন করছে পুজোর। তমলুক রাজবাড়ি সংলগ্ন রাজ ময়দানে এই পূজার মণ্ডপ করা হয়েছে রাজবাড়ির আদলেই। সাবেক রূপের মৃন্ময়ী প্রতিমায় তুলে ধরা হয়েছে দেবীর রণংদেহী রূপ। আজ, ষষ্ঠীতে এই পূজার উদ্বোধন করবেন চিত্রাভিনেতা সোহম ও তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
তাম্রলিপ্ত রাজপরিবার বৈষ্ণবমতে বিশ্বাসী। কুলদেবতা রাধামাধব জীউর মন্দির রয়েছে রাজবাড়ির ভিতরে। তাই আগে দুর্গাপুজো হত রাজবাড়ির বাইরে। রাজপরিবারের সেই পূজা বন্ধ হয়ে যায় ব্রিটিশ আমলে। তাম্রলিপ্ত রাজপরিবারের অন্যতম কর্তা সুরেন্দ্রনারায়ণ রায় ও তাঁর পুত্র ধীরেন্দ্রনারায়ণ রায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভাবে যোগ দেওয়ায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। সুরেন্দ্রনারায়ণ দমদম সেন্ট্রাল জেলে ও ধীরেন্দ্রনারায়ণ মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন বেশ কিছু সময়। তখনই রাজপরিবারের কর্তাদের অনুপস্থিতি ও আর্থিক সঙ্কটের জেরে দীর্ঘ দিনের পারিবারিক দুর্গাপূজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে দেবী বর্গভীমার মন্দিরে পূজা দেওয়ার রীতি চলে আসছে বংশ পরম্পরায়। প্রথা মেনে প্রতি বছর মহাষষ্ঠীর দিনে বর্গভীমা মন্দিরে পূজার উপাচার নিয়ে যান রাজবাড়ির প্রতিনিধিরা। দেবী বর্গভীমা দুর্গা রূপে পূজিতা হওয়ার পর শুরু হয় শহরের অন্য মণ্ডপের দুর্গাপূজা। এ বার রাজবাড়ির উত্তরসূরী ৭টি পরিবার ও স্থানীয় আরও প্রায় ৭৫টি পরিবার মিলে আলাদা করে পূজার আয়োজন করেছে। নাম ‘তমলুক রাজাবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব’। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা বাজেটের এই পূজা ঘিরে শহরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে যথেষ্ট। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা, রাজপরিবারের উত্তরসূরী তথা তমলুকের উপপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, “পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আগ্রহ দেখেই ফের পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ইচ্ছে থাকলেও একক ভাবে পুজোর আয়োজনের আর্থিক সামর্থ্য আমাদের নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে আসায় আমরা পুজোটা করতে পারছি। তবে, রীতি মেনে রাজবাড়ির পুরোহিত নারায়ণ মিশ্র এই পুজো করবেন।” পূজাকমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ কয়াল বলেন, “বহু দিন আগে রাজবাড়ির দুর্গাপুজা হত বলে শুনেছি। বন্ধ সেই পূজা ফের চালুর জন্য এলাকার বাসিন্দারা জোট বেধেছি।” পূজা উপলক্ষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় লোকসংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। |
|
|
|
|
|