পঞ্চাশ মিনিটের পথ পার হতে সময় লাগে দেড় থেকে পৌনে দু’ঘন্টা। তাই অফিস-আদালত বা স্কুল কলেজের নিত্যযাত্রীরা বাধ্য হয়ে সময়ের অনেকটা আগেই বাস ধরছেন। পাছে অফিসের হাজিরা খাতায় লাল কালির দাগ পড়ে। ঠিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনও ক্লাসে পৌঁছতে কলেজ পড়ুয়ারা একটা-দু’টো বাস আগেই যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ, কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ ভায়া গৌরাঙ্গ সেতু রুটের বাস চলে নিজের সময়মতো। এই রুটে কোথাও লেট ফাইনের ব্যবস্থা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজগুলিতে যাত্রী তোলার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকে বাসগুলো। পরের বাস পিছনে এলে তবেই যাত্রা শুরু হয় বাসের। এই রুটে এটাই রীতি হয়েছে গেছে। স্থানীয় বা দুরপাল্লার যে কোনও বাস নবদ্বীপ রেলগেট পার হলেই নিজের খেয়ালখুশি মতো চলতে থাকে। স্বভাবত চরম নাজেহাল হতে হয় যাত্রীদের। এই রুটের নিতযাত্রী সমিতির সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, “নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রুটে সময়ানুবর্তিতার কোনও ব্যাপারই নেই। ফলে কোন বাস কোন স্টপেজে কতক্ষণ দাঁড়াবে তার কোন ঠিক নেই। ভালুকা-বটতলা স্টপেজে বাস দাঁড়ালে কখন ছাড়বে কেউ তা জানে না।” সাম্প্রতিককালে সমস্যা এমন এমন চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছেছে যে এই রুটের বাস কর্মীদের সংগঠন শ্রীগোরাঙ্গ সেতু রুট কমিটির তরফে বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি আশিস সাহা বলেন, “২০০৫ সালে লেট ফাইনের ব্যবস্থা চালু হলেও এখন তার কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে বাসগুলি কোনও স্টপেজে যতক্ষণ ইচ্ছা দাঁড়ায়। এরফলে বাসে-বাসে রেষারেষি বাড়ছে। ঘটছে দুর্ঘটনা। যাত্রীদের সঙ্গে বাসকর্মীদের বচসাও বাধছে। অথচ বিষয়টি যাদের হাতে-সেই বাস মালিকেরা এ ব্যাপারে উদাসীন।”
এই সমস্যা প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা অসীম দত্ত বলেন, “সমস্যার বিষয়টি জানি। লেট ফাইন চালু করার বিষয়টিও আমাদের হাতে রয়েছে। লেট ফাইন থাকলে রেষারেষির ঘটনাও কমে। পুজোর আগেই সমস্যার সমাধানের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
জেলার আরটিও আরিফউদ্দিন খান বলেন, “সময়মতো বাস চালানোর জন্য লেট ফাইন চালু করার কাজ মালিক সমিতির। তবে যাতে এটি দ্রুত জেলা জুড়ে চালু হয় তা দেখবো।”
জেলা নিত্যযাত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার দে বলেন, “১৯৮৮ সালের এমভি অ্যাক্টের ৭২/২ (৪) ধারা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজগুলিতে সময়-সরণী টাঙানোর কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।” |