জমির ‘দখল’ নিয়ে সিপিএম প্রধানকে কোপাল তৃণমূল
ভৈরবচন্দ্রপুরে জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্ক ছিল। মঙ্গলবার বেতনা-গোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের গৌর বিশ্বাস ও তাঁর পরিবারের লোকজনের উপরে হামলা চালিয়ে সেই জমি জবরদখল করে দলের ঝাণ্ডা পুঁতে স্থায়ী দলীয় কার্যালয় তৈরি শুরু করেছে তৃণমূল। এমনই অভিযোগ সিপিএমের।
এ দিন সকালে প্রধানের উপরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা সশস্ত্র হামলা চালায়। তার বাড়ি লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। মারধর করা হয় প্রধানের ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাবা বেরতী বিশ্বাসকে। গুরুতর জখম হন মা সরস্বতীদেবীও। ওই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী লিপিকা বিশ্বাস ও ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র গৌরব বিশ্বাসও আহত হয়েছেন। তাদের ঠেকাতে গিয়ে কয়েক জন প্রতিবেশীও জখম হন বলে জানা গিয়েছে। আহত মোট ৫ জনকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রায় আধ ঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে আসে হাঁসখালি থানার পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে কোনও রকমে পালিয়ে হাঁসখালিতে দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নেন গৌরবাবু। তার হাতে-পায়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, “বাইরে থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে এসে ওরা সকালে আচমকা আমার বাড়িতে চড়াও হয়। প্রথমে বাড়ি লক্ষ করে ইঁট ছুড়তে থাকে। তার পর আমি প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যেতেই আমার উপর চড়াও হয়। ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপাতে যায়।” তিনি বলেন, “ওদের হাতে লাঠি-দা ছিল। বোমাও ছোড়ে। কিন্তু সেটা ফাটেনি। মারধর করা হয় আমার পরিবরের অন্যদেরকেও। ঠেকাতে গিয়ে কয়েক জন প্রতিবেশীও আহত হন।”
ভৈরবচন্দ্রপুরে সেই জমি। —নিজস্ব চিত্র।
প্রধানের বাড়ির যাতায়াতের পথ আটকে তৈরি করা হয়েছে ওই দলীয় কার্যালয়। ঘটনার কথা অবশ্য অস্বীকার করেছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, “ওই জমি আমাদের। আমাদের দল প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে কিনেছে। কিন্তু সিপিএমের প্রধান জোর করে সেই জমি দখল করে রেখেছিল।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানের বাড়ির সামনে নয় শতক জমির দখল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিতর্ক চলছে।
প্রধানের দাবি, ১৯৬৭ সাল থেকেই ওই জমি তাদের দখলে রয়েছে। তাই আইনত জমির মালিক তিনি। আবার তৃণমূলের দাবি, ওই জমির ‘প্রকৃত’ মালিকের কাছ থেকে তারা আইনের মাধ্যমেই জমিটা কিনেছে দলের কার্যালয় করা জন্য। গৌরবাবু বলেন, “১৯৬৭ সাল থেকেই ওই জমি আমার। ওই জমি কেউ কাউকে ওই ভাবে বিক্রি করতে পারে না। মাস দুয়েক আগে আমি বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও করেছি।” তৃণমূলের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, “ওই জমি আমরা প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে কিনেছি। প্রশাসনকে বারবার বলেও জমির দখল নিতে পারছিলাম না। তখন আমরা জমির মালিকের কাছ থেকে টাক ফেরত চাই। তখনই ওই মালিক ও সাধারণ গ্রামবাসীররা মিলে জমির দখল নিয়ে আমাদের দলের ঝাণ্ডা পুঁতে দিয়েছে। তার পরেই আমরা দলীয় কার্যালয় তৈরি করেছি।” সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “আসলে তৃণমূল পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে। জমির বিষয়টিকে অজুহাত করে ওরা এ দিন পরিকল্পিত ভাবে আমাদের প্রধান ও তার পরিবারের উপরে হামলা চালালো। যাতে সন্ত্রাস করে এলাকা দখল করে যায়।”
জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “প্রধান ওই জমি জোর করে দখলে রেখেছিল। তৃণমূল কংগ্রেস প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে জমিটা কিনেছিল। আজ তারা দলের কার্যালয় করতে গেলে প্রধান বাধা দেয়। তখনই গণ্ডগোল বাধে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.