আজ জাতীয় কর্মসমিতি শুরু
শক্তি বাড়িয়ে জোটের প্রসারেই নজর বিজেপির
মাস চারেক আগের কথা। মুম্বইয়ে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিনে লালকৃষ্ণ আডবাণী দলের নেতাদের সতর্ক করে প্রশ্ন তোলেন, কংগ্রেস দুর্বল হলেও বিজেপি কি শক্তিশালী হচ্ছে? উত্তর মেলেনি। আগামিকাল দিল্লির উপকণ্ঠে সুরজকুণ্ডে ফের বসছে জাতীয় কর্মসমিতি। আডবাণীর সেই প্রশ্নের জবাব এখনও নেই বিজেপি নেতাদের কাছে।
দেশের রাজনীতির অলিন্দে গত চার মাসে অনেক স্রোত বয়ে গিয়েছে। মনমোহন সিংহ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টু-জি-র থেকেও বড় মাপের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে। সরকার খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ মঞ্জুর করেছে। ডিজেল, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণের জন্য বিজেপির হাতে এখন প্রচুর অস্ত্র। তবুও কংগ্রেস বিরোধিতার রাশ হাতে রাখতে হিমশিম বিজেপি।
এবং তার কারণ নানাবিধ।
, বিজেপি এখনও নিজেদের ঘর গুছিয়ে উঠতে পারেনি। জাতীয় কর্মসমিতির পাশাপাশি দিল্লিতে তড়িঘড়ি পরিষদের বৈঠকও ডাকা হয়েছে, যাতে সেখানে সভাপতি পদের মেয়াদের বিষয়টি অনুমোদন করিয়ে নিতে পারেন সভাপতি নিতিন গডকড়ী। সভাপতি পদে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, মুরলী মনোহর জোশীর মতো অনেক নেতার এখনও আপত্তি রয়েছে। গডকড়ীও তা ভালই জানেন। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, গুজরাত ভোটের পর কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর গুরুত্ব বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগেই সভাপতি পদের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চান গডকড়ী। মহাগুরুত্বপূর্ণ যে বৈঠকের সময়টুকু দিল্লিতে থাকার কথা সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের। তিনি কাজে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানা গেলেও এই বৈঠকের সময় দিল্লিতে তাঁর উপস্থিতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ।
, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করার ব্যাপারে সবথেকে বড় অন্তরায় হল নেতৃত্বের সঙ্কট। দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে লড়াইয়ের চোরাস্রোত এখনও থামেনি। মোদী যখন লাগাতার নিজেকে জাতীয় স্তরের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন, তখন নীতীশ কুমার বলে দিয়েছেন, তেমন হলে তিনি এনডিএ ছাড়বেন। এর মধ্যেই শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরে সওয়াল করেছেন সুষমার হয়ে। আডবাণী তো বটেই, দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রায় সকলেই প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে থাকতে মরিয়া। এমনকী মুখে অন্য কথা বললেও খোদ গডকড়ীও এই দৌড়ে থাকতে চান।
, কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী দল হলেও কংগ্রেস বিরোধী আন্দোলনের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে হোঁচট খেতে হচ্ছে বিজেপিকে। আগামী সপ্তাহে মমতা তাঁর কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে আসছেন দিল্লির বুকে। যে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস-বিরোধী আন্দোলন করতে চাইছিল বিজেপি, তারাও দূরত্ব বাড়াতে ব্যস্ত। সম্প্রতি ভারত-বন্ধের দিনে মুলায়ম, সীতারাম ইয়েচুরি, এ বি বর্ধন বিজেপির সঙ্গে এক মঞ্চে থাকলেও পরে সকলেই বিজেপির থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছে। মুম্বইয়ের বৈঠকে বিজেপি এনডিএ-র বিস্তারের রণকৌশল নিয়েছিল। কিন্তু গত চার মাসে নতুন কোনও বন্ধু তারা পায়নি। উল্টে অরবিন্দ কেজরিওয়াল-সহ একদা অণ্ণা-সহযোগী কয়েক জন বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। তার মধ্যেই অরুণ শৌরি, ভুবন খান্ডুরি-সহ বহু নেতা নানা বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের জায়গাটি অটুট রেখে এনডিএ জোটের বিস্তারের কথাই ভাবতে হচ্ছে বিজেপিকে। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “সরকারের এত জনবিরোধী সিদ্ধান্তের পরেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে জয়লাভ করল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। এটি সামান্য ঘটনা হলেও যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহক। দলের শক্তি নিয়ে মুম্বই অধিবেশনে লালকৃষ্ণ আডবাণী যে সতর্কবাণী দিয়েছিলেন, আজও তা বাস্তব।”
সেই ‘বাস্তব’কে মাথায় রেখেই আগামিকাল থেকে বৈঠকে বসবেন বিজেপি নেতারা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.