|
|
|
|
|
হিংসা কেড়েছে বন্ধুর প্রাণ,
এ বার থিম তাই অহিংসা
সুশান্ত বণিক • আসানসোল |
|
মাত্র চার মাস আগে দীর্ঘ দিনের সহকর্মীকে প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হতে দেখেছিলেন। রক্তাক্ত নিথর দেহটা দেখে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন নেতাজি স্পোর্টিং সর্বজনীন পুজো কমিটির সদস্যেরা। ভেবেছিলেন, কেন এই হিংসা। কী ভাবে থামানো যাবে এই হানাহানি। সেই ভাবনা থেকেই এ বার তাঁদের পুজোর থিম সমাজের অশুভশক্তিকে পরাস্ত করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা। কর্মকর্তারা মনে করেন, শান্তি না থাকলে, হিংসা, হানাহানি মুছে দিতে না পারলে আনন্দোৎসবের পূর্ণতা আসে না। পুজো কমিটির সভাপতি সুভাষ রায় জানান, মাস চারেক আগে তাঁদের পুজো কমিটির অন্যতম কর্ণধার অর্পণ মুখোপাধ্যায় প্রাতঃভ্রমণে করার সময়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন। অনিশ্চিয়তার মুখে যায় তাঁদের পুজোও। কিন্তু তাঁরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। শপথ নিয়েছেন, হিংসা, হানাহানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। এই কাজ শুরু করেছেন পুজো মণ্ডপের থিম দিয়েই। একাধিক শিল্পীর আঁকা দৃশ্যপটে এই থিম প্রকাশ পেয়েছে। তাঁরা দেখাচ্ছেন, শুধু পৌরাণিক যুগেই নয়, দেবী দুর্গা যুগে যুগে মর্তে আসছেন অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠার জন্য।
বাংলাদেশের বুদ্ধ মন্দিরকে এ বার শিল্পশহরে পৌঁছে গিয়েছে বার্নপুরের এবি টাইপ ইস্কো আবাসন সর্বজনীন পুজো কমিটির দৌলতে। বাংলাদেশের বান্দারবান শহরে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে। বুদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য নির্মিত মন্দিরটির নাম বান্দারবান স্বর্ণ মন্দির। দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতির আদলে তৈরি এই মন্দিরের উচ্চতা আসলে ৪ হাজার ৬৩২ ফুট। কর্মকর্তারা জানালেন, এতো উঁচু মণ্ডপ বানানো সম্ভব নয়। তাই মণ্ডপের উচ্চতা ৭৫ ফুটের নয়। পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা চন্দন মিশ্র জানান, মণ্ডপের কাঠামো তৈরি হচ্ছে প্লাইউড ও থার্মোকল দিয়ে। এর উপরে মাটির প্রলেপ লাগিয়ে সোনালি রঙ করা হয়েছে। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি হয়েছে প্রতিমা। মানানসই আলোকসজ্জাও থাকছে। পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “এ বার তাঁদের বাজেট গত বারের থেকে কিছুটা বেড়েছে। তবে মণ্ডপের অভিনবত্ব দর্শনার্থীদের মন টানবেই।” এক টুকরো লাল মাটির বিষ্ণুপুর দেখা যাবে ইস্পাত শহর বার্নপুরে। রামবাঁধ সর্বজনীন পুজো কমিটি এ বার মণ্ডপ তৈরি করেছে বিষ্ণুপুরের জোড়বাংলা মন্দিরের আদলে। তাদের দাবি, চোখ ধাঁধানো মণ্ডপ দেখতে দেখতে ক্লান্ত দর্শনার্থীরা তাঁদের মণ্ডপে এসে স্নিগ্ধ পরিবেশ পাবেন। পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তীর দাবি, “টেরাকোটা সংস্কৃতির জোড়বাংলা মন্দিরটির হুবহু নকল দেখতে পাবেন মানুষ।” তিনি জানান, প্লাইউড ও থার্মোকলের কাঠামোয় মাটির প্রলেপ লাগিয়ে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। প্রতিমাতেও অভিনবত্বের ছোঁয়া। পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্যের আদলে দেবী দুর্গার আবির্ভাব এই মণ্ডপে। সঙ্গে প্রতি বারের মতোই থাকবে মানানসই আলোকসজ্জা। |
|
|
|
|
|