এ দেশে বাংলাদেশ থেকে জাল নোট পাচারের জন্য গরু পাচারকারীদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র দাবি। অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় মুদ্রায় গরুর দাম জাল নোটেই মেটানো হচ্ছে বলে বিএসএফ জানতে পেরেছে। বাহিনীর এডিজি বংশীধর শর্মা রবিবার বলেন, “জাল নোট পাচার প্রতিরোধে টাস্ক ফোর্স গঠনের পরিকল্পনা হয়েছে।”
গত ২৫ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিএসএফ এবং বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’-এর ডিরেক্টর জেনারেল স্তরে বৈঠক চলে। বংশীধর জানান, সেখানে জাল নোট পাচার নিয়েও বিস্তারিত কথাবার্তা হয়েছে। বিএসএফের খবর: এত দিন মূলত রাতের অন্ধকারে সীমান্তের ও পার থেকে জাল নোটের তাড়া ফেলে দেওয়া হতো এ দিকের ভূখণ্ডে। চক্রের লোক তা তুলে নিয়ে বাজারে ছড়াত। ইদানীং অন্য কায়দাও ধরেছে চক্রীরা। তার অন্যতম হল গরু পাচারকারীদের কাজে লাগানো। কী রকম?
বিএসএফ-সূত্রের খবর: যে গরুর দাম এক হাজার টাকা হওয়ার কথা, জাল নোটে তার দর দেওয়া হচ্ছে দেড় হাজার। পুরোটাই জাল নোটে মেটানো হচ্ছে। এ ভাবে গরু বিক্রেতারা নিজেদের অজ্ঞাতেই জাল নোট চক্রে সামিল হয়ে পড়ছেন।
জাল নোট চালানের আরও কিছু সুলুক-সন্ধান পেয়েছে বিএসএফ। বংশীধর জানান, সীমান্ত লাগোয়া কুড়ি-বাইশটা গ্রামের কিছুটা ভারতে, কিছুটা বাংলাদেশে। সেখানকার বাসিন্দাদের হামেশাই চাষবাস বা রুজির তাগিদে সীমান্ত পেরোতে হয়। অভিযোগ, তাঁদের একাংশের হাত দিয়েও নিয়মিত জাল নোট আসছে। “সম্প্রতি বাংলাদেশের জমিতে চাষ সেরে সেচের পাইপ নিয়ে দেশে ফিরছিলেন এক দল ভারতীয় কৃষক। জওয়ানদের সন্দেহ হয়। তল্লাশিতে ধরা পড়ে, পাইপের ভিতরে থরে থরে জাল নোট!” বলেন বংশীধর। বিএসএফের হিসেব মোতাবেক, সীমান্তে ২০১১-য় জাল নোট পাচারের অভিযোগে ৫৭ জন ধরা পড়েছিল। তাদের ৪৪ জনই ভারতীয়। এ বছরের অগস্ট পর্যন্ত ধরা পড়েছে ২৮ ভারতীয়-সহ ৪৬ জন। গত বছরে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ৪৩ লক্ষ ৮১ হাজার টাকার জাল নোট। এ বছরে অগস্ট পর্যন্ত অঙ্কটা ১৫ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। বংশীধর বলেন, “জাল নোট চালানের মস্ত ঘাঁটি হল মালদহ। সেখানকার কালিয়াচককে কেন্দ্র করে বড় চক্র কাজ করছে।” |