খুশিতে বাঁচুন |
|
চাঙ্গা থাকুন পুজোয়
মজা করুন চুটিয়ে। ধকল কাটাতে ব্যায়াম তো আছেই। জানাচ্ছেন চিন্ময় রায় |
|
আজ ষষ্ঠী। নিয়ম ভাঙার সময় শুরু হয়ে গেল। উৎসবের এই মরসুমে হইহুল্লোড়, রাত জেগে ঠাকুর দেখা, ফাস্ট ফুড সবই চলবে। কিন্তু পাল্টে যাওয়া রুটিনে শরীরে ধকল পড়ে। তা কাটাতে নীচের ব্যায়ামগুলি করতে পারেন।
ব্যায়ামের সময় কমিয়ে ৩০-৩৫ মিনিটে নিয়ে আসুন। সপ্তাহে এক দিন অন্তর করে, তিন দিন শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম। দু’দিন ১০ মিনিটের জন্য কোর স্টেবিলিটির ব্যায়াম। তার পরে ১০ মিনিট মাঝারি তীব্রতার বিরতিমূলক কার্ডিও। এর পর ১০ মিনিটের ‘স্ট্রেস’ কমানোর স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ। বাকি একটি দিন কয়েকটা স্ট্রেচিং। রবিবার পুরো বিশ্রাম।
শক্তি বাড়ানোর জন্য নীচের ব্যায়ামগুলি করুন। বিনা বিশ্রামে টানা কয়েকটি ব্যায়াম মানে একটি ‘সার্কিট’। এ ভাবে তিনটি সার্কিট করুন। প্রতি সার্কিটের পরে ২ মিনিট বিশ্রাম।
কেন করবেন শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম? প্রচুর হাঁটাহাঁটি, নাচানাচি করবেন। পায়ের এবং কোমরের পেশিগুলিকে তা সহ্য করতে হবে। শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম সেই সহ্যক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পেশির টোন বজায় রাখে। টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বাড়িয়ে ‘লুক’ বদলে দেবে। নীচের চারটি ব্যায়াম করতে পারেন। |
|
ডাম্বেল স্কোয়াট অ্যান্ড রো |
|
ডাম্বেল স্কোয়াট অ্যান্ড রো: দু’হাতে মাঝারি ওজনের দু’টি ডাম্বেল নিয়ে ৯০ ডিগ্রি স্কোয়াট করুন। ওঠার সময় ডাম্বেল দু’টি নীচ থেকে বগলের পাশাপাশি টেনে পিছনের দিকে আনাই হল ‘রোইং’। মোট ১০ বার করুন। এতে হাঁটু আর পিঠের পেশিগুলির জোর বাড়বে। এক টানা আড্ডার পরে পিঠের পসচারের ত্রুটি শোধরাবে।
|
|
ডাম্বেল ওয়ান লেগ ডেড লিফট |
|
ডাম্বেল ওয়ান লেগ ডেড লিফট: মাঝারি ওজনের একটি ডাম্বেল নিয়ে ছবির মতো এক পায়ে ভর দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকুন। হ্যামস্ট্রিং-এর নমনীয়তা কম হলে অসুবিধা হবে। সাধ্যমতো চেষ্টা করুন। ডাম্বেলটিকে মাটিতে ছোঁয়াতে পারলে ভাল। অন্য পাটি পিছন দিকে সোজা হয়ে থাকবে। এই ব্যায়াম হ্যামস্ট্রিং আর গ্লুটিয়াস পেশির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অনেক হাঁটার পরেও কোমর ধরে যাবে না। দু’পায়েই ১০ বার করে করুন।
|
|
ডাম্বেল লাঞ্জ অ্যান্ড কার্ল |
ডাম্বেল লাঞ্জ অ্যান্ড কার্ল: মাঝারি ওজনের ডাম্বেল দু’টি নিয়ে এক পা বাড়িয়ে হাঁটু ভেঙে লাঞ্জ করুন। পিঠ টানটান রাখুন। ঠিক লাঞ্জ করার মুহূর্তে দু’হাত ভাঁজ করে কাঁধের কাছে এনে বাইসেপ পেশির জন্য কার্ল করুন। এতে বাইসেপ দেখতে ভাল হবে। একই সঙ্গে হাঁটুর সামনের আর পিছনের পেশির জোর বাড়বে। দু’পায়ে ৮-১০ বার করে করুন।
