নেশার বিরুদ্ধে লড়াই বোলপুরে |
মাত্র কয়েক দিন আগেরই কথা। মাদকের নেশায় আশক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছিল এলাকারই দুই তরতাজা যুবক। ঘটনার জেরে এলাকার ঘা এখনও টাটকা। এমন সর্বনাশা নেশার হাত থেকে সমাজকে বাঁচাতে পুজোকে আশ্রয় করেছে বোলপুরের শুড়িপাড়া এলাকার অগ্রগামী সঙ্ঘ। কী ভাবে? সঙ্ঘের এ বারের থিম ‘নেশা সর্বনাশা’। গত ৪৭ বছর ধরে সাবেক ঘরানার প্রতিমা দিয়ে পুজো হলেও এই প্রথম থিম পুজো করছে অগ্রগামী সঙ্ঘ। অগ্রগামী সঙ্ঘের পক্ষে চন্দন মণ্ডল বলেন, “সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই বার্তা দিতে চেয়েছি আমরা।” একই মত প্রকাশ করলেন এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত রাজকুমার দাস, বিশ্বজিৎ পাল ও সৈকত বাগদিরাও। মণ্ডপের রূপকার বিশ্বভারতীর কলাভবনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সঞ্জীব দাস। আদতে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরের বাসিন্দা এই তরুণ শিল্পী বলেন, “গ্রামবাংলার প্রচলিত চাটাইয়ের উপর চিত্রকলা করা হয়েছে। তাতে তুলে ধরা হয়েছে নেশাগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগের জীবনযাত্রা। তারই বিপরীতে আছে নেশা থেকে মুক্তির পর নিজের এবং পরিবারের সুখী চিত্র।” বোলপুরের সাংসদ রামচন্দ্র ডোম থেকে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহও স্বাগত জানিয়েছেন অগ্রগামী সঙ্ঘের এই উদ্যোগকে।
|
জাতীয় সড়কের আম্বা মোড় থেকে ২-৩ কিলোমিটার পথ গেলেই মহুলাগ্রাম। হাজার দু’য়েক যার চলতি নাম মৌল। সেখানেই প্রায় তিনশো বছর ধরে চারটি দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। সব ক’টিই পারিবারিক। যার মধ্যে দু’টি পুজোর আয়োজন করেন গ্রামের ঘোষাল পরিবার। মৌলগ্রামের প্রাচীনতম পুজো উত্তরপাড়ার ঘোষালবাড়ির চতুর্ভুজা দুর্গাপুজো। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অজয় ঘোষাল জানালেন, “সম্ভবত আদিবাসী কোনও দেবীর অনুকরণে এই চতুর্ভুজার পুজো শুরু হয়েছিল। পরে যে ভাবেই হোক এই চতুর্ভুজা পুজোটি তখন থেকেই ঘোষালদের পারিবারিক পুজোতে পরিণত হয়। একই সঙ্গে পূর্ব পুরুষের শ্বশুরবাড়ি সূত্রে পাওয়া দক্ষিণপাড়ার দশভুজা পুজোটিও ঘোষালবাড়ির পুজো হিসাবে বেশি পরিচিত।” পরিবারের আর এক সদস্য রাধাচরণ ঘোষাল বলেন, “মজার বিষয় হল, চতুর্ভুজা পুজোর নৈবেদ্য ঘোষালদের নামে হলেও দশভুজার নৈবেদ্য কিন্তু ঘোষালদের নামে হয় না। হয় গ্রামের রায় পরিবারের নামে।” এলাকায় রায়বাড়ি ও সরকার বাড়ির পুজোও শতাব্দী প্রাচীন বলেই খ্যাত। গ্রামের জনসংখ্যা বাড়লেও কোনও ক্লাব বা বারোয়ারি পুজোর সৃষ্টি হয়নি। সেদিক থেকে পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই গ্রাম। |