অশান্তির আশঙ্কা বিরোধীদের
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কমিশন-রাজ্য বিরোধ মেটেনি
ঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে রাজ্য সরকার। কমিশন ও মহাকরণ সূত্রের খবর, ভোটের দিন ঠিক করতে মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েতসচিব সৌরভ দাস। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনে করছে, এলাকা পুনর্বিন্যাস-সহ বকেয়া কাজ শেষ করে এপ্রিলের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন করা যাবে না। চলতি পঞ্চায়েতের মেয়াদও শেষ হচ্ছে আগামী বছর মে মাসে। তার অনেক আগে থেকে নির্বাচন করে পরিস্থিতি জটিল করারও পক্ষপাতী নয় কমিশন। কিন্তু রাজ্য চায়, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন করতে। তিন দফায় নির্বাচন হলে ২৪ ও ২৮ জানুয়ারি এবং ৩ ফেব্রুয়ারি ভোট হতে পারে। কমিশনকে চিঠি দিয়ে সেই প্রস্তাব জানিয়ে দেওয়াও হয়েছে। রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ২৫ ফেব্রুয়ারি। সরকারের যুক্তি, ৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন শেষ হলে পরীক্ষায় অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। জানুয়ারি না এপ্রিল তাই নিয়ে এ দিনের বৈঠকেও টানাপোড়েন অব্যাহত ছিল। মহাকরণ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন তাদের মতামত জানাতে পারে।
নির্বাচন যবেই হোক, তা সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়েই এ দিন প্রশ্ন উঠে গেল রাজ্য বিধানসভায়। পঞ্চায়েত আইনের দু’টি সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনায় পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিরোধীদের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের দলের কিছু দুষ্টু ছেলে আপনাদের মারবে। আর আপনারা গিয়ে টিভিতে বসে পড়বেন।” পঞ্চায়েতমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জের টেনে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “রাজ্যে এখন আইনশৃঙ্খলার যা পরিস্থিতি তাতে আমরা মনোনয়ন জমা দিতে পারব কি না সন্দেহ। তাই বলছি, যাঁরা তা পারবেন না, তাঁরা যেন ‘অনলাইন’ মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আপনি সেই ব্যবস্থা করুন।” কংগ্রেসের মইনুল হক বলেন, “আগেও ৩০-৩৫ হাজার আসনে কেউ মনোনয়ন জমা দিতে পারতেন না। এ বারও যাতে সেই পরিস্থিতি না হয় তার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিক।”
পঞ্চায়েতে আসন সংরক্ষণের পুনর্বিন্যাস করতে রাজ্য সরকার এ দিন যে নতুন বিল পাশ করাল, তাতে সাংবিধানিক জটিলতা হতে পারে বলে অভিযোগ সিপিএমের। এই বিলে তফসিলি জাতি-উপজাতি, মহিলা ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সর্বোচ্চ ৫০% পর্যন্ত আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই বিলে সম্মতি না-দেওয়ার জন্য রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে দরবার করবে সিপিএম। এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, পঞ্চায়েতে সংরক্ষণের বিষয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার যে বিল পাশ করেছিল, রাজ্যপালের সই হয়ে বিজ্ঞপ্তি জারির পরে তা আইন হিসাবে কার্যকর রয়েছে। সেই বিলে বলা হয়েছিল সংরক্ষণ ৫০%-এর কম হবে না। এ বারের বিলে বলা হয়েছে, সংরক্ষণ ৫০%-এর বেশি হবে না। আগের আইন বলবৎ থাকা অবস্থাতেই রাজ্য সরকার কী ভাবে এই নতুন বিল এনে ফেলল, প্রশ্ন তুলেছেন সূর্যবাবু।
পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অবশ্য অভিযোগ, বিলের বিরোধিতা করে বিরোধীরা আসলে পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছেন। কেন নতুন বিল তার ব্যাখ্যা দিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, আগের বিলে রাজ্যপাল সই করেননি। তাঁর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সংরক্ষণ কখনওই ৫০%-এর বেশি হতে পারে না বলেই এই বিল আনতে হয়েছে। তামিলনাড়ু হাইকোর্টের একটি রায়ের প্রসঙ্গও তিনি উল্লেখ করেছেন। পক্ষান্তরে সূর্যবাবুর বক্তব্য, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি আমাদের কাছেও আছে। জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংরক্ষণের সুযোগ সেখানে বৈধ। তার পরেও এই নিয়ে কিছু করতে গেলে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা দরকার ছিল, আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল।
তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে ‘পঙ্গু’ করে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করে তার প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার মেয়ো রোডে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না অবস্থান রয়েছে বামফ্রন্টের। তার পরে সূর্যবাবুর নেতৃত্বে বাম পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা রাজ্যপালের কাছে যাবেন অভিযোগ জানাতে। সেই অবসরেই সংরক্ষণ বিলের প্রসঙ্গ তোলা হবে বলে বাম সূত্রের খবর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.