মেয়েরাই কি শুধু সাজতে জানে?
পুরুষ মানেই কি খালি গায়ে ধুতি-সম্বল মহিষাসুর? কার্তিক কি বসে বুড়ো আঙুল চুষবে?
বৃষ্টি একটু ধরে হাওয়ায় শরৎ-শরৎ ভাবটা আসতেই তুমুল পুজো শপিংয়ে নেমে পড়েছে দুর্গাপুর। সে-ও প্রায় সপ্তাহ দুই হতে চলল।
আর, ‘আমরা তোমাদের মতো সাজগোজ নিয়ে থাকি না কি!’ গোছের নাক-উঁচু ভাব ঝেড়ে ফেলে দোকানে-মলে ঢুঁ মারছেন গেরেমভারি কর্তা থেকে ‘আঁতেল’ স্বামীরাও।
এ বছরই প্রথম নয় অবশ্য। গত কয়েক বছর ধরেই পুরুষদের ফ্যাশনে রেশন নেই। যাকে বলে খোলা বাজার! প্রমীলা বাহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁরা হরেক রকম বায়না করছেন। আর তা মেটাতে দোকানদারেরাও হাজির করছে রকমারি ‘ভ্যারাইটি’। তার মধ্যে রংবাহারি পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে ব্র্যান্ডেড জিন্স, কী নেই! আর প্রায় সবের সঙ্গেই রয়েছে কিছু না কিছু অফার! |
পুরনো-নতুন দুর্গাপুর ঢুঁড়ে ফেলে অবশ্য একটা জিনিস পরিষ্কার সাবেক বাজারের থেকে শপিং মলে পুরুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন বেশি। সিটি সেন্টারের শপিং মলে বাবা-মায়ের সঙ্গে এসেছিলেন ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র শুভঙ্কর কর্মকার। বেশ কয়েকটা টি-শার্ট কিনেছেন। জিন্সের সওদাও হয়েছে। ঠোঁটের কোণে মুচকি হেসে বলেন, “জুতো কেনায় বেশি সময় দিয়েছি। শুনলাম, জুতোই নাকি ব্যক্তিত্বের অন্যতম পরিচায়ক!”
মধ্যবয়স্ক অমল দেবনাথ এসেছিলেন স্টেশন লাগোয়া দুর্গাপুর বাজারে। তাঁর পছন্দে সেই চেনা বাঙালিয়ানা, “পুজোর চার দিন পাঞ্জাবি পরতেই আমি পছন্দ করি। এখন তো আবার রঙিন ধুতিও বেশ পাওয়া যায়! দুইয়ের কম্বিনেশনে পুজোর চার দিন ভালই কাটবে।” দোকানিরা জানাচ্ছেন, রঙিন পাঞ্জাবি, জারদৌসি কাজের জমকালো পাঞ্জাবির পাশে সাদা পাঞ্জাবিও বিকোচ্ছে দেদার। তবে অন্ডালের এক বস্ত্র বিপণির মালিক প্রদীপ সাহার সাফ কথা, “যা-ই বলুন, গত দু’তিন বছর ধরে রঙিন পাঞ্জাবি ও ধুতির কিন্তু কদর বেড়েছে।” |
এ বছর অবশ্য বাজারে বেশি চোখ টানছে রঙিন শর্ট টি-শার্ট। শপিং মল হোক বা সাবেক দোকান, টি-শার্টের সম্ভারের পাশেই কার্যত উড়ে বেড়াচ্ছে ‘ইয়ং বেঙ্গল’। তবে এ-ও ঠিক যে, টি-শার্টের পাশেই এখনও স্বমহিমায় বিরাজ করছে শর্ট কুর্তা, নতুন সব ডিজাইনের ফতুয়াও। এ সবও মন কাড়ছে উনিশ-কুড়ির। সহজ লজিক গতানুগতিক শার্ট-প্যান্টের চেয়ে জিন্সের সঙ্গে এগুলোই যায় দারুন। অনেকে আবার ফুলহাতা টি শার্টের সঙ্গে কম্বিনেশন করে শার্টও কিনছে। রঙ নিয়েও চলছে তুমুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা। শপিং মলের দোকানি অনিরুদ্ধ বাগ হাসেন, “উজ্জ্বল লাল, ঝকঝকে সবুজ, কিচ্ছু বাদ নেই। তবে বিভিন্ন চেকের উপরই ছেলেপিলেদের নজর বেশি।”
যা চলছে না!
ফ্যাশন নিয়ে এই লাগাতার টেনশন-ইমোশন ‘চেক’ করবে কে?
কার্তিক আবার সাধের ময়ূরটার জন্যও কিছু কিনে না বসে!
|
দুর্গাপুরের একটি শপিং মলে বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি। |