|
|
|
|
|
যানজট সামলাতে শহরে গ্রিন পুলিশ
গত ৩১ অগস্ট কাঁথি পুরসভার সভাকক্ষে আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি
হয়েছিলেন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী। নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয়
ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় সুব্রত গুহ। বাছাই প্রশ্নোত্তরের প্রথম পর্ব আজ। |
|
|
• কাঁথি পুর-এলাকায় রাস্তাঘাটের আলাদা নাম থাকলেও তা চিহ্নিত করার জন্য কোথাও নামের ফলক লাগানো নেই। ফলে রাস্তা চিনতে অসুবিধা হয় বহিরাগতদের। বাড়ির নম্বরও নেই। রাস্তার নামের ফলক ও বাড়ির নম্বর দেওয়া হলে সকলের সুবিধা হয়।
সুদর্শন পণ্ডা। প্রাক্তন শিক্ষক
বিভিন্ন রাস্তায় নাম ফলক বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাড়ির নম্বর দেওয়া নিয়ে পুরবোর্ডে আলোচনা করা হবে।
• কাঁথি শহরের ডাকঘর মোড়ে রাস্তার উপরেই লোকে রিকশা, সাইকেল, মোটর সাইকেল দাঁড় করিয়ে রাখায় তীব্র যানজট হয়। পথচারীদের অসুবিধা তো হয়ই, দোকানের মালিকরাও সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যা মেটাতে পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
সুজিতকুমার মাইতি। ব্যবসায়ী।
শহরের রাস্তাগুলি সরু। দু’পাশে ঘরবাড়ি থাকায় রাস্তা চওড়া করাও আর সম্ভব নয়। সাইকেল স্ট্যান্ড বা গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না জায়গার অভাবে। তাই পুর এলাকার নাগরিকদেরই সচেতন হতে হবে। পুরসভা যানজট নিয়ন্ত্রণে গ্রিন পুলিশ নিয়োগ করবে শীঘ্রই।
|
|
ছবি: পার্থপ্রতিম দাস |
• কাঁথি শহরের পূর্ব প্রান্তে রেল স্টেশন, পশ্চিম প্রান্তে মহকুমা হালপাতাল। স্টেশন ও হাসপাতাল যাওয়ার ক্ষেত্রে রিকশা ছাড়া কোনও যান না থাকায় শহরবাসীর অসুবিধা হয়। কাঁথি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা দরকার।
দিলীপকুমার দাস। স্বাস্থ্যকর্মী।
শহরে অটো ও ট্রেকার চালানোর ভাবনা-চিন্তা হচ্ছে। এতে শুধু যাতায়াতের সুবিধা নয়, কিছু বেকার যুবকেরও কর্মসংস্থান হবে। অটো বা ট্রেকার চালাতে ইচ্ছুক যুবকরা যাতে সহজে ব্যাঙ্ক ঋণ পান তার জন্যও ভাবনাচিন্তা চলছে।
• কাঁথি শহরের কিছু ওয়ার্ডে পানীয় জলস্তর অনেকটাই নেমে গিয়েছে। বেশ সমস্যা আরও বেশি। জলসঙ্কট মোকাবিলায় পুরসভা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
বরুণ জানা, কারিগরি কলেজ অধিকর্তা।
ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে পুর-এলাকায় জল সরবরাহের জন্য ২৬ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তিনটি জলাধার-সহ ৯টি পাম্পহাউস তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। জলের লাইন দেওয়ার কাজও খুব তাড়াতাড়িই শুরু করা হবে। আর পুর এলাকার বাইরে পঞ্চায়েত এলাকাগুলির জল সরবরাহের ক্ষেত্রে পুরসভার জলগাড়ি দু’বেলা পানীয় জল সরবরাহ করবে।
• কাঁথি শহরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত রাঙামাটি শ্মশানের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ আশু প্রয়োজন। পুরসভা ভাবনা-চিন্তা করছে কী?
তপন মিশ্র, প্রাক্তন সমবায় ব্যাঙ্ক কর্মী।
রাঙামাটি শ্মশানে ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে স্থানীয় চুল্লি, শ্মশানযাত্রীদের বসার আসন, নলকূপ, গেটে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
• কাঁথি মহকুমা যাওয়ার একমাত্র রাস্তা গাঁধিরোড বর্ষার সময় একহাঁটু জলের নিচে ডুবে যায়। শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। যমুনা জলা হিসেবে পরিচিত ওই এলাকার নিকাশি সমস্যা সমাধানে পুরসভার কী কোনও ভাবনা-চিন্তা আছে?
হরিপদ মাইতি, প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
যমুনা জলা সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদ ৫০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ২৫ লক্ষ টাকায় সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের সমস্যা আর থাকবে না।
• কাঁথি ক্লাব মহকুমা গ্রন্থাগারে প্রতিদিন কয়েকশো পাঠক-পাঠিকা আসেন। গ্রন্থাগারে আসার একমাত্র রাস্তাটি নোংরা-আবর্জনায় ভরে থাকায় সমস্যা হয়। নিয়মিত সাফাইয়ে নজর দিলে ভাল হয়।
গৌতম পতি। গ্রন্থাগারিক।
মহকুমা গ্রন্থাগারে যাওয়ার রাস্তাটি যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সে দিকে ভবিষ্যতে নিশ্চয় নজর রাখা হবে।
• কাঁথি সুপার মার্কেটে যথেচ্ছভাবে পলিথিন ব্যবহার করা হয়। ফলে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। এই প্রবণতা রুখতে পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
জগদীশ দিণ্ডা, ব্যবসায়ী।
শহরের এই সমস্যা সমাধানে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে সকলের আগে। পাশাপাশি পুরসভাও দেখছে কী করা যায়।
• শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে দিনের অধিকাংশ সময় লো-ভোল্টেজ থাকায় অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পুরসভা কোনও সমাধানপথ দেখাতে পারে কি?
তিমিরবরণ পণ্ডা, স্কুল সম্পাদক।
পুরসভার উদ্যোগে সর্বত্র বিদ্যুদয়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লো-ভোল্টেজ বিষয়টু বিদ্যুৎ দফতরের সমস্যা, পুরসভার নয়। তবুও বিদু্যৎ দফতরের কাছে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে চাওয়া হবে।
• সুপার মার্কটের মাছ বাজারটি ঘিঞ্জি হয়ে পড়েছে। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে মাছ বাজারের হাল ফেরানোর দরকার। পুর এলাকায় বসবাসকারী মৎস্যজীবীদের বায়োমেট্রিক আই কার্ডের ব্যবস্থা করুক পুরসভা।
লক্ষ্মী জানা, মৎস্য সংগঠনের নেতা।
মাছ বাজারটিকে ঢেলে সাজতে, যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা পুরসভার নেই। তবে দূষণ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা হবে। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্র দেওয়া নিয়ে পুরসভার কাছে প্রস্তাব এলে বিষয়টি ভেবে দেখা হবে।
• কাঁথি শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামটি দীর্ঘদিন ধরে অসমাপ্তভাবে পড়ে রয়েছে। পুরসভা কেন কোনও হস্তক্ষেপ করছে না?
গৌতম রায়, ক্লাব সম্পাদক।
এখানে আমাদের ভূমিকা নেই। রাজ্যের ক্রীড়া দফতরের কাজ ওটি। তবে শহরে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যে মাঠ আছে, তার উন্নয়নের জন্য পুরসভার অনুরোধে জেলা পরিষদ ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। |
|
|
|
|
|