শুধু জামা-জুতো নয়, পুজোয় এখন নতুন চাওয়া ক্যামেরাও।
ধর্মতলায় বহু পুরনো দোকানে চাহিদা, ‘‘স্লিক, হ্যান্ডি, ইউজার-ফ্রেন্ডলি, এসএলআর লুক। আট-ন’হাজার টাকার মধ্যে হলে ভাল। আর পুজোয় যেন ‘বিট্রে’ না করে।” আর এক নামী দোকান। ক্রেতা চাইলেন পরিচিত ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট মডেল। জানতে চাইলেন, তাতে ১৬ মেগাপিক্সেল রয়েছে কি না। আরও প্রশ্ন, “রাতে পুজোর ছবি তুলব। ওই মেগাপিক্সেল না হলে কি রেজোলিউশন ভাল হবে?”
সকলেরই চাই ‘এম অ্যান্ড শু্যট’ ক্যামেরা। গড় বয়স ১৮-২৫। অধিকাংশই কলেজপড়ুয়া। কিংবা বাবার ব্যবসায় সাহায্য করছেন। পুজোর মুখে ‘গ্যাজেটপাগল’ জেন-এক্সের ডিজিটাল ক্যামেরার চাহিদা নতুন জামার থেকে ঢের বেশি। ডাল লেক থেকে কেরলের ব্যাকওয়াটার স্মৃতি হাতড়াতে হবে না। ক্যামেরার মেমরি কার্ড আছে তো!
হিমশিম দোকানিরা জানাচ্ছেন, পুজোয় গত বছর থেকেই ডিজিটাল ক্যামেরার চাহিদা বাড়ছিল। এ বছর একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। ধর্মতলার এক দোকানমালিক জয়ন্ত শেঠ জানালেন, নতুন প্রজন্মের চাহিদা ছোট ডিজিটাল ক্যামেরায় স্টিল, ভিডিও, ঝকঝকে ছবি, ব্যাটারির ভাল ব্যাক-আপ। দাম পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা। জয়ন্তবাবুর কথায়, “বিভিন্ন সংস্থা খুব কম দামে ক্যামেরা তৈরি করছে। |
বিভিন্ন মডেলের নিত্যনতুন ‘ফিচার’। মিলছে হাজার চারেক টাকাতেও।” জওহরলাল নেহরু রোডের এক দোকানি অর্জুন বিশ্বাস জানালেন, এমন ক্যামেরা পুজোর সময়ে দিনে গড়ে ৪০-৫০টা বিক্রি হচ্ছে।
স্নাতকোত্তর ছাত্রী মৌমিতা বিশ্বাস বলছেন, “ক্যামেরা সঙ্গে থাকলে পুজোর মুহূর্তগুলোই বদলে যায়। শেয়ার করা যায় বন্ধুদের সঙ্গে।” কলেজপড়ুয়া বিপ্লব মিত্রের বক্তব্য, “চিঁড়েচ্যাপ্টা ভিড়ে ঠাকুর দেখতে ডিজিটাল ক্যামেরার জুড়ি নেই। কী ছবি উঠল, ফ্রেম থেকে কী বাদ গেল, তা-ও দেখে নেওয়া যাচ্ছে।” আর এক কলেজপড়ুয়া অরুণাভ কাশ্যপ মনে করেন, পাকাপোক্ত ফোটোগ্রাফার হয়ে ওঠার সুযোগ থাকলেও সময় কম। নিমেষে ছবি তুলে দ্রুত সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে দেওয়ার যুগে ৬০-৭০ হাজার টাকায় ক্যামেরা কেনার সামর্থ্য অনেকেরই নেই। জন্মদিন, পার্টি, পিকনিক বা পুজো সবেতেই এখন ছোট ক্যামেরা থাকে অনেকের হাতে। ছবিও নিমেষে পৌঁছে যায় ফেসবুকের ওয়ালে বা বন্ধুদের ইনবক্সে। মোবাইলেও হয় আদানপ্রদান। ছবির প্রিন্ট হয় না। প্রযুক্তির দৌলতে দীর্ঘদিন তাজা থেকে যায় জীবনের সেরা সব মুহূর্ত। |