বল নিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে ৪৫ ডিগ্রি উইন্ডশিল্ড: মাটিতে শুয়ে পড়ুন। একটি হালকা বল দুই হাঁটুর মাঝে চেপে ধরুন। হাঁটু কিন্তু ভাঁজ করা থাকবে। এ বার গাড়ির ওয়াইপার যেমন করে কাচ পরিষ্কার করে, সে ভাবে কোমর দু’পাশে ঘোরান। ৪৫ ডিগ্রি মানে হল, মাটি স্পর্শ করবেন না। অর্ধেক গিয়ে কোমর অন্য দিকে ঘোরান। এতে অবলিক পেশি শক্তিশালী হবে। ‘পসচারাল’ পেশিও জোরালো হবে। দু’দিকেই ১০ বার করে করুন।
|
|
বল নিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে ৪৫ ডিগ্রি উইন্ডশিল্ড |
মিনিট দশেকের জন্য কোর স্টেবিলিটির ব্যায়াম করুন। এতে কোমরের গভীরের পেশিগুলি সবল হবে। লম্বা হাঁটা বা নাচানাচিতে অসুবিধা হবে না। কোর এক্সারসাইজের মধ্যে প্ল্যাঙ্ক, সাইড ব্রিজ, পিঠের উপর ব্রিজ, জ্যাকনাইফ ইত্যাদি কয়েকটি বেছে নিন। তার পরে মিনিট দশের মতো মাঝারি তীব্রতার বিরতিমূলক কার্ডিও। এ ধরনের কার্ডিও করলে সেরোটনিন নামের নিউরোট্রান্সমিটারের ক্ষরণ বাড়ে। এতে ঝিমুনি ভাব কাটে। মন চাঙ্গা হয়।
|
নিজেকে আরও একটু ভাল দেখাতে চাইলে নীচের দু’টি ড্রিল করুন।
মার্কার দিয়ে দশ মিটারের একটা দূরত্ব তৈরি করুন। যেখান থেকে শুরু করবেন তার উল্টো দিকে একই সরলরেখার দু’টি রিং রাখুন। এর পোশাকি নাম হুলা হুপ। এক প্রান্ত থেকে জগিং করে একটি রিং-এ ঢুকে হাই-নি স্পট রান করুন প্রতি পায়ে চার বার করে। তার পরে জগিং করেই অন্য রিং-এ ঢুকে একই জিনিস করুন। এ বার জগিং করে শুরুর জায়গায় ফিরুন। প্রক্রিয়াটি ৪৫ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট চলুক। ১-২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে চার বার রিপিট করুন। খেয়াল রাখবেন, হৃদ্স্পন্দন যেন খুব বেশি বেড়ে না যায়। |
|
জাম্পিং জ্যাক অ্যান্ড স্টিক ট্রান্সফার: এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হালকা চালে জাম্পিং জ্যাক করুন। স্বাদ বদলের জন্য হাতে হালকা একটা লাঠি নিন। এক বার লাফাবেন আর লাঠিটা অন্য হাতে নেবেন। লাফানোর সঙ্গে সঙ্গে হাত বদলের একটা কোঅর্ডিনেশন তৈরি হবে। ৩০-৪৫ সেকেন্ড করুন। ১-২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে চার বার রিপিট করুন।
এ সময়ে ঘুম কম হয়। সেই ঘাটতি মেটাতে কয়েকটি রেস্টিং পোজের সাহায্য নিন। |
|
জাম্পিং জ্যাক অ্যান্ড স্টিক ট্রান্সফার |
সাপোর্টেড লেগ অন ওয়াল: পিঠের তলায় বুকের অংশের মেরুদণ্ডের নীচে একটা বালিশ রেখে দু’টি পা দেওয়ালে তুলে দিন। শরীরকে একদম শিথিল করে ৩-৪ মিনিট এ ভাবে থাকুন। এতে পেট এবং অন্যান্য অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঘটে। অবসাদ কাটে। কোমরের চাপ কাটে।
সুপ্ত বজ্রাসনে রিক্লাইন: বজ্রাসনে বসে ধীরে ধীরে পিঠের নীচে থাকা বালিশে শুয়ে পড়ুন। ৩-৪ মিনিট এ ভাবে থাকুন। শরীর বালিশে সাপোর্টে থাকায় ক্লান্তি কাটবে। হজম ভাল হবে। পেট-বুকের পেশি শিথিল হয়ে আরাম পাবেন।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|