|
|
|
|
একুশের নেশায় কাদামাটি |
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • রামপুরহাট |
ছেলেটার বাড়ি কুমারটুলিতে নয়। তবু সবাই যখন ঠাকুর দেখতে যেত ছোট্ট ছেলেটি তখন ভালোবাসত কাদামাটি নিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে। ছোটবেলা থেকেই কাদামাটি কথা বলত রামপুরহাটের কামারপট্টির ছেলেটির হাতে। আস্তে আস্তে ছেলেটির বয়স বেড়েছে। সেদিনের কিশোর অঙ্কন শর্মা আজ একুশ বছরের যুবক। কাদামাটি নিয়ে খেলা করাটাই এখন তাঁর পেশা। ছোটবেলাতেই মা-বাবাকে হারানো অঙ্কন বড় হয়েছে দাদা-বৌদির সংসারে। নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ ছিলই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সৃষ্টির ইচ্ছা।
শৈশব থেকেই মাটি নিয়ে খেলা করতে করতে সে তৈরি করত সরস্বতী, গণেশ। প্রতিমা তৈরির কাজে সে প্রথম তালিম পেয়েছে রামপুরহাটের মৃৎশিল্পী দুলাল দাসের কাছে। একটু বড় হওয়ার পর সরস্বতী কিংবা কালী প্রতিমা তৈরি করতে শুরু করে অঙ্কন। প্রথম প্রথম ভয় ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে কাটতে থাকে সেই ভয়। পরে অঙ্কন রঙের কাজ শিখে নেন মৃৎশিল্পী প্রদীপ শর্মার কাছে।
অঙ্কন সৃষ্টি করেন আপন খেয়ালে। মাটির দুর্গা তাঁর হাতে হয়ে ওঠেন অপরূপা। গত বছর অঙ্কনের তৈরি করা দুর্গাপ্রতিমা প্রশংসা পেয়েছে সাধারণ মানুষের। নিজের বাড়ির ছোট পরিসরে কাজ করতে সমস্যা হয়। তাই বছরের অন্যান্য সময় বাড়ির পাশের কামারপট্টি মোড়ে সর্বজনীন দুর্গামণ্ডপের পাকাদালানেই প্রতিমা তৈরিতে মগ্ন থাকেন এই যুবক। তাঁর আক্ষেপ, “যদি নিজের মতো করে কাজ করার বড় জায়গা পাওয়া যেত!”
বাড়ির কেউই কখনও প্রতিমা তৈরি করেননি। আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণে লেখাপড়াও করতে পারেননি খুব বেশি। কিন্তু তাতে কী? আরও এগিয়ে যেতে চান অঙ্কন। শিল্পীর তো কোন পূর্ব পরিচয় লাগে না। |
|
|
|
|
|