রাউন্ড রবিন লিগের শেষে বলতেই হচ্ছে, কয়েকটা ম্যাচ ছাড়া গ্রুপ পর্বটা বেশ ম্যাড়ম্যাড়ে ছিল। মানছি, দুর্বল দেশগুলোরও ম্যাচ খেলা দরকার। কিন্তু যারা টাকা দিয়ে খেলা দেখতে আসছে, বড় ম্যাচের জন্য প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষা করে থাকাটা তাদের পক্ষে বেশ কঠিন। এ জন্যই বোধহয় প্রথম দিকের ম্যাচগুলোয় মাঠে এত কম লোক দেখলাম। আশা করছি এ বার ছবিটা পাল্টে যাবে। সন্ধের কয়েকটা ম্যাচ বৃষ্টির জন্যও ভেস্তে গিয়েছে। মনেপ্রাণে আশা করব, বৃষ্টির জন্য যেন সুপার এইট থেকে বড় কোনও দল ছিটকে না যায়। সুপার এইটের দলগুলোকে দুটো গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এই ফর্ম্যাটে দেশগুলোর মধ্যে খুব বেশি তফাত না থাকলেও ভারত বেশ কঠিন গ্রুপে পড়েছে। গ্রুপ পর্বের পয়েন্ট যে সুপার এইটে যোগ হচ্ছে না, এটা খুব ভাল সিদ্ধান্ত নয়। কারণ বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে প্রতিটা ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। সুপার এইটের মতো তাৎপর্যপূর্ণ পর্বে যে গ্রুপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কোনও প্রভাব পড়বে না, এটা বেশ দুর্ভাগ্যজনক। ওই ম্যাচে ভারতের টিম কম্বিনেশন দারুণ ছিল। আমার মনে হয়েছে পীযূষ চাওলাকে খেলানোটা ধোনির মাস্টারস্ট্রোক ছিল। শুনছি সহবাগের আঙুলে চোট আছে। ও না খেলতে পারলে ধোনির ঝামেলা মিটে গেল। তিন স্পিনার খেলাতে পারবে সেক্ষেত্রে। সহবাগ সুস্থ হয়ে গেলে কিন্তু ওকে বসানো মুশকিল হয়ে যাবে। ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের দেখে মনে হল ওরা জীবনে স্পিন বোলিং দেখেইনি। কলম্বোয় ইংল্যান্ডকে দেখে এটাও মনে হল, পিটারসেন না থাকলে এ বছরের শেষ দিকে ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচগুলো পাঁচ দিন পর্যন্ত যাবে না।
আশা করব বাকি টুর্নামেন্টেও হরভজন-পীযূষ স্পিন জুটিকে খেলানো হবে। এদের সঙ্গে অশ্বিনকে যোগ করুন। অসাধারণ বোলিং ত্রয়ী! বিশেষ করে প্রেমদাসার পিচে। সুপার এইটের অনেক ম্যাচই কিন্তু প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে হবে। |
আগেই বলেছি, সুপার এইটে ভারত বেশ কঠিন গ্রুপে। ধোনিদের সঙ্গে এই গ্রুপে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকা। এই তিন দলকে হারাতে গেলে ভারতকে অসাধারণ ক্রিকেট খেলতে হবে। কাজটা মোটেই অসম্ভব নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ভারতীয় ব্যাটিংকে যথেষ্ট শক্তিশালী দেখিয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের বোলিংকেও বেশ ধারালো দেখাল। তাই বাকি টিমগুলোকে সাবধান করে দিচ্ছি। আর একটা ব্যাপার ভুলে গেলে চলবে না। গত বছর ওয়ান ডে বিশ্বকাপে উপমহাদেশের এই পরিবেশেই কিন্তু নকআউট পর্বে অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ভারত। সেই আত্মবিশ্বাসটাও ধোনিদের সঙ্গে এ বার থাকবে।
সুপার এইটের অন্য গ্রুপটা ভারতের গ্রুপের তুলনায় সহজ। যে দুটো টিমে দুর্দান্ত কিছু স্পিনার আছে, সেই ভারত আর পাকিস্তান যে তাদের গ্রুপে নেই, এটা নিশ্চয়ই ইংল্যান্ডকে স্বস্তিতে রাখবে! যদিও নিজেদের গ্রুপে ওদের অজন্তা মেন্ডিস আর সুনীল নারিনের মোকাবিলা করতে হবে। অবশ্য মেন্ডিস-নারিন মিলিয়ে আট ওভার স্পিন বোলিং সামলানোটা টানা কুড়ি ওভার স্পিনের মোকাবিলা করার চেয়ে অনেক সহজ। কলম্বোর পিচগুলো আস্তে আস্তে শুকনো হয়ে আসছে। এই পিচে শ্রীলঙ্কাও যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠবে। |