|
|
|
|
খড়্গপুর |
পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ঘোষণার দাবি কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আদালতের নির্দেশ মেনে এক সপ্তাহের মধ্যে খড়্গপুরে পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ঘোষণার জন্য উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর কাছে দাবি জানাল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সকালে দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে শহরে এক বৈঠক করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বৈঠক শেষে প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “সংবাদমাধ্যমের দ্বারাই আমরা উপ-পুরপ্রধানের কাছে এই দাবি জানাচ্ছি। উনি ৭ দিনের মধ্যে পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ঘোষণা করুন। আশা করি, উপ-পুরপ্রধান আদালতের নির্দেশ মেনে চলবেন।” এ প্রসঙ্গে তুষারবাবু বলেন, “আদালতের নির্দেশের কপি পেলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।”
খড়্গপুর পুরসভার এক বোর্ড মিটিংকে কেন্দ্র করে রাজ্যের পুর-দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে সোমবারই স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পুর-আইন অনুযায়ী পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালিয়ে যাবেন উপ-পুরপ্রধান। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ১৪ অগস্ট অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। তার প্রেক্ষিতে গত ২৭ অগস্ট পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়। এই মিটিংয়ে ঠিক কী হয়েছে, মিটিংটি বৈধ না অবৈধ, তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি, বৈধ ভাবেই মিটিং হয়েছে। অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। অন্য দিকে তৃণমূলের বক্তব্য, ওই মিটিং অবৈধ। এই পরিস্থিতিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টালবাহানা চলে। শেষমেশ ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুর-দফতর থেকে নির্দেশিকা আসে। জানানো হয়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি লিগাল সেলের বিবেচনাধীন। সেল মতামত না দেওয়া পর্যন্ত ২৭ অগস্টের আগে পুরসভা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। অর্থাৎ জহরলাল পাল পুরপ্রধানের কাজকর্ম চালাবেন। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিষয়টি যখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন, তখন উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরীকে পুরপ্রধানের কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়াই উচিত ছিল। কিন্তু পুর-দফতর তা করেনি।
এর পরেই এ দিন সকালে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হয় খড়্গপুরে। ছিলেন দলের শহর সভাপতি অমল দাস। পারিবারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় কংগ্রেস কাউন্সিলর মধু ঘোষ অবশ্য বৈঠকে থাকতে পারেননি। তবে এসেছিলেন নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা। তিনি অবশ্য বছর খানেক আগে থেকে কংগ্রেস-শিবিরে রয়েছেন। খড়্গপুর পুরসভায় মোট ৩৫ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে ১৫ জন তৃণমূলের, ১৪ জন কংগ্রেসের, ৩ জন সিপিআইয়ের, ১ জন সিপিএমের, ১ জন বিজেপি’র ও ১ জন নির্দল কাউন্সিলর। ২৭ অগস্টের বোর্ড মিটিংয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বামফ্রন্টের ৪ জন কাউন্সিলর যোগ দেননি। সভাকক্ষে উপস্থিত ৩১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৬ জন কংগ্রেসের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। কংগ্রেসের প্রস্তাবের পক্ষেই ছিলেন বিজেপি কাউন্সিলর। আর তৃণমূলের প্রস্তাব সমর্থন করেন দলের ১৫ জন কাউন্সিলর।
পুরপ্রধান নির্বাচনে কী হয়, তা নিয়ে রেলশহরে জল্পনা চলছে। কংগ্রেসের দাবি, এই নির্বাচনে তৃণমূল হারবে। কারণ, অধিকাংশ কাউন্সিলর পুরবোর্ডের কাজকর্মে অসন্তুষ্ট। খড়্গপুরে আবার তৃণমূলের মধ্যেও ‘দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। পুরপ্রধান জহরলাল পালের অনুগামীদের সঙ্গে ‘বিরোধ’ রয়েছে শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর অনুগামীদের। তবে এক তৃণমূল কাউন্সিলর বলেন, “এ সবই রটনা। আমাদের মধ্যে যে মতবিরোধ নেই, তা ২৭ অগস্ট প্রমাণ হয়েছে। ১৫ জন কাউন্সিলরই দলের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন।” দাবি উড়িয়ে এক কংগ্রেস কাউন্সিলরের বক্তব্য, “ওই দিন কৌশলে ভোটাভুটি এড়িয়ে যায় তৃণমূল। ভোট হলেই বোঝা যেত ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা ঠিক কী রকম!” |
|
|
|
|
|